দেশের মানুষকে ডিজিটাল সেবাদানে বরিশালের প্রকৌশলী জিহাদের সাফল্য
সোহেল আহমেদ: স্বপ্ন ছিলো দেশসেবায় নিয়োজিত সেনাবাহিনীর অফিসার হবেন। নয়ত কোনো সরকারি অফিসের বড় কর্তা। বাবা-মা সহ নিজের শৈসবে দেখা চমৎকার স্বপ্নটি বদল করে তিনি এখন সফল ইন্জিনিয়ার। বরিশাল সহ তার সফলতার দৃশ্যমান চিত্র ছড়িয়ে গেছে দেশের নানা প্রান্তে। দেশ ছাপিয়ে সেই সফলতার চোখ বিদেশের দিকে। এ সবই অর্জিত হয়েছে নিজের মেধা বুদ্ধি মনবলের রনোকৌশলের কারোণে।
বলছিলাম আইটি সেবার তরুণ প্রতিভার অধিকারী বরিশালের ইন্জিনিয়ার জিহাদ রানা’র কথা। বরিশাল শহড়ের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের একমাত্র পুত্রসন্তান জিহাদ রানাকে নিয়ে শৈসব থেকেই বাবা-মা সহ গোটা পরিবার স্বপ্ন আঁকেন। জিহাদ বড় হয়ে দেশ সেবা আত্বনিয়োগ করবে।
সেনাবাহিনীর বড় অফিসার বানানোর স্বপ্ন বদলে যায় জিহাদ রানার এসএসসি পাশের পর। বন্ধুদের পাল্লায় পরে কি এক ইন্টারনেট নেশায় জিহাদ! আইটি সেক্টরের টুকিটাকি শেখা পরবর্তি বদলে যাওয়া স্বপ্নের বাস্তবতায় জিহাদ রানার দৌড়।
মেট্রিক পাশ করেই ভর্তি হন বরিশাল সরকারি পলিটেকনিক কলেজে। কম্পিলিট করেন ইলেকট্রো- মেডিকেল ইন্জিনিয়ারিং কোর্স। ইলেকট্রিক্যাল ইলেকট্রনিকস এবং টেলিকমিউনিকেশন এর উপর বিএসসি পাশ করেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে। সদালাপি হাস্যজ্জল জিহাদ রানার আইটি বিষয়ে পড়াশুনার ফাকে পার্টটাইম চাকরি করেছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। নিজের কর্মদক্ষতা প্রমান করতে গিয়ে সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে পাশ কাটিয়ে বরিশালের এই স্বপ্নতারকা সফরতার অনন্য উচ্চতায় পৌছে গেছেন।
বাবা- মাসহ চারজনের পরিবারের বড় জিহাদ রানার সফলতার পেছনের গল্পটা ভিন্ন! ছোট বেলায় স্বপ্নের রাজ্যে জিহাদ রানা কখনও সেনাবাহিনী র অফিসার আবার কখনও সরকারি প্রতিষ্ঠানের বড় কোনো কর্তা! নিজের এবং পরিবারের আশা আখাঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে ইন্টারনেট সেবায় মনোযোগী হন জিহাদ। দেশসেবার ইচ্ছেটি টিকে থাকলেও বদলে যায় কর্মক্ষেত্রের ধরন। আইটি সেক্টর দিয়েই এগুবেন দেশের কল্যাণে। এমন বাস্তবতায় বদলে যায় হাজারও স্বপ্নের ইতিবৃত্ব!
আত্বকর্মসংস্থান তৈরি করে নিজেকে প্রতিষ্টিত করার মিশনে জিহাদ রানা। তাই ছাত্রজীবন থেকেই একটু রিজার্ভ থেকে সফলতার পরিকল্পনা আঁটেন। পড়াশুনার ফাঁকে কাজ করেন ইন্টারনেটসেবা নিয়ে। আইটি বিভাগের বিভিন্ন কাজে নিজের দক্ষতার পরিচয় দেন ছোট বড় নানা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট নির্মাণ, মেরামত,সফটওয়্যার তৈরি সহ ডিজাইনার হিসেবে।
আইটি বিশেষজ্ঞ হিসেবে এভাবে বরিশালে জিহাদ রানা পরিচিতি লাভ করেন। শত শত বানিজ্যিক প্রতিষ্টানে কাজ করে একদিকে বাড়িয়েছেন নিজের পরিচিতি অপর দিকে খ্যতি লাভ করেছেন বরিশালের আইটি সেক্টরে। ফলে বাবা-মায়ের স্বপ্নের সেনাবাহিনীর অফিসার বদলে গিয়ে আজকের বরিশালের স্বনামধন্য তরুণ প্রকৌশলী জিহাদ রানা।
আইটি সেক্টর নিয়ে এক যুগেরও বেশি সময় কাজ করা জিহাদ রানা গড়ে তুলেছেন ইন্জিনিয়ার বিডি ডট নেট নামক একটি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই তার আইটি সেবা ছড়িয়ে পড়েছে বরিশাল সহ দেশের নানা প্রান্তে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে একের পর এক সফলতায় ক্রমেই সামনে এগুনোর প্রচেষ্টা।
মেধা বুদ্ধির বিকশিত মিশ্রনে জিহাদ রানা বাংলাদেশ পরিবার ও স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের www.nememw.govt.bd এর মেরামত ও সংরক্ষণের সফটওয়্যার, বাংলাদেশ ভূমি অধিদপ্তরের বরিশাল-এর www.aclandbarisalsadar.gov.bd সহ স্বনামধন্য বেশকয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করে দক্ষতার প্রমান দিয়েছেন।
এতোসব কর্মজজ্ঞের মাঝেও বরিশালের লোগো তৈরি করে তাকলাগিয়ে দেন অন্তত দেড়শ ডিজাইনারকে। সাবেক জনবান্দব জেলা প্রশাসক ড.গাজী মো: সাইফুজ্জামান এর সময়ে জেলা প্রশাসন কতৃক আহবানকৃত জেলা ব্রান্ডিং লোগো তৈরি করে ১৫০ জন লোগো ডিজাইনারের মধ্যে ১ম স্থানের তালিকায় ইন্জিনিয়ার জিহাদ রানা। শুধু তাই নয় প্রশাসন থেকে পরিবর্তে একাধিকবার ২য় ও ৩য় স্থান অধিকার অর্জন করেন তিনি।
বদলে যাওয়া স্বপ্ন বাস্তবতায় জিহাদ রানাকে পেছনে তাকাতে হয়নি। যেখানেই সুযোগ পেয়েছেন যোগ্যতার প্রমান দিয়েছেন। একসময় তা দেশ ছাপিয়ে প্রভাব পড়ে বিদেশের মাটিতেও। ভারতের ইফিক্যাল হ্যাকিং নামক একটি প্রশিক্ষণ কোর্সেও ১ম স্থান অধিকার করেন জিহাদ রানা।
দেশের সুনাম ছড়িয়ে দেন বিদেশে। বাংলাদেশের মানুষের নিকট আইটি সেবায় নিজের অবদান তুলে ধরতে চান এই স্বপ্নতারকা। আইটি সেক্টরের বাহিরেও বর্তমানে তিনি জাতীয় ইংরেজি দৈনিক বাংলাদেশ টুডে’র বরিশাল ব্যুরো চিফ হিসেবে দ্বায়িত্বে রয়েছেন।