মানুষ দাঁড়িয়ে দেখছে, চুরির অপবাদে যুবককে রাতভর নির্যাতন
নিজস্ব প্রতিনিধি: বরিশালের গৌরনদীতে, চুরির অভিযোগ এনে জিসান হাওলাদান (১৮) নামে এক যুবককে চোখ, হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করার ঘটনা ঘটেছে।
শুধু তাই নয়, নির্যাতনের পর তাকে পুলিশে দেয়া হলে পুলিশ তাকে অন্য আরেক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার উত্তর ধানডোবা গ্রামের মোক্তার বাজারে।নির্যাতনের শিকার জিসান একই গ্রামের আলমগীর হাওলাদারের ছেলে।
জিসানের পারিবারিক সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাত আনুমানিক তিন ঘটিকার সময় মোক্তার সিকদার তার লোকজন নিয়ে ঘুম থেকে জিসানকে তুলে নেয় মোক্তারের চানাচুর ফ্যাক্টরিতে, সেখানে চুরির অপবাদ দিয়ে মোক্তার সিকদারের লোকজন চোখ, হাত-পা বেঁধে এবং প্রকাশ্যে তাকে নির্মমভাবে পেটায়।
রাতভর চলে এ অমানবিক নির্যাতন। পরদিন সকালে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় নির্যাতনকারীরা।
ওইদিন পুলিশ তাকে সালতা গ্রামের পুরানোর এক ডাকাতি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে।
পরবর্তীতে জিসানের নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লেও গৌরনদী মডেল থানার পুলিশ জিসান ও তার পরিবারকে কোন সহয়তা না করে তারিয়ে দিয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, চোখ ও হাত-পা বাঁধা রয়েছে একজনের আর জিসানকে কয়েকজন বেধরক পেটাচ্ছে। এ সময় নিজেকে নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে কাকুতি-মিনতি জানাচ্ছে।
আশপাশে থাকা লোকজন দাঁড়িয়ে দেখছিল। কেউ তাকে বাঁচাতে এগিয়ে না আসলেও জিসানের মা তাকে নির্যাতনের হাতথেকে রক্ষা করতে এসে নিজেও নির্যাতনের স্বিকার হয়েছে।
জিসানের নানা,ফজলুল হক হাওলাদার বলেন, আমার নাতি যদি এই এলাকায় চুরি করে থাকে তবে তাকে কেন অন্য এলাকার ডাকাতি মামলায় আদলতে পাঠিয়েছে।
তিনি বলেন, আমার নাতিকে পরিকল্পিতভাবে মোক্তার সিকদারের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী চোখ, হাত-পা বেঁধে এ অমানবিক নির্যাতন চালায়। আমি এ রহস্যের সত্যতা উদঘাটনসহ তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যে দোকান চুরির ঘটনায় যুবকদের ধরে অমানুষিক নির্যাতন করেছে,আসলে সে দোকান মালিক থানায় কোন অভিযোগ করেনি।
নির্যাতনকারিরাও ওই যুবকদের বিষয়ে থানায় কোন অভিযোগ দায়ের করেনি।
অন্যদিকে, বৃহষপতিবার বিকালে সরেজমিনে ওই দোকানটি পরিদর্শনকালে দোকানটি খোলা পাওয়া গেছে, এবং দোকানের মালিকের নির্যাতনের স্বীকার যুবককদের প্রতি অভিযোগ নেই।নির্যাতিত যুবক জিসানের মা, মুকুলি বেগম অভিযোগ করেন, আমার নিরপরাধ ছেলে সহ আমাকে, আমার বাবাকে নির্যাতন করা হয়েছে। তার ওপর মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠানো হয়েছে। আমি এই ঘটনার বিচার কার কাছে চাইব?এবিষয়ে অনেক বার থানায় গেলেও আমাকে তারিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার আইয়ুর দায়ীত্ব থাকা গৌরনদী মডেল থানার এসআই উপ পরিদর্শক সগীর হোসেন কোন স্বদউত্তর দিতে পারে নাই।