স্ত্রীকে নিয়ে জোয়াল টেনে সংসার চালান ৭০ বছরের বৃদ্ধা
অনলাইন নিউজ: সামনে স্বামী পিছনে স্ত্রী এভাবে সামনে পিছনে করে জোয়াল টেনে প্রতিটি সরিষার দানা থেকে ফোঁটা ফোঁটা তেল বের করেন অতুল তেলী (৭০)।
অতুলের এ অতুলনীয় খাঁটি সরিষার তেলের কদর অনেক। ঘানি থেকে ফোঁটা ফোঁটা তেল পরলেও তাদের চোয়াল বেয়ে পায়ের পাতা অবধি ঘাম ঝরে বৃষ্টির ফোঁটার মত।
রোববার নিতাই ইউনিয়নের তেলীপাড়ার অতুল উদ্দিনের বাড়ীতে গিয়ে এদৃশ্য দেখা যায়। তেলী পাড়ার মরহুম ছকিন উদ্দিনের ছেলে অতুল উদ্দিন (৭০)। তিনি বাপ দাদার পেশা আকঁড়ে ধরে আছেন এখনো। তার প্রথম স্ত্রী কাচনাতন বেওয়া অনেক আগেই মারা গেছেন।
ওই স্ত্রীর ৬ মেয়ে ১ ছেলে, ৫ মেয়েকে ধার দেনা করে ও ঘানি টানা বলদ বিক্রি করে বিয়ে দিয়েছে কোন রকমে। এখনো একটি বিবাহ যোগ্য মেয়ে রয়েছে। তার প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার কয়েক মাস পর বিয়ে করেন হাওয়া বেগমকে।
এই হাওয়া এখন অতুলের তেলের ঘানি টানার একমাত্র সাথী। ঘানির জোয়াল টানেন কখনো অতুল কখন হাওয়া। তারা প্রতিদিন ৫ কেজি সরিষা মারেন।
৫ কেজি সরিষা থেকে তেল হয় ১ কেজি ২৫০ গ্রাম । এই তেল পুরনো একটি মরিচা ধরা বাই-সাইকেলে করে নিয়ে যান স্থনীয় একটি শশ্বান বাজারে।
৩২০টাকা কেজি দরে বিক্রি করে লাভ করেন ৭০ টাকা এবং আড়াই কেজি খৈল বিক্রি করেন ৮০ টাকা। মোট ১৫০ টাকায় চলে তার সংসার।
যে ঘরে তিনি ঘানি স্থাপন করেছেন সে ঘরটিও অনেক পুরনো হয়ে গেছে। মরিচা ধরে টিন গুলো ফুটো হয়েছে। আকাশে মেঘ ডাকলে তাদের খেয়ে না খেয়ে থাকতে হয়। অতুল তেলীর বাড়ীতে গেলে এসব কথা হয় তার সাথে।
তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কাধের জোয়াল রেখে গামছা দিয়ে চোখের পানি মুছতে মুছতে বলেন, ৪০ বছর থাকি মুই জোংগাল টানো বাহে। মোর দুই হাতত কড়া পরি গেইছে। এই বুড়া বয়সে আর পাওনা।