জমানো টাকায় কেনা ঘোড়ায় চড়ে করেন ভিক্ষা!
অনলাইন নিউজ:একসময় গ্রামের মানুষ নিজের প্রভাব ও প্রতিপত্তি বোঝানোর জন্য বলতেন, ‘ভিক্ষা করলেও ঘোড়ায় চড়ে ভিক্ষা করব।’ সেই কথাটি বাস্তবে রূপ নিয়েছে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার সাচড়া ইউনিয়নের বৃদ্ধ জালু মিয়ার (৫৫) জীবনে। তবে সেটি প্রভাবের জন্য নয়, নিজের দরিদ্রতা ও বয়সের ভারে হাঁটতে না পেরে ঘোড়ায় চড়ে তিনি ভিক্ষা করেন।
চার বছর ধরেই জালু মিয়া ঘোড়ার পিঠে চেপে মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভিক্ষা করেন। জালু মিয়া উপজেলার সাচড়া ইউনিয়নের চর গঙ্গাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মোতালেবের ছেলে। পৈতৃক কোনো সম্পদ না থাকায় অন্যের জমিতে পলিথিন আর নারিকেলপাতা দিয়ে ঝুপড়ি তৈরি করে সেখানে বসবাস করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভিক্ষুক জালু মিয়া প্রতিদিন ঘোড়ায় চড়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ভিক্ষা করেন। বয়সের ভারে হাঁটতে পারেন না বলে তাকে ঘোড়ায় চড়ে ভিক্ষা করতে হয়। চার বছর আগে ভিক্ষা করে জমানো ১৫ হাজার টাকায় ঘোড়াটি কেনেন। আর সেই ঘোড়ায় চড়েই এখন মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ভিক্ষা করেন তিনি। এতে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা আয় হয়। ঘোড়ার খাবার কেনার পর বাকি টাকা দিয়ে কোনো রকমে সংসার চলে।
জালু মিয়া জানান, প্রথম স্ত্রীর সন্তান হওয়ার পর সন্তানসহ স্ত্রীর মৃত্যু হয়। পরে দ্বিতীয় বিয়ে করলেও কোনো সন্তান হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে বৃদ্ধ বয়সে ভিক্ষা করে চলতে হচ্ছে তাদের। চার বছর আগে ভিক্ষা করে ১৫ হাজার টাকা জমিয়ে একটি ঘোড়া কিনেছেন। ওই ঘোড়াটাই তাঁর একমাত্র সম্বল। ঘোড়াটা আছে বলেই ঘরে তাঁর চুলা জ্বলে।
তিনি আরো জানান, বিয়ের আগে মানুষের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এখন বৃদ্ধ হয়ে যাওয়ায় কেউ কাজেও নেয় না। শেষ বয়সে স্ত্রীকে নিয়ে থাকার জন্য একটি সরকারি ঘর দেওয়ার দাবি করেন বৃদ্ধ জালু মিয়া।
সূত্র: কালের কন্ঠ