ভারী বর্ষণে তলিয়ে গেছে চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চল, দুর্ভোগে অস্থায়ী বাসিন্দারা
সোহেল আহমেদ,চট্টগ্রাম: অবিরাম বর্ষণে তলিয়ে গেছে চট্টগ্রাম এর নিম্নাঞ্চল। বাসাবাড়ি সহ বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে আসবাবপত্রের ব্যপক ক্ষয়-ক্ষতির আশংকা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে আবার বিদ্যুৎ থাকলেও সকাল থেকেই নেই গ্যাস।
খাবারের হোটেল গুলোতেও পর্যাপ্ত পরিমান খাবার মিলছেনা। এখানকার বসবাসরত মানুষকে অন্তহীন দুর্ভোগের মুখে পড়তে হয়েছে। এতে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে দক্ষিনাঞ্চল সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসে কর্মরত অস্থায়ী বাসিন্দারা।
বিভিন্ন সড়কে পানি জমে গিয়ে যানবাহন চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। মূল সড়কগুলোতে যানজট তৈরি হয়েছে।
এছাড়া, অলিগলিতেও জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। পানি ঢুকে পড়েছে বাসা-দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস, কাঁচাবাজারেও।
পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত পরিমান ব্যবস্থা না থাকায় এ ভয়াবহ জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে বলে জানান নগরবাসী।
অপরদিকে, চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুর থেকে লালখানবাজার পর্যন্ত আক্তারুজ্জামান ফ্লাইওভারে হাঁটু পরিমাণ পানি জমে থাকার তথ্য দিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
বৃষ্টির মধ্যে গাড়ি নিয়ে ফ্লাইওভার অতিক্রম করতে গিয়ে অনেকে দুর্ভোগে পড়েছেন।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ১৩৬ দশমিক ২ মিলিমিটার ভারি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আজ সোমবারও সারাদিন ভারি ও টানা বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা আছে।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত রবিবারের টানা বর্ষণে নগরের অধিকাংশ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
প্রবর্তক মোড়, মুরাদপুর মোড়, মুরাদপুর মোহাম্মদপুর এলাকা, বহদ্দারহাট, চকবাজার, ২নং গেট, হালিশহর, বাকলিয়া, নয়া বাজার, বৌবাজার, কেবি আমান আলী রোডসহ বিভিন্ন এলাকা মধ্যরাতে পানিতে তলিয়ে যায়।
তাছাড়া নগরের অন্যান্য এলাকায় কোথাও হাঁটু পানি, কোথাও কোমর পানি জমে যায়। আবার অনেক সড়ক ও উপসড়কেও দেখা দেয় জলাবদ্ধতা।
কোনো রকম ও আর নিজাম রোড আবাসিক এলাকা হয়ে জিইসির পূর্ব মোড়, সিএন্ডবি কলোনির পানি মাড়িয়ে আলফালাহ গলির বাসায় আসি। তখনো বাসার সামনের গলিতে হাঁটু পানি।
নগরের বাদুরতলার বাসিন্দা হারুনুর রশিদ বলেন, রবিবার সন্ধ্যার পর থেকে মুষলধারে বৃষ্টিতে বাসার ভেতরে পর্যন্ত পানি ঢুকে যায়। রাতভর ঘুমানো দূরের কথা, উল্টো বাসার ভেতর থেকে পানি ফেলতে হয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি শৈবাল দাশ সুমন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, নগরীর দুই-তৃতীয়াংশ এলাকায় পানি জমে থাকার তথ্য পেয়েছেন তিনি। জামালখানে একটি গাছ ভেঙ্গে সড়কের একপাশ দিয়ে যানবাহন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।
নগরীর ঘাটফরহাদ বেগ এলাকায় চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সীমানা দেওয়াল ভেঙ্গে পাহাড়ি মাটি ও পানি এসে পড়েছে সড়কে।
তিনি আরো জানান, টানা বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধসের শঙ্কায় নগরীর বিভিন্ন পাহাড়ে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। মাইকিং অব্যাহত আছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সহকারি কমিশনার তৌহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, পাহাড় থেকে এ পর্যন্ত ৩৬১টি পরিবারকে সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। আরও যারা ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে, তাদের সরানোর প্রক্রিয়া চলছে।