মা ও শিশু হাসপাতালকে করোনা বিশেষায়িত হাসপাতাল ঘোষণার দাবি সুজনের
আব্দুল করিম, চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ অবিলম্বে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালকে করোনা বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা ও নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।
রোববার (৩১ মে) সকাল ১১ ঘটিকায় মা ও শিশু হাসপাতালের সামনে নাগরিক উদ্যোগ আয়োজিত এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি জানান। এ সময় জনাব সুজন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে মুক্ত করতে প্রতিদিনই নানারকম দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন।
দেশের রাজধানী ঢাকার পরেই চট্টগ্রামের স্থান। চট্টগ্রামের গুরুত্ব বিবেচনা করে চট্টগ্রামের মানুষকেও এ ভাইরাসের কবল থেকে রক্ষা করতে প্রধানমন্ত্রী তার কার্যকরী পরিকল্পনা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর এতোসব উদ্যোগের পরেও চট্টগ্রামে করোনা চিকিৎসায় নানারকম অসঙ্গতি, অব্যবস্থাপনা লেগেই রয়েছে। সর্বত্র চিকিৎসাসেবা নিয়ে মারাত্মক হাহাকার।আজ এটা আছে তো কাল সেটা নেই, আবার কাল সেটা আছে তো পরশু ওটা নেই। যেন লেজেগোবরে অবস্থা।
সরকার কিংবা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো সিদ্ধান্তই এখানে সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। ফলতঃ চট্টগ্রামের মানুষ এক প্রকার বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচলে দিনাতিপাত করছে। কোথায় গেলে কাঙ্খিত চিকিৎসাসেবা পাওয়া যাবে তার কোনো সদুত্তর নেই। মানুষের জীবন মৃত্যুর এ সন্ধিক্ষণে বেসরকারি হাসপাতালগুলো প্রতিদিনই তাদের নিত্যনতুন গল্প জনগণের সামনে উপস্থাপন করছে।
তিনি বলেন, তারা প্রতিদিন করোনা চিকিৎসায় তাদের নানারকম প্রস্তুতির কথা শুনিয়েই সময় পার করছে অথচ চিকিৎসাসেবার জন্য তাদের দুয়ারে গেলে তাদের সে দুয়ার আর খোলে না। এমন যখন দুরাবস্থা চারিদিকে তখন চট্টগ্রামের কিছু হাসপাতাল করোনা রোগীদের চিকিৎসায় এগিয়ে আসলেও তাদেরকে সেভাবে প্রস্তুত করা হচ্ছে না।
অন্যদিকে প্রতিদিনই জনগণের অমূল্য প্রাণ বিনা চিকিৎসায় নিভে যাচ্ছে। অথচ আমরা যদি একটু মানবিক হয়ে এগিয়ে আসতাম তাহলে হয়তো অমূল্য জীবনগুলো বাঁচাতে পারতাম।সুজন বলেন, চট্টগ্রামের বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র আগ্রাবাদের জাম্বুরী মাঠের পাশেই বিশাল আকারের স্থাপনা নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের নতুন ভবনটি।
এ হাসপাতালটি যেকোনো সময় ৪শ’ মানুষের চিকিৎসাসেবার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।এখানে রয়েছে পর্যাপ্ত আইসিইউ সুবিধা। এখন শুধু প্রয়োজন হাসপাতালটিকে করোনা বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার। আমরা স্পষ্টতই দেখতে পাচ্ছি যে জনগণকে পরিকল্পিতভাবে চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত করে সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে ক্ষেপিয়ে তোলার জন্য একটি মহল বিশেষভাবে চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে।
মা ও শিশু হাসপাতালকে করোনা বিশেষায়িত হাসপাতাল ঘোষণা না দেওয়াটা তাদের সে চক্রান্তেরই অংশ।সুজন অভিযোগ করে বলেন যাদের অদৃশ্য আঙ্গুল হেলনীতে সরকারের শুভ উদ্যোগসমূহ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে তারা সকলেই হত্যাকারী। এদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের জনগণ মামলাসহ প্রয়োজনীয় সবব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি অবিলম্বে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালকে করোনা বিশেষায়িত হাসপাতালের ঘোষণা দেওয়ার আহ্বান জানান নচেৎ চট্টগ্রামের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে অনশনসহ প্রয়োজনীয় সকল কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও মানববন্ধনে ঘোষণা করেন তিনি।
নাগরিক উদ্যোগের সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেনের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আব্দুর রহমান মিয়া, মোরশেদ আলম, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের আজীবন সদস্য ফোরামের সদস্য সচিব লায়ন মাহমুদুর রহমান শাওন, আজীবন সদস্য জাহিদ তানছির, এমএ জলিল, মো. শাহজাহান, মো. জাহাঙ্গীর আলম, মো. ওয়াসিম, নগর ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রনি মির্জা, ইব্রাহিম বাপ্পি, সাজ্জাদ হাসান মনু, নগর ছাত্রলীগের সহসম্পাদক কালাচাদঁ ভট্টাচার্য সীমান্ত, হাসান মুরাদ, ফরহাদ সায়েম, মো. কাইয়ুম, শহিদুল ইসলাম শহিদ, মো. আবিদ, সাজ্জাদ হোসেন সাজ্জাদ, নাজমুল আলম শুভ, শুভ চক্রবর্ত্তী, আজম আলী জুয়েল, শাহাদাত আলম সাগর, আসিফ খান, অনিক চক্রবর্তী, প্রান্ত দে (পার্থ), পিয়াল দে, মেহেরাজ খান অপি, সাদমান জাওয়াদ, রেদোয়ান খান সাফিন, আরফিন চৌধুরি রবিন, জিহান আলী খান ও সাদ্দাম হোসেন ইভান প্রমুখ।