ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা ফৌজদারী অপরাধ: পুলিশ সদর দপ্তর
নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা: দেশের বিভিন্নস্থানে ছেলে ধরা সন্দেহে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা ফৌজদারী অপরাধ বলে জানিয়ে পুলিশ সদর দপ্তর । পুলিশ সদর দপ্তরের এক প্রেস বার্তায় এসব জানানো হয়েছে।
শনিবার (২০ জুলাই) বিকালে এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. সোহেল রানা স্বাক্ষরিত এক বার্তায় এ নির্দেশনা দেয়া হয়। সেখানে বলা হয়, গুজব ছড়িয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করা রাষ্ট্রবিরোধী কাজের শামিল। পুলিশ সদর দফতর জানায়, পদ্মা সেতু নির্মাণে মাথা লাগবে-একটি মহল এমন গুজব ছড়ানোর পর দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়েকজন গণপিটুনিতে মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারিয়েছেন।
শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উত্তর বাড্ডার সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের সামনে শিশু চোর সন্দেহে তসলিমা বেগম রেনু (৪২) নামে এক নারীকে পিটিয়ে আহত করে স্থানীয়রা। তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই নারীকে মৃত ঘোষণা করেন বলে বাড্ডা থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ইয়াছিন গাজী জানান।
ওই স্বজন জানিয়েছেন, রেনুর দুই ছেলে-মেয়ে। মহাখালী এলাকায় থাকে। দুই বছর আগে স্বামী তসলিম হোসেনের সাথে তালাক হয়ে গেছে। দুই সন্তানের মধ্যে মেয়েটা তার কাছে থাকে।তার সন্তানদের স্কুলে ভর্তির ব্যাপারে খোঁজ নিতে স্কুলে গিয়েছিলেন বলে তার বোনের ছেলে নাসির উদ্দিন টিটো জানিয়েছন।
তসলিমার গ্রামের বাড়ি লক্মীপুরের রায়পুরে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা ইয়াছিন।এই ঘটনায় তসলিমার ভাগ্নে টিটো কারও নাম উল্লেখ না করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
এদিকে, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ছেলে ধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে এক যুবক নিহত হয়েছে। শনিবার (২০ জুলাই) সকালে সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। । তার নাম সিরাজ মিয়া। তিনি সিদ্ধিরগঞ্জের ৫ নং ওয়ার্ড এলাকার আবদুর রশিদ মণ্ডলের ছেলে।
এর আগে বৃহস্পতিবার নেত্রকোণায় শিশু সজিবকে হত্যা করে তার কাটা মাথা ব্যাগে নিয়ে হত্যাকারী রবিন নেত্রকোণার নিউটাউন অনন্ত পুকুরপাড়ে তারেক মিয়ার বাসার গেটের সামনে গেলে স্থানীয় লোকজন তার গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় তাকে ধরে ফেলে এবং গণপিটুনি দেয়। গণপিটুনিতে রবিন ঘটনাস্থলে নিহত হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়ে এ পর্যন্ত যতগুলো নিহতের ঘটনা ঘটেছে পুলিশ প্রত্যেকটি ঘটনা আমলে নিয়ে তদন্তে নেমেছে। এসব ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গুজবে বিভ্রান্ত হয়ে ছেলেধরা সন্দেহে কাউকে গণপিটুনি দিয়ে আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানানো হচ্ছে। কাউকে ছেলেধরা সন্দেহ হলে গণপিটুনি না দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিন।গুজব ছড়ানো এবং গুজবে কান দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।