দায়িত্ব পালনে অনন্য উচ্চতায় ঝালকাঠির পুলিশ কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান
আহমেদ জালাল : শত শত লোকের কান্না থামিয়ে মুখে হাসি ফুটিয়েছেন সৎ দক্ষ জনগণের সেবকের ভূমিকায় অবতীর্ন হয়ে জনমনে বেশ প্রশংসিত এক পুলিশ কর্মকর্তা। পেশাগত দায়িত্ব পালনে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে যিনি নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়।
অবহেলিত আর নিগৃহিত জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়িয়ে সকলের ধারণা পাল্টে দিয়েছেন তিনি। এই পুলিশ কর্মকর্তা হলেন ঝালকাঠি জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এমএম মাহমুদ হাসান (পিপিএম)।
তিনি অনেক আগেই মানবসেবায় নিজেকে ব্রতী করেছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার
এম এম মাহামুদ হাসান চাকরিতে যোগদানের পর থেকেই নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন।
ঝালকাঠিতে যোগদানের পর বিট পুলিশিং, কমিউনিটি পুলিশিং ও স্টুডেন্ট কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমে দক্ষতা ও সাফল্যে দেখিয়েছেন। এজন্য বরিশাল রেঞ্জের একাধিকবার শ্রেষ্ঠ সার্কেল অফিসার নির্বাচিত হয়েছেন।
বিশেষ করে নলছিটি উপজেলার মগড় ইউনিয়নে মুসলিম ও হিন্দু পরিবারের মাঝে দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে জমি নিয়ে বিরোধ শান্তিপুর্ন সুরাহা করে দেন তিনি।
একই উপজেলার সুবিদপুর গ্রামের জমি নিয়ে স্বাধীনতার পর থেকেই চলা বিরোধ সমাধান করে দেন। ঝালকাঠি পৌর এলাকার বিকনার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের নারী ভন্ড ওঝার খপ্পরে পড়ে পিতা মাতা আত্মীয় স্বজন সহ
পরিবারের সহায় সম্বল আত্মসাত করে কৌশলে ইজ্জত লুটে নেয়।
এতে রাতের আধারে ঝালকাঠি ছেড়ে পালিয়ে যায় ওই নারী। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এমএম মাহমুদ হাসানের কাছে গিয়ে প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি জানায়। তখন তিনি ভন্ড ওঝার হাতিয়ে নেওয়া অর্থ থেকে ২০ লক্ষ টাকা এনে দিয়ে ওই নারীকে বেঁচে থাকার অবলম্বন দিয়েছেন।
ঝালকাঠির সদর উপজেলার বাসন্ডা ইউনিয়নের সৎ ছেলের হাতে পঙ্গু হওয়া মিনারা বেগমকে সু-বিচার পাইয়ে দেন। এমনকি চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তাসহ মাথা গোঁজার ঘরটিরও ব্যবস্থা করে দেন। এরকম শত শত লোকের কান্না থামিয়ে মুখে হাসি ফুটিয়েছেন সৎ দক্ষ জনতার পুলিশ কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমএম মাহমুদ হাসান পিপিএম।
ঝালকাঠির জেলার কোটিপতি থেকে ভিখারি পর্যন্ত জনতার আস্থার প্রতিক হয়ে উঠেছেন তিনি। সকাল শ্রেনি পেশার মানুষের জন্য সমান চোখে সব সময় আইনি ও পুলিশি সেবায় তিনি নিষ্ঠাবান ও সততার পরিচয়দিচ্ছেন।
কৃতি এই পুলিশ কর্মকর্তা ঝালকাঠিতে মাদকবিরোধী অভিযানেও ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছেন। চৌকশ এই পুলিশ কর্মকর্তার দক্ষতায় বেড়েছে পুলিশের কর্মক্ষমতা। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে পাশে দাঁড়িয়েছেন সাধারণ মানুষের।
নানা সামাজিক কর্মকান্ডে তাকে দেখা যায় অগ্রভাগে। ঝালকাঠি জেলা উল্লেখযোগ্য চাঞ্চল্যকার ঘটনার বিষয়ে এ পুলিশ কর্তার অবদান রয়েছে অসমতুল্য। আদলাতে বছরের পর বছর ঘুরে কোন আইনী সুরাহা না পাওয়া শত শত লোকের সমস্যায় নিজেকে উজার করে তাদের বিরোধ নিস্পত্তি করে দৃষ্টান্ত রচনা করেছেন।
তাঁর স্বচ্ছতার সঙ্গে পেশাগত যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল (পিপিএম) সেবা পদকে ভূষিত হয়েছেন। পরপর দুইবারেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে এ পদক প্রদান করেন।
পুলিশের কাজে অধিকতর শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা এসেছে। নিজের পেশাগত জায়গায় তিনি যেমন সফল মানুষ, তেমনি পেশার বাইরে ক্রীড়া সংগঠক ও সমাজের চেঞ্জ মেকার হিসেবে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। স্বপ্নের সমৃদ্ধময় বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমএম মাহমুদ হাসানের মতো স্বপ্নচারী মানুষগুলো সত্যিকার অর্থেই মাইলফলক হয়ে উঠবেন।
প্রসঙ্গত : অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমএম মাহমুদ হাসান দুমকি উপজেলার অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক আবদুল কাদের মোল্লার কনিষ্ঠ পুত্র। চাকুরীজীবনে তিনি বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ এ অত্যন্ত সুনামের সাথে চাকুরী করেছেন।
তিনি ২০১০ সালে ২৮তম বিসিএসের মাধ্যমে বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন। ২৮ তম বিসিএস পরীক্ষায় পুলিশ ক্যাডারে মেধা তালিকায় তিনি ২য় স্থান অধিকার করেন। বর্তমানে তিনি ঝালকাঠি জেলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর সার্কেল হিসেবে কর্মরত।
তিনি বলেন, মানুষের কল্যানে আমৃত্যু কাজ করাই আমার জীবনের একমাত্র নেশা ও পেশা। এই পেশাটি
একটি ব্যতিক্রমী এবং চ্যালেঞ্জিং পেশা। আমি এই মহৎ পেশাটিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিয়ে উপভোগ করছি এবং সার্বক্ষনিক দেশসেবায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করেছি।
তিনি আরো বলেন- জনগণকে আইনি ও পুলিশি সেবা দেওয়া আমার কর্তব্য। মানুষের কল্যানে আমি নিজেকে নিঃস্বার্থভাবে বিলিয়ে দিতে চাই, মানুষ যাতে পুলিশের প্রতি শত ভাগ আস্থা নিতে পারে।
লেখক : নির্বাহী ও বার্তা প্রধান, দৈনিক বিপ্লবী বাংলাদেশ।