‘মায়ের দোয়াতেই’ বেঁচে ফিরলেন সুমন বেপারী
অনলাইন নিউজ: রাজধানীর বাদামতলীর ফল ব্যবসায়ী সুমন বেপারী। বড় ভাইদের সুবাদে ছোট থেকেই ফল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন। তবে মুন্সীগঞ্জের নাড়ির টান তাকে তাড়া করে প্রতিনিয়তই। তাই ব্যবসার খাতিরে ঢাকায় সপ্তাহে তিনদিন থাকলেও মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ির আবদুল্লাহপুরে নিজ বাড়িতে থাকেন চারদিন।
আট ভাই ও এক বোনের সংসারে বাবা ফজল বেপারী মারা যান ৬ বছর আগে। এ সময় তিনি বিদেশে ছিলেন। দেশে ফিরে সত্তরোর্ধ্ব মা আমেনা খাতুনকে নিয়ে নিজ বাড়িতেই আলাদা থাকেন তিনি। অন্যান্য ভাই-বোন সবাই যার যার সংসার নিয়ে আলাদা।
প্রতিদিনের মতোই সোমবার সকালে ফজরের নামাজ শেষে মায়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে মীরকাদিম লঞ্চঘাটের উদ্দেশে রওনা হন তিনি। ঘাটে এসে মর্নিং বার্ড লঞ্চে উঠে যাত্রা করেন সদরঘাটের উদ্দেশে। কিন্তু পথিমধ্যে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয় তাকে।
রাজধানীর শ্যামবাজার এলাকার কাছাকাছি এলে ঢাকা-চাঁদপুর রুটের ময়ূর-২ নামের তিনতলা একটি লঞ্চ মর্নিং বার্ডকে ধাক্কা দেয়। এ সময় লঞ্চটি উল্টে গেলে লঞ্চের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও তলিয়ে যান।
ঘটনাস্থলে সারা দিন খোঁজা-খুঁজি শেষে চাচাকে না পেয়ে ক্লান্ত শরীরে হতাশা নিয়ে বাড়ি ফেরেন সুমন বেপারীর ভাতিজা সাকিব বেপারী। তিনি জানান, সকালে টেলিভিশনে ব্রেকিং নিউজে লঞ্চডুবির সংবাদ পেয়ে চাচার মোবাইলে ফোন দেই। কারণ ওই লঞ্চে চাচার ঢাকায় যাওয়ার কথা। তার ফোন বন্ধ পেয়ে ছুটে যাই শ্যামবাজারের বুড়িগঙ্গার তীরে। সারা দিন খোঁজ করে কোনো হদিস না পেয়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাড়ি ফিরে আসি।
রাত ১০টায় একটি টিভি চ্যানেলে ১২ ঘণ্টা পর জীবিত একজনের সংবাদ দেখতে পাই। নিউজটি দেখে নিশ্চিত হই ওই জীবিত ব্যক্তিই আমার ছোট চাচা সুমন বেপারী। এখন তিনি মিডফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সুমন বেপারীর মা আমেনা খাতুন ছেলের জীবিত উদ্ধার হওয়ার সংবাদ পেয়ে নামাজ পড়ে আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করেন। যেন মায়ের দোয়াতেই নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে এসেছেন তিনি। সূত্র:যুগান্তর