আলগা হলো ৬৩ বছরের বাঁধন,অনবরত কাঁদছেন রওশন - দৈনিক বরিশাল ২৪ দৈনিক বরিশাল ২৪আলগা হলো ৬৩ বছরের বাঁধন,অনবরত কাঁদছেন রওশন - দৈনিক বরিশাল ২৪

প্রকাশিতঃ জুলাই ১৪, ২০১৯ ৭:১৭ অপরাহ্ণ
A- A A+ Print

আলগা হলো ৬৩ বছরের বাঁধন,অনবরত কাঁদছেন রওশন

অনলাইন নিউজ: প্রায় ৬৩ বছরের সংসার জীবন সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও বিরোধী দলীয় উপনেতা রওশন এরশাদের। কতোশত মান-অভিমান, হাসি-কান্নায় ভরপুর জীবন। এরপরও দু’জন দু’জনার। এক ছাদের নিচে থাকা হয়নি অনেকদিন। কিন্তু কখনোই আলগা হয়নি এ দম্পতির বাঁধন।

সংসার জীবনের স্বর্ণালি স্মৃতিতে মোহাবিষ্ট হয়ে কায়মনোবাক্যে বরাবরই স্বামীর জন্য আকুল প্রার্থনায় ছিলেন। জীবনের শেষ দিনগুলোতেও বারবার ছুটেছেন স্বামীর দূয়ারে। কখনো শয্যাশায়ী স্বামীর পাশে ধর্মগ্রন্থ পড়েছেন, কখনো অনবরত মস্তকে সৃষ্টিকর্তার কাছে জীবন ভিক্ষা চেয়েছেন। হাতে হাত রেখেছেন।

প্রিয়তম স্বামীর জীবনের আলো নিভে যাওয়ার ভয়ানক দুঃসংবাদ পেয়েছেন সাত সকালেই। স্থির থাকতে পারেননি। একমাত্র সন্তান রাহগীর আল মাহে সাদ এরশাদকে সঙ্গে নিয়েই ছুটলেন নিজেদের আলাদা করতে। কিন্তু স্বামীর পাশে যেতেই স্ত্রী দুর্বিনীত কান্নায় ভেঙে পড়লেন। এ কান্না থামার নয়।

বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে ওঠা এ কান্না স্পর্শ করছে কাছের মানুষ থেকে দূরের মানুষকেও। অধিক শোকে যেন পাথর হয়ে গেছেন। কথাও বলছেন কম। বন্ধ রেখেছের নিজের সেলফোন। ৬৩ বছরের অম্ল-মধুর সম্পর্কের ইতি টেনে শূন্য হৃদয় নিয়ে গুলশানের বাড়িতে এখন স্তব্ধ-নির্বাক রওশন এরশাদ।

রোববার (১৪ জুলাই) দুপুর থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত কয়েক দফা বিরোধী দলীয় উপনেতার সহকারী একান্ত সচিব মামুন হাসান ও দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো এমন দৃশ্যপট।

জানা যায়, ১৯৫৬ সালে ময়মনসিংহের সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে রওশনকে বিয়ে করেন সেনা কর্মকর্তা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। চাকরির কারণে বিয়ের পরপরই সংসার করা হয়ে ওঠেনি। ওই সময় রওশন নিজের পড়াশোনার জন্য ময়মনসিংহে থেকেছেন। স্ত্রীর জন্য আকুল হৃদয়ে সেই সময় নিয়মিতই ‘ডেইজি’ সম্বোধন করে তাকে চিঠি লিখতেন এরশাদ।

নানা ঘাটে এরশাদের জীবন বাঁক নিলেও জীবনের গোধূলি বেলায় এসেও নিজের স্বামী অন্তঃপ্রাণ মানসিকতার প্রমাণ দিয়েছেন রওশন। দু’জন আলাদা বসবাস করলেও কথাবার্তা হতো নিয়মিতই। এরশাদের রাজনৈতিক জীবনের প্রতিটি দুঃসময়েই পাশে ছিলেন। ভাঙনের মুখ থেকে রক্ষা করেছেন জাতীয় পার্টিকে।

বিভিন্ন সময় এরশাদ ও রওশনের মধ্যকার দ্বন্দ্বের বিষয়টি ছিল বহুল চর্চিত বিষয়। তবে এ সম্পর্কে দলীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, দু’জনের সম্পর্ক ছিল মধুর। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মান-অভিমান হয়। কিন্তু কেউ কাউকে কোনোদিনই ছোট করে কথা বলেননি। সম্পর্ক অবনতির বিষয়টি ছিল ষড়যন্ত্রকারীদের অপতৎপরতার প্রকাশ। মূলত সব সময়ই স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই দু’জনের মর্যাদা রক্ষা করেছেন।

ময়মনসিংহ জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট স্যার আর ম্যাডামের মধ্যে কখনোই কথাবার্তা বন্ধ হয়নি। দু’জন দু’জনকে গভীরভাবে ভালোবাসতেন। নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে একটি কুচক্রি মহল তাদের মাঝে বিভেদের অপপ্রচার করতেন।’

জাপার নেতা-কর্মীরা বলছেন, ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) যখন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান চিকিৎসাধীন ছিলেন, তখন নিয়মিতই তাকে দেখতে গেছেন রওশন এরশাদ। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছেন। জাতীয় সংসদেও নিজের প্রতিটি বক্তৃতায় স্বামীর প্রসঙ্গ টেনে তার জন্য দোয়া চেয়েছেন। আসলে তাদের দু’জনের সম্পর্কের গভীরতা পরিমাপ করার মতো মন ছিল না ষড়যন্ত্রকারীদের। তাই দু’জনের সম্পর্ক নিয়ে সব সময়ই কুৎসা রটিয়েছে তার।

জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতার সহকারী একান্ত সচিব মামুন হাসান বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা সিএমইচে দেখেছি স্যারের কাছে গিয়ে ম্যাডাম যতোবার হাত বাড়িয়েছেন স্যার হাত ধরেছেন। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা স্বামীর পাশে বসে ম্যাডাম কোরআন তেলাওয়াত করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘জায়নামাজে বসে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছেন। স্যারকে হারিয়ে ম্যাডাম মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। সকাল থেকেই অঝোরে কেঁদেছেন। এখন অনেকটা পাথর হয়ে গেছেন।’

দৈনিক বরিশাল ২৪

আলগা হলো ৬৩ বছরের বাঁধন,অনবরত কাঁদছেন রওশন

রবিবার, জুলাই ১৪, ২০১৯ ৭:১৭ অপরাহ্ণ

অনলাইন নিউজ: প্রায় ৬৩ বছরের সংসার জীবন সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও বিরোধী দলীয় উপনেতা রওশন এরশাদের। কতোশত মান-অভিমান, হাসি-কান্নায় ভরপুর জীবন। এরপরও দু’জন দু’জনার। এক ছাদের নিচে থাকা হয়নি অনেকদিন। কিন্তু কখনোই আলগা হয়নি এ দম্পতির বাঁধন।

সংসার জীবনের স্বর্ণালি স্মৃতিতে মোহাবিষ্ট হয়ে কায়মনোবাক্যে বরাবরই স্বামীর জন্য আকুল প্রার্থনায় ছিলেন। জীবনের শেষ দিনগুলোতেও বারবার ছুটেছেন স্বামীর দূয়ারে। কখনো শয্যাশায়ী স্বামীর পাশে ধর্মগ্রন্থ পড়েছেন, কখনো অনবরত মস্তকে সৃষ্টিকর্তার কাছে জীবন ভিক্ষা চেয়েছেন। হাতে হাত রেখেছেন।

প্রিয়তম স্বামীর জীবনের আলো নিভে যাওয়ার ভয়ানক দুঃসংবাদ পেয়েছেন সাত সকালেই। স্থির থাকতে পারেননি। একমাত্র সন্তান রাহগীর আল মাহে সাদ এরশাদকে সঙ্গে নিয়েই ছুটলেন নিজেদের আলাদা করতে। কিন্তু স্বামীর পাশে যেতেই স্ত্রী দুর্বিনীত কান্নায় ভেঙে পড়লেন। এ কান্না থামার নয়।

বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে ওঠা এ কান্না স্পর্শ করছে কাছের মানুষ থেকে দূরের মানুষকেও। অধিক শোকে যেন পাথর হয়ে গেছেন। কথাও বলছেন কম। বন্ধ রেখেছের নিজের সেলফোন। ৬৩ বছরের অম্ল-মধুর সম্পর্কের ইতি টেনে শূন্য হৃদয় নিয়ে গুলশানের বাড়িতে এখন স্তব্ধ-নির্বাক রওশন এরশাদ।

রোববার (১৪ জুলাই) দুপুর থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত কয়েক দফা বিরোধী দলীয় উপনেতার সহকারী একান্ত সচিব মামুন হাসান ও দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো এমন দৃশ্যপট।

জানা যায়, ১৯৫৬ সালে ময়মনসিংহের সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে রওশনকে বিয়ে করেন সেনা কর্মকর্তা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। চাকরির কারণে বিয়ের পরপরই সংসার করা হয়ে ওঠেনি। ওই সময় রওশন নিজের পড়াশোনার জন্য ময়মনসিংহে থেকেছেন। স্ত্রীর জন্য আকুল হৃদয়ে সেই সময় নিয়মিতই ‘ডেইজি’ সম্বোধন করে তাকে চিঠি লিখতেন এরশাদ।

নানা ঘাটে এরশাদের জীবন বাঁক নিলেও জীবনের গোধূলি বেলায় এসেও নিজের স্বামী অন্তঃপ্রাণ মানসিকতার প্রমাণ দিয়েছেন রওশন। দু’জন আলাদা বসবাস করলেও কথাবার্তা হতো নিয়মিতই। এরশাদের রাজনৈতিক জীবনের প্রতিটি দুঃসময়েই পাশে ছিলেন। ভাঙনের মুখ থেকে রক্ষা করেছেন জাতীয় পার্টিকে।

বিভিন্ন সময় এরশাদ ও রওশনের মধ্যকার দ্বন্দ্বের বিষয়টি ছিল বহুল চর্চিত বিষয়। তবে এ সম্পর্কে দলীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, দু’জনের সম্পর্ক ছিল মধুর। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মান-অভিমান হয়। কিন্তু কেউ কাউকে কোনোদিনই ছোট করে কথা বলেননি। সম্পর্ক অবনতির বিষয়টি ছিল ষড়যন্ত্রকারীদের অপতৎপরতার প্রকাশ। মূলত সব সময়ই স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই দু’জনের মর্যাদা রক্ষা করেছেন।

ময়মনসিংহ জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট স্যার আর ম্যাডামের মধ্যে কখনোই কথাবার্তা বন্ধ হয়নি। দু’জন দু’জনকে গভীরভাবে ভালোবাসতেন। নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে একটি কুচক্রি মহল তাদের মাঝে বিভেদের অপপ্রচার করতেন।’

জাপার নেতা-কর্মীরা বলছেন, ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) যখন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান চিকিৎসাধীন ছিলেন, তখন নিয়মিতই তাকে দেখতে গেছেন রওশন এরশাদ। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছেন। জাতীয় সংসদেও নিজের প্রতিটি বক্তৃতায় স্বামীর প্রসঙ্গ টেনে তার জন্য দোয়া চেয়েছেন। আসলে তাদের দু’জনের সম্পর্কের গভীরতা পরিমাপ করার মতো মন ছিল না ষড়যন্ত্রকারীদের। তাই দু’জনের সম্পর্ক নিয়ে সব সময়ই কুৎসা রটিয়েছে তার।

জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতার সহকারী একান্ত সচিব মামুন হাসান বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা সিএমইচে দেখেছি স্যারের কাছে গিয়ে ম্যাডাম যতোবার হাত বাড়িয়েছেন স্যার হাত ধরেছেন। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা স্বামীর পাশে বসে ম্যাডাম কোরআন তেলাওয়াত করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘জায়নামাজে বসে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছেন। স্যারকে হারিয়ে ম্যাডাম মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। সকাল থেকেই অঝোরে কেঁদেছেন। এখন অনেকটা পাথর হয়ে গেছেন।’

প্রকাশক: মোসাম্মাৎ মনোয়ারা বেগম। সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: ইঞ্জিনিয়ার জিহাদ রানা। সম্পাদক : শামিম আহমেদ যুগ্ন-সম্পাদক : মো:মনিরুজ্জামান। প্রধান উপদেষ্টা: মোসাম্মৎ তাহমিনা খান বার্তা সম্পাদক : মো: শহিদুল ইসলাম ।
প্রধান কার্যালয় : রশিদ প্লাজা,৪র্থ তলা,সদর রোড,বরিশাল।
সম্পাদক: 01711970223 বার্তা বিভাগ: 01764- 631157
ইমেল: sohelahamed2447@gmail.com
  “সাংবাদিকদের সক্রিয় রাজনীতিতে না আসাই ভাল”–মজিবর রহমান সরোয়ার   পদোন্নতি পেয়ে সচিব হলেন বরিশালের কৃতিসন্তান এ এইচ এম সফিকুজ্জামান   বানভাসীদের সহযোগিতায় এক দিনের বেতন দেয়ার ঘোষণা দিল ইয়কোহামা লেভেলস এন্ড প্রিন্টিং (বিডি) লিমিটেড   বরিশালে শ্রমীক লীগ নেতার ইসলামী আন্দোলনে যোগদান   বন্যার্তদের সহায়তায় এগিয়ে এরো চট্টগ্রামের ধানসিঁড়ি আদর্শ কেজি স্কুল   বন্যার্তদের সহায়তায় এগিয়ে এলো ধানসিঁড়ি আদর্শ কেজি স্কুল   বন্যাদূর্গতদের সহায়তায় এগিয়ে এলেন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত   খাগড়াছড়িতে বন্যা কবলিত অসহায় মানুষের পাশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী   বোট নিয়ে চট্টগ্রামের নিউমুরিং থেকে উদ্ধার টিম নোয়াখালীতে পৌছাল   বরিশালে দুর্গোৎসবের টাকা আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বন্যার্তদের জন্য দান   বিভিন্ন জেলায় বন্যার্তদের উদ্ধার কার্যক্রমে সেনা মোতায়েন   চাঁদপাশা হাইস্কুল ও কলেজে আধুনিক মাল্টিমিডিয়া ক্লাস উদ্বোধন   বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দলনে নিহত শান্ত ও রাকিবের কবর জিয়ারত করলেন বরিশাল জাপার নেতৃবৃন্দ   রাস্ট্র সংস্কারে প্রশাসনকে সহায়তা করতে হবেঃ ইকবাল হোসেন তাপস   রাস্তায় লাঠি হাতে ছাত্রলীগকে মানুষ পছন্দ করেনি, অন্য কাউকেও দেখতে চায় নাঃ তাপস   বাবা মুুক্তিযোদ্ধা না হলেও মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি নিয়েছেন ডিবি হারুন   সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ পদক্ষেপ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা   জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন নিয়ে সুখবর   অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অভিনন্দন জানালো আওয়ামী লীগ   দেশের ক্লান্তিকালে মানুষের পাশে তাপসের ‘‘বরিশাল ফরএভার লিভিং সোসাইটি’’