বরিশালে চালু হচ্ছে “ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশন এন্ড ফাইন পেমেন্ট সিস্টেম”
শামীম আহমেদ: বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি) তে চালু হচ্ছে “ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশন এন্ড ফাইন পেমেন্ট সিস্টেম”। এরমধ্য দিয়ে বরিশালে প্রথমবারের মতো ডিজিটাল ডিভাইজে মামলা করবে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা।
কর্মকর্তাদের দাবী, এরমধ্য দিয়ে জনসাধারণকে দ্রুত সময়ের মাধ্যমে সেবা যেমন প্রদান করা যাবে, তেমনি কাগজপত্র-লাইনে দাড়ানোর বিড়াম্বনার মতো বিষয়গুলো এড়ানো সম্ভব হবে। ট্রাফিক পুলিশের সদস্যদের মাঝেও কর্মচাঞ্চল্যতা বৃদ্ধি পাবে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, আগামী ৫ আগষ্ট বেলা ১২ টায় ট্রাফিক বিভাগের ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশন এন্ড ফাইন পেমেন্ট সিস্টেম”কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহাব উদ্দীন খান-বিপিএম বার।
ওই অনুষ্ঠানে ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ খাইরুল আলমের সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঢাকার এ্যান্টিটেররিজম ইউনিটের প্রধান সিস্টেম এ্যানালিষ্ট হামিদুল ইসলাম, মেট্রোপলিটন পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দসহ প্রযুক্তি সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তাবৃন্দ, স্থানীয় বিভিন্ন গণপরিবহন ও পণ্যপরিবহন সমিতির নেতৃবৃন্দ এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধি।
“ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশন এন্ড ফাইন পেমেন্ট সিস্টেম” নামক প্রযুক্তি নির্ভর কার্যক্রম শুরুর জন্য প্রাথমিকভাবে ৩৫ টি পজ মেশিন সরবরাহ করা হয়েছে এবং উদ্বোধনের আগে বিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের ৪০ জন সদস্যকে প্রশিক্ষন দেয়া হবে। যাদের মধ্যে ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার, সহকারি পুলিশ কমিশনারসহ ৪ জন ট্রাফিক পরিদর্শক, ১৮ জন সার্জেন্ট, ৭ জন টিএসআই, ১ জন এটিএসআই রয়েছেন।
ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ খাইরুল আলম বলেন, ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশন এন্ড ফাইন পেমেন্ট সিস্টেম” নামক প্রযুক্তি নির্ভর কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে আমাদের ট্রাফিক বিভাগ পুরোপুরি ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করবে।
বর্তমানে ম্যানুয়াল ও সনাতন পদ্ধতিতে ট্রাফিক পুলিশকে মামলাদায়ের ও জরিমানা আদায় করতে হয়। এতে চালকসহ সাধারণ মানুষের মনে নানান প্রশ্ন দেখা দেয়। যা নিয়ে পুলিশের সাথে বচসা করেও সময় নষ্ট করেন অনেকে। কিন্তু ডিজিটাল এ প্রযুক্তির মাধ্যমে মামলার কপি নিয়ে যানবাহন চালক বা মালিককে ট্রাফিক অফিসে কিংবা ব্যাংকে গিয়ে আগের মতো লাইনে দাড়াতে হবে না। আর আমরাও কেউ কোন ধরণের কারচুপি করতে পারবো না।
তিনি বলেন, মামলা দায়েরের সাথে সাথে মেশিন থেকেই জরিমানার স্লিপ বেড় হয়ে আসবে। যা নিয়ে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে তাৎক্ষনিক জরিমানার অর্থ শোধ করে মামলা নিষ্পত্তি করতে পারবেন। এতে যেমন ট্রফিক পুলিশের সময় সাশ্রয় হবে, তেমনি জনগনের সন্দেহও দুর হবে।
তিনি বলেন, পজ মেশিনের সাহায্যে যেমন তাৎক্ষনিক মামলা দেয়া যাবে, তেমনি ধারা অনুযায়ী জরিমানার সঠিক টাকার পরিমানও তাৎক্ষনিক নিশ্চিত হতে পারবে জনসাধারন। প্রাথমিকভাবে ইউসিবি ব্যাংকের ইউক্যাশের মাধ্যমে মামলার জরিমানার টাকা দেশের যে কোন প্রান্ত থেকে পরিশোধ করতে পারবেন বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকায় চলাচলরত যানবাহন চালক-মালিকরা।
তিনি বলেন, ইউক্যাশ কর্তৃপক্ষ আমাদের নিশ্চিত করেছেন বরিশালে ৪৩ পয়েন্টে তাদের এজেন্টদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে, যেগুলো শুরুর দিন থেকেই ব্যবহার করতে পারবেন যানবাহন চালক ও মালিকরা। তবে সময়ের সাথে সাথে মোবাইল ব্যাংকিং এর ক্ষেত্রে আরো প্রতিষ্ঠান বা সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে তাদের এজেন্ট বাড়ানোর জন্য বলা হবে। যাতে জনসাধারণের কাছে বিষয়টি সহজলোভ্য হয়।
তিনি বলেন, যারা তাৎক্ষনিক মামলা ভাঙ্গাতে পারবে না, তাদের জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে চলমান পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। তবে এক্ষেত্রে যানবাহনের মামলার সময় জব্দ করা কাগজ সর্বোচ্চ দ্রুত সময়ে ও নিরাপদে মালিকের কাছে পৌছে দেয়ার জন্য রাষ্ট্রীয় ডাক ব্যবহার করা হতে পারে। আমরা পুরো বিষয়টিকে পজেটিভ ভাবে দেখছি। আশাকরি এরমাধ্যমে আমাদের সুনাম যেমন বৃদ্ধিপাবে তেমনি সাধারণ মানুষও ভালো মানের সেবা পাবে।
উল্লেখ্য ম্যানুয়াল পদ্বতিতে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগে প্রতিমাসে গড়ে সর্বোন্মি আড়াই হাজার ও সর্বোচ্চ ৪ হাজার ২ শত মামলা দায়ের করেছে।