পালাচ্ছিল সবাই, মৃত্যুর মুখে ঝাঁপিয়ে পড়লেন এএসআই ফিরোজ - দৈনিক বরিশাল ২৪ দৈনিক বরিশাল ২৪পালাচ্ছিল সবাই, মৃত্যুর মুখে ঝাঁপিয়ে পড়লেন এএসআই ফিরোজ - দৈনিক বরিশাল ২৪

প্রকাশিতঃ জুলাই ১৬, ২০১৯ ১:১৪ পূর্বাহ্ণ
A- A A+ Print

পালাচ্ছিল সবাই, মৃত্যুর মুখে ঝাঁপিয়ে পড়লেন এএসআই ফিরোজ

অনলাইন নিউজ: সোমবার বেলা সোয়া ১১টা। কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের কার্যক্রম চলছে। বিচারক বেগম ফাতেমা ফেরদৌস এজলাসের চেয়ারে বসা। ২০১৩ সালের ২৬ আগস্ট জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার কান্দি গ্রামের আবদুল করিম হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আসামিদের ডাকা হয়।

কিন্তু হঠাৎ ওই হত্যা মামলার ৬নং আসামি হাসান সবার সামনে পকেট থেকে ধারালো ছুরি বের করে একই হত্যা মামলার ৪নং আসামি ফারুকের পেটে ঢুকিয়ে দেন। জীবন বাঁচাতে দৌড়ে বিচারকের খাস কামরায় আশ্রয় নিলে সেখানে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করলে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়েন ফারুক। পরে কুমেক হাসপাতালে নেয়ার পর তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক আদালতের বিচারক, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় আদালতের আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা ভয়ে ছোটাছুটি শুরু করেন। কিন্তু কেউ ঘাতককে আটক করতে সাহস পেলেন না। এ সময় মাদক মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসা জেলার বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশের এএআই ফিরোজ আহাম্মদ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোরা চালানোর মুখে ঘাতকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। সেই সঙ্গে ঘাতক হাসানকে জাপটে ধরে আদালত পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।

এএসআই ফিরোজের এই সাহসিকতার দৃশ্য এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই এই কাজের জন্য তাকে হিরো উপাধি দিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। কারণ ওই ঘাতককে তিনি আটক না করলে আরও একাধিক হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারতো বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আদালতের আইনজীবী শাহনেওয়াজ সুলতানাসহ অন্য আইনজীবীরা জানান, হঠাৎ এমন ঘটনা দেখে আদালতের বিচারক, কর্মকর্তা, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে চারদিকে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। ওই সময় দৌড়ে এসে ঘাতকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন এএসআই ফিরোজ। ঘাতককে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করা না গেলে হয়তো আরও কয়েকজনের প্রাণহানি ঘটতো।

comilla

ঘাতককে আটককারী বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘আমি একটি মাদক মামলায় সাক্ষ্য দিতে ঘটনার সময় আদালত কক্ষে বসাছিলাম। আবদুল করিম হত্যা মামলার কার্যক্রম শুরু হলে একপর্যায়ে ঘাতক হাসান উন্মুক্ত ছোরা হাতে আসামি ফারুককে হত্যার চেষ্টা চালায়। কিন্তু আসামি ফারুক প্রাণ বাঁচাতে বিচারকের খাস কামরায় প্রবেশ করে বাঁচার আকুতি জানায়। এ সময় সেখানে গিয়ে ঘাতক তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। এতে আদালতের সবাই হতবিহ্বল ও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। কেউ তাকে নিবৃত্ত করার সাহস পাচ্ছিল না। তখন আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঘাতককে জাপটে ধরি। এ সময় আদালতের বিচারক এজলাসে ছিলেন।’

কুমিল্লা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, এতোটা নিরাপত্তার মধ্যেও আসামি ছুরি নিয়ে কীভাবে আদালতের ভেতরে প্রবেশ করলো তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মো. সাখাওয়াৎ হোসেনকে প্রধান করে এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর এ-সার্কেল) তানভীর সালেহীন ইমন ও ডিআইও-ওয়ান (পুলিশ পরিদর্শক) মো. মাহবুব মোর্শেদকে সদস্য করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর দায়িত্বরত কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ঘাতক হাসানের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হাসান জানিয়েছে, নিহত ফারুকের কারণে সে এই হত্যা (আবদুল করিম) মামলার আসামি হয়েছে। আদালতে আসার পর তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। তাই ক্ষোভ থেকে এ ঘটনা ঘটিয়েছে হাসান। এ ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানায় আরেকটি হত্যা মামলা হয়েছে।

দৈনিক বরিশাল ২৪

পালাচ্ছিল সবাই, মৃত্যুর মুখে ঝাঁপিয়ে পড়লেন এএসআই ফিরোজ

মঙ্গলবার, জুলাই ১৬, ২০১৯ ১:১৪ পূর্বাহ্ণ

অনলাইন নিউজ: সোমবার বেলা সোয়া ১১টা। কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের কার্যক্রম চলছে। বিচারক বেগম ফাতেমা ফেরদৌস এজলাসের চেয়ারে বসা। ২০১৩ সালের ২৬ আগস্ট জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার কান্দি গ্রামের আবদুল করিম হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আসামিদের ডাকা হয়।

কিন্তু হঠাৎ ওই হত্যা মামলার ৬নং আসামি হাসান সবার সামনে পকেট থেকে ধারালো ছুরি বের করে একই হত্যা মামলার ৪নং আসামি ফারুকের পেটে ঢুকিয়ে দেন। জীবন বাঁচাতে দৌড়ে বিচারকের খাস কামরায় আশ্রয় নিলে সেখানে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করলে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়েন ফারুক। পরে কুমেক হাসপাতালে নেয়ার পর তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক আদালতের বিচারক, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় আদালতের আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা ভয়ে ছোটাছুটি শুরু করেন। কিন্তু কেউ ঘাতককে আটক করতে সাহস পেলেন না। এ সময় মাদক মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসা জেলার বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশের এএআই ফিরোজ আহাম্মদ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোরা চালানোর মুখে ঘাতকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। সেই সঙ্গে ঘাতক হাসানকে জাপটে ধরে আদালত পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।

এএসআই ফিরোজের এই সাহসিকতার দৃশ্য এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই এই কাজের জন্য তাকে হিরো উপাধি দিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। কারণ ওই ঘাতককে তিনি আটক না করলে আরও একাধিক হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারতো বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আদালতের আইনজীবী শাহনেওয়াজ সুলতানাসহ অন্য আইনজীবীরা জানান, হঠাৎ এমন ঘটনা দেখে আদালতের বিচারক, কর্মকর্তা, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে চারদিকে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। ওই সময় দৌড়ে এসে ঘাতকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন এএসআই ফিরোজ। ঘাতককে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করা না গেলে হয়তো আরও কয়েকজনের প্রাণহানি ঘটতো।

comilla

ঘাতককে আটককারী বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘আমি একটি মাদক মামলায় সাক্ষ্য দিতে ঘটনার সময় আদালত কক্ষে বসাছিলাম। আবদুল করিম হত্যা মামলার কার্যক্রম শুরু হলে একপর্যায়ে ঘাতক হাসান উন্মুক্ত ছোরা হাতে আসামি ফারুককে হত্যার চেষ্টা চালায়। কিন্তু আসামি ফারুক প্রাণ বাঁচাতে বিচারকের খাস কামরায় প্রবেশ করে বাঁচার আকুতি জানায়। এ সময় সেখানে গিয়ে ঘাতক তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। এতে আদালতের সবাই হতবিহ্বল ও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। কেউ তাকে নিবৃত্ত করার সাহস পাচ্ছিল না। তখন আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঘাতককে জাপটে ধরি। এ সময় আদালতের বিচারক এজলাসে ছিলেন।’

কুমিল্লা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, এতোটা নিরাপত্তার মধ্যেও আসামি ছুরি নিয়ে কীভাবে আদালতের ভেতরে প্রবেশ করলো তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মো. সাখাওয়াৎ হোসেনকে প্রধান করে এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর এ-সার্কেল) তানভীর সালেহীন ইমন ও ডিআইও-ওয়ান (পুলিশ পরিদর্শক) মো. মাহবুব মোর্শেদকে সদস্য করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর দায়িত্বরত কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ঘাতক হাসানের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হাসান জানিয়েছে, নিহত ফারুকের কারণে সে এই হত্যা (আবদুল করিম) মামলার আসামি হয়েছে। আদালতে আসার পর তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। তাই ক্ষোভ থেকে এ ঘটনা ঘটিয়েছে হাসান। এ ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানায় আরেকটি হত্যা মামলা হয়েছে।

প্রকাশক: মোসাম্মাৎ মনোয়ারা বেগম। সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: ইঞ্জিনিয়ার জিহাদ রানা। সম্পাদক : শামিম আহমেদ যুগ্ন-সম্পাদক : মো:মনিরুজ্জামান। প্রধান উপদেষ্টা: মোসাম্মৎ তাহমিনা খান বার্তা সম্পাদক : মো: শহিদুল ইসলাম ।
প্রধান কার্যালয় : রশিদ প্লাজা,৪র্থ তলা,সদর রোড,বরিশাল।
সম্পাদক: 01711970223 বার্তা বিভাগ: 01764- 631157
ইমেল: sohelahamed2447@gmail.com
  বরিশালে পাঁচ শতাধিক সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে পুলিশের ত্রাণ বিতরণ   ইপিজেড থানা যুবদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত   দৈনিক বরিশাল২৪.কম-এর সম্পাদক শামীম আহমেদ অসুস্থ, হাসপাতালে ভর্তি   বিশ্ব ডিম দিবস উপলক্ষে বরিশালে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত   সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সক্রিয় ট্রাফিক পুলিশ   “সাংবাদিকদের সক্রিয় রাজনীতিতে না আসাই ভাল”–মজিবর রহমান সরোয়ার   পদোন্নতি পেয়ে সচিব হলেন বরিশালের কৃতিসন্তান এ এইচ এম সফিকুজ্জামান   বানভাসীদের সহযোগিতায় এক দিনের বেতন দেয়ার ঘোষণা দিল ইয়কোহামা লেভেলস এন্ড প্রিন্টিং (বিডি) লিমিটেড   বরিশালে শ্রমীক লীগ নেতার ইসলামী আন্দোলনে যোগদান   বন্যার্তদের সহায়তায় এগিয়ে এরো চট্টগ্রামের ধানসিঁড়ি আদর্শ কেজি স্কুল   বন্যার্তদের সহায়তায় এগিয়ে এলো ধানসিঁড়ি আদর্শ কেজি স্কুল   বন্যাদূর্গতদের সহায়তায় এগিয়ে এলেন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত   খাগড়াছড়িতে বন্যা কবলিত অসহায় মানুষের পাশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী   বোট নিয়ে চট্টগ্রামের নিউমুরিং থেকে উদ্ধার টিম নোয়াখালীতে পৌছাল   বরিশালে দুর্গোৎসবের টাকা আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বন্যার্তদের জন্য দান   বিভিন্ন জেলায় বন্যার্তদের উদ্ধার কার্যক্রমে সেনা মোতায়েন   চাঁদপাশা হাইস্কুল ও কলেজে আধুনিক মাল্টিমিডিয়া ক্লাস উদ্বোধন   বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দলনে নিহত শান্ত ও রাকিবের কবর জিয়ারত করলেন বরিশাল জাপার নেতৃবৃন্দ   রাস্ট্র সংস্কারে প্রশাসনকে সহায়তা করতে হবেঃ ইকবাল হোসেন তাপস   রাস্তায় লাঠি হাতে ছাত্রলীগকে মানুষ পছন্দ করেনি, অন্য কাউকেও দেখতে চায় নাঃ তাপস