দৈনিক বরিশাল২৪.কম-এ খবর প্রকাশ, লাল বিবির পাশে সেজান
মো: আব্বাস উদ্দিন,বরিশাল: অবশেষে মানবতার জয় হল। বাউফলের সেই বৃদ্ধ স্বামী সন্তান হারা নারী লাল বিবির পাশে দাড়ালেন ২নং কালিশুরীর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক তরুন সমাজ সেবক মো: সেজান সিকদার এবং মাজেদা মেমোরিয়াল হসপিটালের ডাঃ রাকিবুল হাসান জনি । তারা লাল বিবিকে চিকিৎসার যাবতয়ীয় খরচ চালানো সহ ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন।
নিশ্ব অসহায় নারী লাল বিবিকে নিয়ে “ বাউফলের স্বামী সন্তান হারা বৃদ্ধ লাল বিবি কি এভাবেই মরে যাবে!” শিরোনামে জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল দৈনিক বরিশাল ২৪.কম – একটি বিশেষ প্রতিবেন প্রকাশিত হয়। এতে প্রশাসন সহ সমাজের বৃত্তবান সহ সব শ্রেণীর মানুষ কে এগিয়ে আসার আহবান জানানো হয়। লাল বিবিকে গতকাল ২৮ জুন শুক্রবার ডাক্তার দেখানো হয়েছে।
স্থানীয় সুত্র জানায়, বাউফল উপজেলার কালিশুরী ইউনিয়নের অন্তর্গত রাজাপুর গ্রামের ৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোসাম্মৎ লাল বিবি (যাকে লোকে চেনে লালভী নামে) যেন পটুয়াখালী জেলার আসমানী (পল্লী কবি জসীমউদ্দীনের বিখ্যাত কবিতা ‘আসমানী’ স্মর্তব্য)।
স্বামী মোঃ আইনউদ্দীন গাজী মারা গেছেন ৩০ বছর আগে; ভাগ্যবিড়ম্বিত এ নারীর নেই নিজের কোন সন্তান-সন্ততিও। সৎ ছেলে ফোরকান তার বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী লাল বিবিকে কখনও ভাল চোখে দেখেনি এবং এখনও তাঁর সাথে কোন সম্পর্ক রাখে না।
সহায়-সম্বলহীন অশীতিপর লাল বিবির নিজের শারীরিক সামর্থ্য নেই আয়মূলক কোন কাজ করার। তিনি সরকারের তরফ থেকে যে বয়স্ক ভাতা পান, সেটাও তাঁর প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই নগন্য। সে টাকার সাথে প্রতিবেশীদের করা সাহায্যটুকু জোড়াতালি দিয়ে তাঁকে চলতে হয় খুব কষ্টে-সৃষ্টে।
পরের জায়গায় তৈরি যে ঘরটা ভূমিহীন লাল বিবির মাথা গোঁজার ঠাই, বৃষ্টি হলেই তার জীর্ণ চাল দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে। তাছাড়া দিনে-রাতে পোকামাকড় ঘরে উঠে সৃষ্টি করে বিরাট বিড়ম্বনার। আর্থিক দৈন্যের কারণে এসবের সমাধান করা তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
তাছাড়া পরগাছার মত করে প্রতিবেশিদের ওপর নির্ভরতার মাধ্যমে মানবেতর জীবন নির্বাহ করা মোটেই সহজ বা স্বস্তিকর ব্যাপার নয়। গোঁদের ওপর বিষফোড়ার মত হয়ে তাঁকে এখন জ্বালিয়ে মারছে সম্প্রতি তৈরি হওয়া একটা আপদ, আর সেটা হল, ভাতের গরম মাড় লেগে তাঁর বুকের বাম পাশের কিছুটা অংশ ঝলসে গেছে।
অভাবের কারণে তাঁর চিকিৎসা সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে না, ওষুধ খেতে পারছেন না টাকার অভাবে। এমতাবস্থায় লাল বিবির খুবই প্রয়োজন সরকারী সাহায্য-সহযোগিতা। সরকার যদি তাঁর বর্তমান ক্ষতের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন এবং তাঁর বর্তমান বসতঘর মেরামত বা আশ্রয়ণ প্রকল্পে তাঁর আবাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করাসহ তাঁকে নিয়মিতভাবে মোটামুটি পর্যাপ্ত মাসিক আর্থিক সাহায্য প্রাপ্তির ব্যবস্থা করেন, তাহলে এ অশীতিপর বৃদ্ধার দুঃখময় জীবনের শেষ দিনগুলো একটু স্বস্তিতে কাটতে পারে।