বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন নামেই মাত্র বিরতিহীন, চরম দুর্ভোগ যাত্রীদের
ফারুক হাসান,বেনাপোল প্রতিনিধি: বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন নামেই মাত্র বিরতিহীন, চরম দুর্ভোগ যাত্রীদের । উদ্বোধনের এক মাস যেতে না যেতেই বহুল প্রতীক্ষিত বিরতিহীন বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি নামসর্বস্ব এক্সপ্রেসে রূপলাভ করেছে। ট্রেনটি বেনাপোল থেকে ঢাকাপর্যন্ত যেতে কমপক্ষে দশ জায়গায় থামে । আবার ঢাকা থেকে বেনাপোল আসতে দশের অধিক জায়গায় থামানো হয় ট্রেনটিকে।
বেনাপোল বাসী যে আশা উদ্দীপনা নিয়ে বেনাপোল এক্সপ্রেস কে স্বাগত জানিয়ে ছিল আস্তে আস্তে সেটা ফিকে হতে বসেছে।
ট্রেনের সময় সুচী নিয়ে এই এলাকার মানুষের মাঝে রয়েছে চাপা ক্ষোভ । বেনাপোল থেকে ট্রেনটি দপুর একটায় ছাড়ার কথা থাকলেও ট্রেনটি দুপুর আড়াই টার আগে ছাড়ে না। ট্রেনটি ঢাকার কমলাপুর ষ্টেশনে গিয়ে পৌছায় রাত বারটার সময়।
আর সেকারনে প্রায় বেনাপোলের যাত্রীদের পড়তে হয় নানা রকম দুর্ভোগে। ঢাকা থেকে ঈশ্বরদী রেলস্টেশনে আসা পর্যন্ত শুধু বঙ্গবন্ধু সেতুর আগে চেকিংয়ের প্রয়োজনে থামানো ছাড়া অন্য কোনো স্টেশনে থামার কথা নয়, অথচ প্রতিদিন ঈশ্বরদী পর্যন্ত আসতে অন্তত পাঁচ স্থানে বিরতি দেওয়া হচ্ছে। ঈশ্বরদীর পর চুয়াডাঙ্গা, আলমনগর,ভেড়ামারা সহ বিভিন্ন ষ্ট্রেশনে থামানো হয় বিভিন্ন কারনে।
গত রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রায় একইভাবে দেরিতে চলাচল ও বিভিন্ন স্টেশন ও আউটার সিগন্যালে দাঁড় করিয়ে রাখাও যেন নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
রেলের সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা বিষয়টি জানার পরও কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। কর্মকর্তারা বলছেন, তারা চেষ্টা করেও এই অচলায়তন ভাঙতে পারছেন না। নতুন রেলপথ নির্মাণ না করে নতুন নতুন ট্রেন চালু করাতেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে যাত্রী, অ্যাটেনডেন্ট, টিটিই, গার্ডসহ দায়িত্বশীলরা জানান। ধীরগতি আর বিকট শব্দে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা।
তথ্যসূত্র জানায়, বিরতিহীন ট্রেনকে চলার জন্য একই লাইনের অন্যান্য ট্রেনকে থামিয়ে সাইড দেওয়ার কথা সেখানে বিরতিহীন ট্রেনকেই বিভিন্ন স্টেশন ও আউটার লাইনে থামিয়ে রেখে অন্যান্য ট্রেনকে চলার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে।
এতে বেনাপোল এক্সপ্রেস নামের বিরতিহীন ট্রেন আর বিরতিহীন থাকছে না। শুক্রবার রাতে ঢাকা থেকে
ছেড়ে আসার পর ভোর ৪টা ৫০ মিনিটে ঈশ্বরদী রেলস্টেশনে এসে পৌঁছানোর সময় নির্ধারিত থাকলেও শনিবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে এসে পৌঁছায় এ ট্রেন।
একইভাবে গত রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার প্রতিদিন দেড় থেকে ২ ঘণ্টা পর্যন্ত দেরিতে চলাচল করছে ট্রেনটি।
বেনাপোল এক্সপ্রেসের ট্রেনযাত্রীরা জানান, শুক্রবার রাত ১টার দিকে ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে ছাড়ার পর ট্রেনটি যে ধীরগতিতে চলছিল তাতে যাত্রীরা বিরক্ত হয়ে পড়েন।
বিমানবন্দর স্টেশন থেকে টাঙ্গাইল পর্যন্ত ট্রেন চলেছে অনেকটা শম্বুকগতিতে।টাঙ্গাইল স্টেশনে স্টপেজ না থাকলেও সেখানে এই ট্রেনকে প্রায় ২৫ মিনিট দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এর পর ঈশ্বরদী পর্যন্ত আসার পথে একে একে উল্লাপাড়া স্টেশনের কিছুটা দূরে শরৎনগর স্টেশনের আগেসহ বেশ কয়েক স্থানে আউটার লাইনে ৫ থেকে ২০ মিনিট পর্যন্ত বিরতিহীন বেনাপোল এক্সপ্রেসকে দাঁড় করিয়ে রেখে বিপরীতমুখী অন্তত ৫-৬টি
আন্তঃনগর ও লোকাল ট্রেনকে সাইড দেওয়া হয়।
বেনাপোল রেল ষ্টেশন মাষ্টার সাইদুর জামান জানান,নতুন নতুন ট্রেন চালু করা হলেও নতুন রেলপথ বাড়ানো হচ্ছে না, প্রতিদিন ঈশ্বরদী-ঢাকা রুটে ৪৮টি ট্রেন চলাচল করে, তারপর খুলনা -ঢাকার ট্রেন তো রয়েছে এতগুলো ট্রেন এক লাইনে চলাচলের কারণে বিরতিহীন ট্রেনকে বিরতিহীনভাবে চলার সুযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা অপ্রতুল।
আর একারনে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি বিরোতিহীন ভাবে চলতে না পেরে বিভিন্ন ষ্টেশনে থামতে হচ্ছে ফলে
নির্ধারিত সমায়ের চেয়ে ট্রেনটি কিছুটা দেরিতে গন্ত্যেবে পৌচ্ছাছে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলের পাকশী বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, বিরতিহীন ট্রেনকেই অন্যান্য ট্রেনকে সাইড দেওয়ার কথা, বিরতিহীন ট্রেনকে দাঁড় করিয়ে রাখার কথা নয়, কিন্তু একই লাইনে অনেক ট্রেন চালানোর জন্য বাধ্য হয়ে নিয়ম ভাঙা হচ্ছে। আপাতত এ ছাড়া কোনো উপায় নেই। এ বিষয়ে রেলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।