বরিশালে লুসি’র যে কোনো প্রয়োজনে প্রশাসন সহযোগীতা করবে: রাম চন্দ্র দাস
ফারজানা ইয়াসমীন: বরিশালে লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্ট এর যে কোনো প্রয়োজনে প্রশাসন সহযোগীতা করবে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার রাম চন্দ্র দাস। আজ সোমবার (২২ জুলাই) বিকেলে অসুস্থ ব্রিটিশ নাগরিক লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্টকে অক্সফোর্ড মিশন চার্চে দেখতে গিয়ে তিনি এ কথা জানান।
এসময় বরিশাল জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়ার রহমানও সাথে ছিলেন। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়া লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্ট বেশ কিছুদিন যাবৎ অসুস্থ রয়েছেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বরিশাল সিভিল সার্জন ডঃ মনোয়ার হোসেন, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালএরপরিচালক ডঃ মোঃ বাকির হোসেন, বরিশাল সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক আল মামুন তালুকদার।
প্রথমেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচছা জানানো হয়। পরে বিভাগীয় কমিশনার অসুস্থ ব্রিটিশ নাগরিক লুসি হল্ট এর সার্বিক খোজ খবর নেন। তার চিকিৎসার জন্য তাকে অর্থ সহায়তায় করেন।
ডাক্তার তার শরিরের অবস্থা প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করেন। বিভাগীয় কমিশনার অক্সফোর্ড মিশন চার্চের ফাদার জনকে লুসি হল্টকে সার্বক্ষনিক দেখভাল করার জন্য একজন সিস্টারকে রাখার অনুরোধ জানান।
পাশাপাশি লুসি হল্ট এর সব ধরনের প্রয়োজনে প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করার জন্য বলেন। ৫৭ বছর ধরে এ দেশে মানুষের সেবা করেছেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় জীবনের মায়া তুচ্ছ করে যুদ্ধাহত ব্যক্তিদের শুশ্রূষা করেছেন। মানবদরদী এই ব্রিটিশ নাগরিক ।
৮৭ বছর বয়সী লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্টের জন্ম ১৯৩০ সালের ১৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের সেন্ট হ্যালেন্সে। বাবা জন হল্ট ও মা ফ্রান্সিস হল্ট। দুই বোনের মধ্যে ছোট লুসি। তাঁর বড় বোন রুত অ্যান রেভা ফেলটন স্বামী ও তিন ছেলে নিয়ে তিনি যুক্তরাজ্যে বসবাস করেন।
লুসি ১৯৬০ সালে প্রথম বাংলাদেশে আসেন। যোগ দেন বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনে। এখানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের পড়াতেন।
২০০৪ সালে অবসর নেওয়ার পর তিনি আর দেশে ফিরে যাননি। বর্তমানে বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনি বিনা পারিশ্রমিকে শিশুদের ইংরেজি পড়াতেন।
শিশুদের জন্য তহবিল সংগ্রহেরও কাজ করছেন তিনি। ৫৭ বছর ধরে ঘুরে ফিরে তিনি কাজ করেছেন যশোর, খুলনা, নওগাঁ, ঢাকা ও গোপালগঞ্জে। এখন এই দেশের মাটিতেই তিনি সমাহিত হতে চান। এটাই তাঁর শেষ ইচ্ছা বলে জানিয়ে ছিলেন।