বউ নিয়ে ছেলে থাকে আলাদা,অসহায় বৃদ্ধের পাশে মানবিক পুলিশ শওকত হোসেন

সোহেল আহমেদ, চট্টগ্রাম থেকে: যার পৃথিবীতে কেউ নেই তার পাশে আছে সিএমপি`র মানবিক পুলিশ টিম এ কথাটি বলেছিলেন মানবিক পুলিশ শওকত হোসেন। কর্ম জীবনের শুরু থেকে এ পর্যন্ত বেওয়ারিশ মানুষের জন্য চিকিতসা সেবা সহ নানা ধরনের বাস্তবমুখী সহযোগীতা অব্যহত রেখে চলেছেন নোয়াখালীর কৃতিসন্তান শওকত হোসেন।
পুলিশে চাকরি নিয়েই মানুষের সেবা করার স্বপ্নটি বাস্তবায়ন করার জন্য নিজের সৃজনশীল মেধা বুদ্ধিশ্রম সবটুকুই ব্যয় করছেন মানবসেবায়। রাস্তায় কিংবা ফুটফাতে পরে থাকা বেওয়ারিশ মানুষের সেবাদানে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠা শওকত হোসেন দেশের পুলিশ বিভাগে অন্যতম সংযোজন বলে মনেকরছে সচেতনমহল।
বেওয়ারিশ মানুষতো আছেই। সমাজের ভগ্নদশা মানবতাকে প্রায় প্রতিদিনই জানান দিচ্ছেন মানবিক পুলিশ শওকত হোসেন। যে কারণে বেওয়ারিশ থেকে শুরু করে শওকত হোসেন এর সহযোগীতা পাচ্ছেন পরিবার পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন সন্তানের অবহেলিত পিতা-মাতাও। পারিবারিক কলহে বেশির ভাগ বয়স্ক বৃদ্ধরাই অসহায়।
তাদের মধ্যে একজন মোস্তফা মিয়া। চট্টগ্রাম নগরের আকবরশাহ থানার পান্জাবীলেনে বসবাস করেন। একছেলে দুই মেয়ে থাকা সত্তেও মোস্তফা তার স্ত্রী ও কণ্যাকে নিয়ে মানবতার কাঠগড়ায়। ছেলে বিয়ে করেই তার সংসার নিয়ে আলাদা হয়ে গেছে। আলাদা হয়ে গেছে মোস্তফা মিয়ার জীবনের স্বপ্ন।
মোস্তফা মিয়া একসময় জাহাজে লোহা ভাঙ্গার কাজ করতেন। চলমান করোনা মহামারীতে তার চাকরিটা চলে যায়। থেমে যায় জীবন জীবীকার চাকা। অনেক চেষ্টা করেও হাড়ানো চাকরিটা আর ফিরে পাননি। বয়সের ভারে নুয়ে যাওয়া শরীরে অন্যকোন কাজও করতে পারছেন না। তিন মাসের ঘরভাড়া বাকি পড়েছে।
গত একমাস সবজি রান্না হচ্ছে বাসায়। কোথাও থেকে একটি টাকা আসার ব্যাবস্থাও নেই। পারিবারিক সমস্যার এ কথাগুলো কেঁদে কেঁদে জানিয়ে দিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মানবিক িইউনিটের টিম লিডার শওকত হোসেনকে।
তিনি জানান, কিছু পুঁজি হলে ফল বিক্রি করে তার সংসার চালাতে পারবেন। মোস্তফা মিয়ার কথা শুনে মানবিক পুলিশ ইউনিট সিএমপির পক্ষ থেকে তার হাতে নগদ ৬ হাজার টাকা তুলে দেন শওকত হোসেন।আর এই টাকা স্পন্সর করেছেন আমেরীকা প্রবাসী এক মা ও ঢাকার জুঁই আন্টি নামের দুই নারী।
মানবিক পুলিশ শওকত হোসেন বৃদ্ধ মোস্তফা মিয়াকে আশ্বাস দিয়ে বলেন ‘আপন ছেলে কোন কাজে না আসলেও মানবিক পুলিশের কিছু সন্তানতো আপনার কাজে এসেছে` এতেই আমরা আনন্দিত। উল্লেখ্য এর আগেও এই অসহায় পিতাকে আর্থিক সহযোগীতা করেছিলো সিএমপির মানবিক ইউনিট।