ভয়ংকর পরিস্থিতির কথা জানালেন প্রাণে বেঁচে যাওয়া ইউএনও হোসাইন মুহাম্মদ
সেই পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে ইউএনও হোসাইন মুহাম্মদ আল মুজাহিদ আজ শুক্রবার সকালে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাত তিনটার দিকে হঠাৎ করে লঞ্চের দ্বিতীয় তলায় আমাদের ভিআইপি কেবিনসহ আশপাশ এলাকায় ধোঁয়ায় নাক বন্ধ হয়ে আসে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মানুষের চিৎকারে এক বীভৎস অবস্থা তৈরি হয়। এ সময় স্ত্রী উম্মুল আরাকে নিয়ে কত দ্রুত ও কীভাবে যে লঞ্চের সামনের দিকে নেমে এসেছি, তা বলে বোঝাতে পারব না। এরই মধ্যে ঝালকাঠির দিয়াকুল গ্রামে নদীর তীরে লঞ্চটি ভেড়ানো হলে আমরা দ্রুত নেমে পড়ি। এ সময় কয়েক শ মানুষ লঞ্চ থেকে নামতে পারলেও বেশির ভাগ মানুষ লঞ্চে আটকা পড়ে যায়। অনেককে দেখা গেছে, নিজের প্রাণ বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন। প্রচণ্ড শীতের রাতে তাঁরা নদী সাঁতরে তীরে উঠতে পেরেছেন কি না, তা স্বজনেরাও বলতে পারছেন না।’
ইউএনও আরও বলেন, অনেককে দেখা গেছে, লঞ্চ থেকে নামার সময় তাঁর শিশুসন্তানকে খুঁজে পাচ্ছেন না। এ সময় তাঁরা আবার লঞ্চের দিকে দৌড়ে গিয়ে আগুনে আটকা পড়ে যান। এ অবস্থায় লঞ্চে শিশু, নারীসহ যাত্রীদের চিৎকারে এক বীভৎস অবস্থার তৈরি হয়।
পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মুহাম্মদ নাছরুলুল্লাহ তাঁর স্ত্রীসহ তাঁদের একমাত্র আড়াই বছরের সন্তান তাবাচ্ছুমকে নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়িতে ফিরছিলেন। তবে ওই দম্পতি প্রাণে রক্ষা পেলেও তাঁদের সন্তান নিখোঁজ আছে।
মুহাম্মদ নাছরুলুল্লাহর বরাত দিয়ে তাঁর ভায়রা পাথরঘাটা শহরের কাপড় ব্যবসায়ী রুহুল আমিন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তাবাচ্ছুমকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। আজ ভোর থেকে লঞ্চ এলাকা, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে খোঁজাখুঁজি করেও বেলা ১১টা পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ মেলেনি। পাথরঘাটার এ রকম প্রায় ১০ জন নিখোঁজ আছে। সূত্রঃ প্রথমআলো।