বরিশালে ১৪ বছর আগের মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন
শামীম আহমেদ: বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের লামচড়ি গ্রামের ২০০৫ সালে ধর্ষণ হওয়া কিশোরী ১৪ বছর পর ২০১৬ সালে ধর্ষক যুবকের বিরুদ্ধে মামলা করায় তিন বছর মামলা চলার পর ধর্ষণের আসামি আবু বক্কর সিদ্দিককে (২৫) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার দুপুরে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক আবু শামীম আজাদ এ রায় প্রদান করেন।
একই সাথে ধর্ষণের ঘটনার পর জন্ম নেওয়া শিশুটিকে ধর্ষক আবু বক্কর সিদ্দিকের সন্তান
হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও শিশুটি সাবালক না হওয়া পর্যন্ত তার যাবতীয় ভরণ- পোষণ রাষ্ট্রকে বহন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালের ১৩ মার্চ বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের লামচড়ি গ্রামের শামসুল হক সিদ্দিকের পুত্র আবু বক্কর তার চাচাতো বোনকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে।
এ ঘটনায় কিশোরী গর্ভবতী হয়ে পড়ে। বিষয়টি এলাকাবাসী সালিশ ডেকে ধর্ষক আবু বক্করকে ধর্ষিতা কিশোরীকে বিয়ে করতে বলে। কিন্তু সে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়।
এরপর ২০১৬ সালের ১৬ মার্চ ধর্ষিতা ওই কিশোরী বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে আবু বক্করকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। একই বছরের ৩ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানার এসআই শিশির পাল।
দীর্ঘ তিন বছর ধরে মামলা চলার পর ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষে বুধবার দুপুরে আসামি আবু বক্কর সিদ্দিককে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ প্রদান করেন আদালতের বিচারক।
বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের পিপি ফজলুল হক ফয়েজ মামলার রায়ে সন্তোশ প্রকাশ করে বলেন, এটি একটি যুগান্তকারী রায়। কারণ ১৪ বছর আগের ধর্ষণের মামলায় আসামির যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত।
সেই সাথে ধর্ষণের শিকার নারীর গর্ভে জন্ম নেওয়া শিশুটি সাবালক না হওয়া পর্যন্ড রাষ্ট্রকে তার ভরণ পোষণের যাবতীয় খরচ বহন করার আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
দৈনিক বরিশাল২৪/শামীম আহমেদ