নির্মান কাজ শেষ না হতেই ভেঙ্গে চৌচির উজিরপুরের সড়ক
শামীম আহমেদ: এলজিইডি’র অর্থায়নে তিন কোটি পচাত্তর লাখ টাকা ব্যয়ে পূনঃনির্মান করা জেলার উজিরপুর উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ ধামুড়া-সাতলা সড়কের কাজ শেষ হতেনা হতেই বেহাল দশায় পরিনত
হয়েছে। ইতোমধ্যে সড়কের রামেরকাঠী অংশের বেশ কয়েকটি স্থানের সড়ক ধ্বসে পরেছে। আবার কোথাও
সড়কের মাঝের কার্পেটিং উঠে গেছে।
স্থানীয় প্রধান শিক্ষক মোঃ দেলোয়ার হোসেন, ব্যবসায়ী কবির হাওলাদার, শিক্ষক পিটু মজুমদারসহ
একাধিক বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কাজের শুরুতেই ঠিকাদার নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করায়
কাজ শেষ হতেনা হতেই এ বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে।
সহকারী উপজেলা প্রকৌশলী এসএম জিয়াউল হক জানান, জনগুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কটি পূনঃনির্মানের
জন্য ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এলজিইডি’র ফ্লাট ড্যামেইজ রিপেয়ারিং প্রকল্প থেকে তিন কোটি পচাত্তর
লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। সে মোতাবেক বরিশালের আমির ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানী নামের ঠিকাদারী
প্রতিষ্ঠান সড়কের নির্মান কাজের দ্বায়িত্ব পায়।
২০১৯ সালের ৩০ জুন সড়ক নির্মানের কাজ শেষ করা হয়। তিনি আরও জানান, কাজের শুরুতেই সড়ক ব্যাবহারকারী যানবাহনের শ্রমিক ও স্থানীয় জনসাধারন নির্মান কাজে নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ করেন। তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে চলটি বছরের এপ্রিল মাসে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আকস্মিক সড়ক এলাকা পরিদর্শন করেন।
ওই সময় সড়ক নির্মান কাজে পচা গলা ইটের খোয়া দিয়ে রোলার চাঁপা দেওয়ার সময় কর্মকর্তারা তাৎক্ষনিক
সড়কের সকল কাজ বন্ধ করে দেয়।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দারা জানান, এ ঘটনার কয়েকদিন পরেই মে মাসে উপজেলা প্রকৌশলীর
যোগসাজসে তরিৎগতিতে সেই নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করেই পুনরায় সড়কের কাজ সম্পন্ন করে
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
জুন মাসের মধ্যেই চলাচলের জন্য সড়কটি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। সূত্রমতে, চলতি মাসের ১২ আগস্ট প্রথম সড়কের রামেরকাঠি অংশের মাঝখান থেকে কার্পেটিং উঠে যেতে থাকে এবং ১৫ আগস্ট একই এলাকার তিনটি স্থানে বড় বড় ফাঁটল ধরে জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি ভেঙ্গে যায়।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী ইউনুস আলীর সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্ঠা করা হলেও তিনি ফোন
রিসিফ না করায় তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক আমির হোসেনের সাংবাদিকদের বলেন, সড়কটি নির্মানের জন্য
অনেক উঁচু করে ডিজাইন করা হয়েছে কিন্তু প্রস্তাবিত দরপত্রে সড়ক সংরক্ষনের জন্য কোন প্রকার
প্রটেকশন ওয়ার্ক (বাজেট) ধরা ছিলোনা।
ফলে সড়কের দুইপাশে যদি কোন নদী, পুকুর বা ডোবা থাকে সেখানে সড়ক ভেঙ্গে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। সড়কের মাঝখান থেকে কার্পেটিং উঠে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এরকম হওয়ার কথা নয়, তবে যদি এরকম হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আগামি একবছরের মধ্যে সড়কের যাবতীয় ক্ষয়ক্ষতি হলে তা আমাকে মেরামত করে দিতে হবে।
এছাড়াও ভেঙ্গে যাওয়া অংশগুলো ইতোমধ্যে মেরামতের কাজ শুরু করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, উজিরপুর উপজেলার ধামুড়া-সাতলা সড়কের ধামুড়া ডিগ্রি কলেজ থেকে চেরাগ আলী মার্কেট পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটারের জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি প্রায় চার বছর পর্যন্ত সকল প্রকার যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী ছিলো।
প্রতিনিয়ত সাতলা-বরিশাল রটে চলাচলরত যাত্রীবাহি বাসসহ ছোট-বড় যানবাহন এ সড়কে দুর্ঘটনা কবলিত হয়েছে। এসব দূর্ঘটনায় অসংখ্য মানুষ পঙ্গুত্ব বরন করেছেন।