খালেদা জিয়ার মুক্তি চাইলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: মির্জা ফখরুল

অনলাইন নিউজ: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আমরা কি বেগম জিয়ার মুক্তি চাই। যদি চাই তাহলে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ঐক্য, ঐক্য এবং ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। তাই দলমত নির্বিশেষে দেশের সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে আজকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
বৃহস্পতিবার খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তির দাবিতে খুলনা শহীদ হাদিস পার্কে’ এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি সমাবেশ নিয়ে কিছু মানুষ প্রচার করছে যে, ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ঠিক নেই। কিন্তু ২০ দল ও ঐক্যফ্রন্ট ঠিক আছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী চোখের চিকিৎসা জন্য লন্ডনে গিয়েছেন। আমরাও চাই, উনি সুদৃষ্টি নিয়ে ফিরে আসুক। উনি দেখুক, এদেশের মানুষ কি চায়। মানুষের মনে ভাষা পড়ুক। তাহলেই উনি বুঝতে পারবেন, এদেশের মানুষ বেগম জিয়ার মুক্তি চায়।
ফখরুল বলেন, বিএসএমএমইউতে (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) বেগম জিয়াকে সরকার সঠিক চিকিৎসা দিতে পারছে না। কারণ সরকারের স্বদিচ্ছার অভাব রয়েছে।
গতকাল আমি খোঁজ নিয়েছি যে, দেশনেত্রী আবার অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তার ব্লাড সুগার বারবার উঠানামা করছে। তার জিভের মধ্যে আলসার হয়েছে।
এখন তিনি শ্বাসকষ্টের জন্য নিশ্বাস নিতে পারছেন না। আজকে আমরা এই সভা থেকে দাবি জানাচ্ছি, সুচিকিৎসার জন্য বেগম জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হোক।
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরা (বিএনপি) এতো দিন পরে কেনো বুঝলাম, আইনিভাবে নয়, সংগ্রামের মাধ্যমেই খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে।
আমরা কেনো এতো দিন কিছু করলাম না? তাহলে কি জেলের মধ্যে বেগম জিয়ার মৃত্যু হলে তার লাশ নিয়ে আমরা মিছিল করবো? আর আমি শেখ হাসিনার পদত্যাগ চাই। কারণ উনি ভোট চোর।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দলের আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, বর্তমান সরকার ডেঙ্গু মশা মারতে পারে না। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীদের মারতে পারে। আর সরকারের কিছু লোক আছে, আমাদের কামড় দেয় এবং চুষে চুষে রক্ত খায়।
এই অবস্থা চলতে পারে না। এজন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে নাই। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে। এজন্য গণতন্ত্রের মা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। আর বেগম জিয়াকে মুক্ত করার জন্য আমাদের যা যা করার দরকার আমরা তাই তাই করবো।
এদিন, সমাবেশ শুরু হওয়ার পর পরই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি নামতে শুরু করে। তবে বৃষ্টি উপেক্ষা করে নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
এসময় তারা ‘খালেদা জিয়ার কিছু হলে, জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’, ‘মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই, খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই’, ‘বাধা দিয়ে আন্দোলন বন্ধ করে যাবে না, পুলিশ দিয়ে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না’সহ বিভিন্ন স্লোগানে সমাবেশস্থল মুখরিত করে তোলেন।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশ নেয়। দুপুর থেকেই ছোট ছোট মিছিল নিয়ে খুলনা বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগি সংগঠন এবং যশোর, বাগেরহাট, নড়াইল, মাগুড়া, সাতক্ষীরা জেলাসহ খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের কর্মসূচি অংশ নিতে দেখা গেছে।
এদিকে, বিএনপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সমাবেশের প্রাঙ্গণসহ এর আশ-পাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তার বলয় গড়ে তোলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপি নেতা শামসুজ্জামান দুদু, নিতাই রায় চৌধুরী, এজেডএম জাহিদ হোসেন, কবির মুরাদ, মাহবুব উদ্দিন খোকন, হাবিবুর ইসলাম হাবিব, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, আনিছুর রহমান তালুকদার খোকন প্রমুখ বক্তব্যে রাখেন।