আমার চেয়ে আমার বিয়ের বয়স বেশি : আসিফ
সংগীতের যুবরাজ’খ্যাত আসিফ আকবর গানের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতেও বেশ সক্রিয়। সমসাময়িক বিষয়ের পাশাপাশি ব্যক্তিগত অনেক কথাই তিনি তার ফেসবুকে প্রকাশ করেন। এবার জানালেন তার স্ত্রী (সালমা আসিফ মিতু) এবং সংসার জীবনের কথা। দৈনিক আমাদের সময় অনলাইন-এর পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো।
শুরুতেই সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর লিখেছেন- ‘সাতাশ বছরের সংসার জীবন এবং প্রেমসহ তিরিশ বছরের লম্বা ইনিংস খেলে ফেললাম। এতগুলো বছরে আমরা প্রতিদিনই দূরে সরে গেছি, মতদ্বৈততা হয়েছে নিয়মিত। আমাদের দুজনের মধ্যে কার ভুল বেশি, সেটা আমরাই জানি। সব সময় মাঝখানে ভালবাসার সোপান হয়ে দাঁড়িয়েছে আমার দুই পুত্র রণ আর রুদ্র। প্রচণ্ড রকম স্বাধীনচেতা মানুষ আমি, নিজের ইচ্ছের বাইরে কোনো কিছু মানিয়ে নেওয়া আমার জন্য এক ধরনের অসহায় আত্মসমর্পণ। রাগ নিয়ন্ত্রণ আমার আওতার বাইরে সব সময়। কারণ আমি যেটা পছন্দ করি না, সেটারও আগাম ঘোষণা দেওয়া থাকে। তারপরও সিলেবাসের বাইরে কিছু হলে এখন ক্রোধ দমিয়ে রাখতে পারি, শুধু প্রেশারের ওষুধটা নিয়মিত খেতে হয়।’
স্ত্রীর প্রসঙ্গ টেনে আসিফ লিখেছেন- ‘কিছু বুঝে ওঠার আগে সংসারী হয়েছি। সাংসারিক দায়িত্ববোধ ছেলেবেলা থেকে পারিবারিকভাবে শেখা। এজন্য পরিস্থিতি উত্তাল সমুদ্রের মতো উথাল-পাথাল হলেও সামলে নিতে অভ্যস্ত হয়েছি। (বেগম সালমা আসিফ) মিতু কখনো আমার সঙ্গে তর্ক করে না। আমি হয়তো একটু চোটপাট করে বাইরে চলে যাই, মাঝে মাঝে ভাঙচুর করি, এরপর বাহাত্তর ঘণ্টা আই.সি.ইউতে চলে যাই অর্থাৎ কথা বলা বন্ধ। মিতুর একটা জিনিস খুব অসাধারণ, নিজের ভুলটা দ্রুত বুঝতে পারে, সঙ্গে সঙ্গে আবার নতুন ভাবে ভুল করা শুরু করে, তারপর একযোগে শুধু ভুলগুলোই করতে থাকে। এই ব্যাপারটা অসহ্য হলেও দীর্ঘসময় ধরে এই অনুশীলনে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। মিতুর আরও একটা ইউনিক গুণ আছে, সেটা হচ্ছে তার ঘুম। রেগে থাকলেও যখন বাসায় ফিরে ওর ঘুমন্ত মুখটা দেখি তখন খুব মায়া হয়। ঘুমালেই মনে হয় তার উপর ফেরেশতা ভর করেছে। তাছাড়া ঠাণ্ডা লাগলে কাঁথা নেয় না, এলোমেলোভাবে ঘুমায়। এগুলো ঠিক করে দিতে গিয়েই রাগ গলে পানি হতে থাকে। তখন কেন যেন মনে হয় আমার চেয়ে আমার বিয়ের বয়স বেশি।’
কোনো অঘটনের আশঙ্কা নেই জানিয়ে আসিফ আরও লিখেছেন- ‘এ সমস্ত কথা বলার কারণ এটা নয় যে, আমি বিয়ের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছি। মিতুর তত্ত্বাবধানে বিয়েটা হবে, রেকর্ড আমাকে ছাড়ে না, আমি কি করবো? তাছাড়া পরচর্চা এবং গল্প-গুজব প্রিয় জাতির জন্যও তো কিছুটা অবদান রাখা উচিত আমার। মিতুর জন্ম হয়েছে আমার জন্য। ঘটনা যাই ঘটুক, কোনো অঘটনের আশঙ্কা নেই। বেগম সালমা আসিফ নিজের অধিকার ছেড়ে দিয়ে এখন মানবাধিকারকর্মী অর্থাৎ মহামানবী, আল্লাহর রাস্তায় দিনাতিপাত করছেন। আমি সাধারণ মানব রয়ে গেলাম, এভাবেই থাকতে চাই। শুধু বেগমের শারীরিক সুস্থতা আর দীর্ঘায়ু কামনা করি আর বেগম তোমার হাসির দ্যুতি হোক অমলিন, চিরদিন। ভাল থেকো পাশে থেকো সুলতানা, ভালবাসা অবিরাম…’