বরিশালের আগৈলঝাড়ায় বেবী হোমে ঠাঁই হলো দুই নবজাতক কন্যা শিশুর
শামীম আহমেদ: বরিশালের বিভাগীয় বেবী হোম আগৈলঝাড়ায় ঠাঁই হয়েছে ৫ দিন ও ৩দিন বয়সী দুই নবজাতক কন্যা শিশুর। বুধবার দুপুরে ওই দুই নবজাতককে বেবী হোমের উপ- তত্ত্বাবধায়কের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এখন থেকে বেবীহোমেই বেড়ে উঠবে তারা।
এদের মধ্যে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসাতালে জন্ম নেয়া ফাহিমা বরিশাল নিরাপদ আবাসন কেন্দ্রের বাসিন্দা বাকপ্রতিবন্ধীর কন্যা। আর কুলসুমের জন্ম হয় পিরোজপুর হাসপাতালে। সেখানে মানসিক প্রতিবন্ধী মা শিশুটিকে জন্ম দিয়ে পালিয়ে যায়।
হাসপাতলের রেজিস্ট্রারে মায়ের নামের জায়গায় লেখা রয়েছে শাবনুর। বরিশাল সমাজ সেবা অফিসের প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ জানান, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় উজিরপুর উপজেলা থেকে নিরাপদ আবাসনে পাঠানো হয় মানসিক ও বাকপ্রতিবন্ধী মহিলাকে।
৫ দিন পূর্বে বেশী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। জন্ম নেয়ার পর নবজাতকের নাম রাখা হয় ফাহিমা। কিন্তু প্রতিবন্ধী মায়ের পক্ষে নবজাতককে লালন-পালন সম্ভব না হওয়ায় ফাহিমাকে বরিশাল বিভাগীয় বেবী হোম আগৈলঝাড়ায় হস্তান্তর করা হয়।
এখন থেকে সেখানেই বড় হবে ফাহিমা। তবে কেউ যদি আইনী অভিভাবক হতে চান তাহলে আদালতে আবেদন করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে যারা আইনী অভিভাবক হবেন তাদের বিষয়ে ব্যাপক তদন্ত করে তারপর আদালত যদি মনে করেন ওই অভিভাবকের কাছে শিশুটি ভালো থাকবে তাহলে তাদের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেবেন।
ওই নির্দেশ মোতাবেক বিভাগীয় বেবী হোম ও সমাজসেবা অধিদপ্তর তাদের কাছে শিশু হস্তান্তর করবেন বলে জানান প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ। পিরোজপুর জেলা প্রবেশন কর্মকর্তা জাকির হোসেন হাওলাদার জানান, তিন দিন আগে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে শাবনুর নামের মানসিক বিকারগ্রস্থ অন্তঃসত্ত্বা নারী ভর্তি হয়ে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন।
হাসপাতাল থেকে নবজাতকের নাম রাখা হয় কুলসুম। সন্তান প্রসবের পরে ওই মা পালিয়ে যান। বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর মাধ্যমে সমাজসেবা দপ্তরকে অবগত করানো হলে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হই।
পিরোজপুরের শিশু আদালত নবজাতক কুলসুমকে বরিশাল বিভাগীয় বেবী হোমে লালন পালনের নির্দেশ দেন।
আদালতের নির্দেশ মোতাবেক কুলসুমকে বেবী হোমের উপ-তত্ত্বাবধায়কের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এখানেই বেড়ে উঠবে কুলসুম।
পিরোজপুর সমাজসেবা দপ্তর সূত্র থেকে জানা গেছে, মানসিক বিকারগ্রস্থ নারীটি সুন্দরী হওয়ায় ইতিপূর্বে
আরো দুইবার অন্তঃসত্ত্বা হন। সে দু’টি সন্তান জন্ম দিলেও তা কে বা কারা নিয়ে যায়। স্থানীয়ভাবে বিষয়টি সমাজসেবা দপ্তরের কর্মকর্তারা জানতে পেরেছেন।
নারীকে খুজে বের করার চেস্টা চলছে। তাকে পাওয়া গেলে তার নিপরাপত্তার জন্য বরিশাল নিরাপদ আবাসনে পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে বরিশাল বিভাগীয় বেবী হোমের উপ-তত্ত্বাবধায়ক আবুল কালাম আজাদ জানান, সাত মাস বয়সে ফহিমার জন্ম হওয়ায় সে কিছুটা অসুস্থ রয়েছে। চিকিৎসক ডেকে তার পরামর্শে সকল ধরনের চিকিৎসা প্রদান করা হবে। আর কুলসুম পুরোপুরি সুস্থ রয়েছে।