বাউফলে উন্নত চিকিৎসার জন্য মৃত দেহ পাঠালেন চিকিৎসক !
অনলাইন নিউজ: পটুয়াখালীর বাউফলে উন্নত চিকিৎসার জন্য মৃত দেহ পাঠালেন চিকিৎসক। পরে মৃতদেহ নিয়ে ১৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেন স্বজনরা। স্বজনদের অভিযোগ, মঙ্গলবার ভোর রাতে বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন সেবা ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার অ্যান্ড ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় মারা যান রিপা রানী (২৫)। এরআগে সোমবার দুপুরে অন্তঃসত্ত্বা নিপা রানীকে তার স্বজনরা ওই ক্লিনিকে ভর্তি করেন।
বিকাল সাড়ে ৫টায় তার সিজার হয়। পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক নয়ন সরকার তাকে অ্যানেসথেসিয়া প্রদান করেন এবং তার স্ত্রী পুঁজা ভান্ডারী সিজার করেন। চিকিৎসক নয়ন সরকারকে ৩৯তম বিসিএসের অপেক্ষমান তালিকা থেকে করোনাকালীন সেবা প্রদানের জন্য পটুয়াখালী জেনারেল হাসাপাতালে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
নিপা রানীর মা শিখা রানী বলেন, তার মেয়ের সিজার করার পর আর জ্ঞান ফিরেনি। মঙ্গলবার দিবাগত ভোর রাত ৫টার দিকে ক্লিনিক কতৃপক্ষ তার মেয়েকে নবজাতকসহ উন্নত চিকিৎসার নামে একটি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সযোগে বরিশালের উদ্দেশ্যে পাঠান। এ সময় তাদের সন্দেহ হলে পথে তারা দুমকি উপজেলার লুথার্যান হেলথ কেয়ার সেন্টারে নিয়ে যান। সেখানকার জরুরী বিভাগের চিকিৎসক তার মেয়েকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এরপরেও তারা বিষয়টি নিশ্চিত হতে মেয়েকে নিয়ে বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে যান। সেখানে জরুরী বিভাগের চিকিৎসকও তার মেয়েকে মৃত বলে বলে ঘোষণা করেন। মৃত নিপা রানীর স্বামী সুজন দাস বলেন, ভুল চিকিৎসার কারণে তার স্ত্রী মারা গেছেন। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে তার মৃত স্ত্রীকে বরিশাল পাঠিয়েছেন। মৃত নিপা রানীর বাড়ি উপজেলার সূর্যমনি ইউনিয়নের স্বানেশ্বর গ্রামে।
পটুয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমি ঘটনাটি শুনেছি। ডা. নয়ন সরকারের অ্যানেসথেসিয়া দেয়ার অভিজ্ঞতা আছে কিনা সেটা আমার জানা নেই। তবে আমি ঘটনার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’ তিনি এ ব্যাপারে বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বক্তব্য নেয়ার পরামর্শ দেন।
বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, ‘ডাক্তার নয়ন সরকার ও তার স্ত্রী পুজা ভান্ডারীর অ্যানেসথেসিয়া বা সিজার করার কোন এখতিয়ার আছে কিনা তা আমার জানা নেই।
ভুল চিকিৎসার অভিযোগ অস্বীকার করে ডা. নয়ন সরকার বলেন, ‘যে কোন এমবিবিএস ডাক্তারই সিজার করতে পারেন। তবে অভিজ্ঞতা থাকলে ভাল হয়। আর অ্যানেসথেসিয়া দেয়ার জন্য আমার ৬ মাসের প্রশিক্ষণ সনদ আছে। এছাড়া আমার স্ত্রী পূজা ভান্ডারীরও সিজার করার অনুমতি রয়েছে।সূত্র:আজকের বার্তা।