‘লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখর মিনা, হজ শুরু আগামীকাল শনিবার
অনলাইন নিউজ: মক্কার মসজিদুল হারাম থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে মিনায় হাজিদের অবস্থান নেয়ার মাধ্যমে এ বছরের পবিত্র হজের প্রাথমিক আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। তবে মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু আগামীকাল শনিবার।
দেশটির গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, এবার ১৬৪টি দেশের প্রায় ১৮ লাখের বেশি ধর্মপ্রাণ মুসলমান মক্কা থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বাসে, গাড়িতে এমনকি হেঁটেও ১০ কিলোমিটার দূরে মিনায় পৌঁছেছেন।
মিনা ঘিরে এখন যতদূর চোখ যায় শুধু তাঁবু আর তাঁবু। মিনাকে এখন বলা যায় তাঁবুর শহর। হাজিরা সেখানে নিজ নিজ তাঁবু তৈরি করে দিনরাত ইবাদত বন্দেগি করবেন। মহান আল্লাহতায়ালার কাছে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করে সকল ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবেন। আলল্গাহর নৈকট্য লাভের আশায় তারা জিকির করবেন, নামাজ পড়বেন জামায়াতের সঙ্গে।
এদিকে মিনায় পৌঁছুনোর পথে হাজিদের মুখে ছিল একটি রব- তালবিয়া ‘লাব্বাইক আলল্গাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুল্ক, লা শারিকা লাক।’ অর্থাৎ ‘হাজির হে আলল্গাহ হাজির, আপনার মহান দরবারে হাজির। আপনার কোনো শরিক নেই। সব প্রশংসা, নিয়ামত এবং সব রাজত্ব আপনারই।’
মিনায় ৭ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ (বৃহস্পতিবার থেকে মঙ্গলবার) পর্যন্ত অবস্থান করবেন হাজিরা। আগামী ১২ জিলহজ শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে।
হাজিরা শুক্রবার সারাদিন মিনায় অবস্থান করে সূর্যাস্তের পর ধীরে ধীরে আরাফাতের ময়দানের দিকে অগ্রসর হবেন। আগামীকাল শনিবার আরাফাতের ময়দানে অবস্থিত মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা দেয়া হবে। হজের খুতবা শেষে জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করবেন হাজিরা।
আগামীকাল শনিবার সূর্যাস্তের পর আরাফাত থেকে মুজদালিফায় যাবেন হাজিরা। সেখানে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করে খোলা আসমানের নীচে সারা রাত অবস্থানের পর শয়তানের স্তম্ভে পাথর নিক্ষেপের জন্য প্রস্তুত হবেন হাজিরা। রবিবার ফজরের নামাজ শেষে মিনায় বড় জামারায় (প্রতীকী বড় শয়তান) পাথর নিক্ষেপ শেষে পশু কোরবানি দেবেন হাজিরা। সৌদি আরবে যে দিনটিকে কোরবানির ঈদ উদযাপিত হয়।
৭ জিলহজ মক্কা থেকে মিনায় যাত্রার মধ্য দিয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও মূলত ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের দিনটিকেই হজের দিন বলা হয়। ঐতিহাসিক এই আরাফাতের ময়দানে দাঁড়িয়েই বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। নবী করিমের সেই চির অমলিন স্মৃতি বুকে ধারণ করে শ্রদ্ধা ও প্রার্থনায় নত হয়ে হাজিরা আরাফাতের ময়দানে ইবাদত-বন্দেগিতে মগ্ন হন।