করোনাজয়ী বীর পুলিশ যোদ্ধাদের প্লাজমা দেয়ার আহবান জানালেন বিএমপি কমিশনার
মো: শহিদুল ইসলাম: করোনাজয়ী বীর পুলিশ যোদ্ধাদের প্লাজমা দেয়ার আহবান জানিয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি) কমিশনারমোঃ শাহাবুদ্দিন খান বলেছেন, মুজিববর্ষে বাংলাদেশ পুলিশের যে অঙ্গীকার ছিল, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের সময় আমাদের সেই জনতার পুলিশ হয়ে ওঠা অনেকাংশেই সম্ভব হয়ে উঠেছে। যারা করোনা যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে এসেছ, তাদের কাছে আমার আহবান থাকবে করোনা কালীন সময়ে তোমাদের যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, সেটা সবার সাথে শেয়ার করবে। করোনা যুদ্ধে যারা বিজয়ী হয়েছে, যাদের দেহে এন্টিবডি তৈরি হয়েছে। তারা তাদের রক্তের প্লাজমা দিয়ে অন্যকে বাঁচানোর জন্য সর্বদা মানব সেবায় এগিয়ে আসবে।
বুধবার ৮ জুন সকাল ১০ টায় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্স এর ড্রিল সেড এ করোনা বিজয়ী ৫২ পুলিশ সদস্যকে কাজে যোগদানের পূর্বে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। বিএমপি কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান, বিপিএম(বার) সংবর্ধনা অনুষ্টানে সভাপতিত্ব করেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের শুরুতেই বিএমপি কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান, বিপিএম(বার) করোনা যুদ্ধে বিজয়ী অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বিএমপি, প্রলয় চিসিম ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার রাসেলসহ সকল করোনা বিজয়ী পুলিশ সদস্যদেরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে সকলের হাতে উপহার হিসেবে সুরক্ষা সামগ্রী তুলে দেন।
এসময় যুদ্ধে শাহাদাত বরণকারী প্রত্যেক শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে তিনি বলেন,’স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের অসামান্য অবদানের জন্য আমরা যেমনি গর্ববোধ করি; তেমনি বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এর সময় বাংলাদেশ পুলিশ যে মানবিক অবদান রেখে চলছে তার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ তথা এদেশের আপামর জনগণ গর্ববোধ করে।
তিনি বলেন, আমাদেরকে এ ধারা অব্যাহত রেখে নিজের কাছে, নিজের পরিবারের কাছে, নিজের দেশবাসীর কাছে, বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ পুলিশের একজন গর্বিত সদস্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। পারিবারিক বিপর্যয় ঘটতে পারে জেনেও আমরা বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা যেভাবে পেশাদারিত্বের বাহিরে গিয়েও মানবিক পুলিশিং বাস্তবায়ন করতে গিয়ে প্রতিটি সদস্য নিজেদেরকে অকাতরে দেশ সেবায় বিলিয়ে দিয়েছি, এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন করোনা বিজয়ী অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, প্রলয় চিসিম।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে করোনা জয়ী পুলিশ সদস্যরা তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে পুলিশ কমিশনারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তারা বলেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর প্রাথমিক পর্যায়ে মানসিকভাবে নিজের পরিবারের কথা চিন্তা করে কিছুটা বিপর্যস্ত হয়ে পড়লেও পুলিশ কমিশনার ডায়নামিক নেতৃত্বে, পিতৃসুলভ ভালোবাসায়, সঠিক দিকনির্দেশনা ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে আল্লাহর অশেষ রহমতে তারা সফলতার সহিত করোনা যুদ্ধে জয়ী হতে পেরেছেন।
উল্লেখ্য যে, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশে এখন পর্যন্ত সর্বমোট ২১৫ জন সদস্য করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। সর্বমোট সুস্থ হয়েছেন ৮৫ জন। যার ভিতরে ইতিপূর্বে ৩৪ জন সদস্যকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল এবং আজ অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বিএমপি জনাব প্রলয় চিসিম, সহকারী পুলিশ কমিশনার কোতয়ালী মডেল থানা বিএমপি জনাব রাসেল আহমেদ, ইন্সপেক্টর তদন্ত জনাব মোঃ আঃ রহমান মুকুল সহ মোট ৫২ জন সদস্যকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন উপ-পুলিশ কমিশনার সদর দপ্তর বিএমপি আবু রায়হান মুহাম্মদ সালেহ, উপ-পুলিশ কমিশনার দক্ষিণ বিএমপি মোঃ মোক্তার হোসেন পিপিএম সেবা, উপ-পুলিশ কমিশনার উত্তর বিএমপি মোঃ খাইরুল আলম, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ফোর্স বিএমপি মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দিন, সহকারী পুলিশ কমিশনার স্টাফ অফিসার এন্ড কাউনিয়া জোন মোঃ আঃ হালিম , সহকারি পুলিশ কমিশনার ফোর্স এন্ড ট্রাফিক বিএমপি মোঃ মাসুদ রানা সহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।