অস্ত্র হাতে নিতে প্রস্তুত কাশ্মিরি যুবকরা
অনলাইন নিউজ: একতরফা ভাবে রাজ্যকে দুই ভাগ করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার, কেড়ে নিয়েছে স্বায়ত্বশাসনসহ নানা অধিকার। হিন্দ্যুত্ববাদী মোদি সরকারের এই সিদ্ধান্ত ফুসছে জম্বু ও কাশ্মিরের যুবকরা। মাতৃভূমি স্বাধীন করতে প্রস্তুত নিয়েছেন তারা। অস্ত্র হাতে নিতেও তারা প্রস্তুত আসছেন।
গোটা উপত্যকা জুড়েই চলছে কারফিউ। এই বিতর্কিত সিদ্ধান্তের আগে কাশ্মির জুড়ে নাটকীয় অবস্থার সৃষ্টি করে ভারত। তীব্র প্রতিক্রিয়া ও বিক্ষোভ হতে পারে এমন আশঙ্কায় হাজার হাজার সৈন্য মোতায়েন করে কেন্দ্র সরকার। রাজ্যের শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সংযোগও বন্ধ করা হয়েছে।
নানা ঘটনা আড়াল করতে চরম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে সংবাদ মাধ্যমগুলোরও ওপর। এসব নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেও সেখানা গেছেন কিছু সাংবাদিকর। তাদের কাছেই এমন নিজেদের দৃঢ় আশাব্যক্ত করেছেন কাশ্মিরের যুবকরা।
শ্রীনগরের কাশ্মীরি এক যুবক, ‘এ আমার একমাত্র ছেলে, যদিও এখনো একেবারেই শিশু কিন্তু ও যেন বড় হয়ে বন্দুক হাতে নিতে পারে তেমনভাবেই ওকে তৈরি করবো’
শিশুপুত্রকে কোলে নিয়ে তিনি বললেন, ‘তিনি নিজেও ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য বন্দুক হাতে তুলে নিতে প্রস্তুত।’
তিনি যখন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। তার পাশে দাঁড়ায়ে ছিল ভারতীয় পুলিশ। চলছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনা সদস্যদের টহল। কিন্তু তারা যে এসব কথা স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছে – ব্যাপারটা পাত্তাই দিলেন না যুবকটি, এতই ক্ষেপে আছেন তিনি।
আধাসামরিক বাহিনীর জওয়ানরা এসে আমাদের সরিয়ে দেবার চেষ্টা করলো। কিন্তু এই লোকেরা সরতে রাজী নন।
তারা আঙুল তুলে পুলিশের দিকে চিৎকার করতে লাগলেন, ‘তোমরা দিনের বেলা আমাদের আটকে রাখছো, রাতের বেলাও আটকে রাখছো।’
পুলিশ তাদের বলতে লাগলো, কারফিউ জারি আছে, আপনারা এক্ষুণি ঘরের ভেতর ঢুকে যান। আমাদেরও বলা হলো এখান থেকে চলে যেতে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রিজওয়ান মালিক নামের আরেক যুবক। তিনি বিচ্ছিন্নতাবাদে বিশ্বাসী নন, কখনো সৈন্যদের দিকে একটি ঢিলও ছোঁড়েন নি। তিনি ভারতের ওপর বিশ্বাস রেখেছিলেন, জীবনে উন্নতি করাই ছিল তার লক্ষ্য। কিন্ত এখন যা হচ্ছে তা তিনি মানতে পারছেন না।
মালিক বললেন, ‘এই অবরোধ যখন উঠবে, আর বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নামতে পারবে তখন প্রতিটি কাশ্মীরি তাদের সাথে যোগ দেবে। বলা হতো, এখানে সব পরিবারেই এক ভাই যদি বিচ্ছিন্নতাবাদী হয়, তো আরেক ভাই ভারতের মূলধারার পক্ষে। এখন ভারতের সরকার দু ভাইকে এক করে দিয়েছে।’
ভারতের কিছু সংবাদ মাধ্যম বলছে, কাশ্মীরে এখন পর্যন্ত বড় কোন বিক্ষোভ হয় নি -যার অর্থ লোকে সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে। কিন্তু তা মানতে নারাজ পুলওয়ামার বাসিন্দা আইনজীবী জাহিদ হোসেইন দার। তিনি বলেন, ‘কাশ্মীর এখন অবরুদ্ধ। কিন্তু যে মুহূর্তে এটা উঠে যাবে, তকনই শুরু হবে গোলমাল।
মোদি সরকারকে ধাক্কা দিতে ভেতরে ভেতরে ফুঁসছে। এবার ক্ষোভ-ক্রোধ নজিরবিহীন। শ্রীনগরের একটি হাইস্কুলের ছাত্রী মুসকান লতিফ বলছেন, ‘এখনকার অবস্থাটা আসলে ঝড়ের আগেকার শান্ত অবস্থার মতো। সাগর শান্ত, কিন্তু সুনামি আঘাত হানলো বলে।’