‘মধু দেখেই দৌড় দিবেন না, সেই মধুর উৎস চিহ্নিত করুন’
মোঃ মহসীন খানঃ
দুষ্ট লোকের মিষ্টি মধু! এক গ্রামে এক দুষ্টু লোক ছিল। তার কাজই ছিল গ্রামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা। এতে সে এক ধরনের মজা পেত। মানুষের কাছে যখন সে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী হিসেবে চিহ্নিত হয়ে গেল তখন সে কৌশলী হয়ে উঠে। নিজে না করে কৌশলে অন্যের মাধ্যমে এই কুকর্ম অব্যাহত রাখল।
একদিন দুষ্টু এই লোকের মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি খেলল। সে তার বাসার সামনে একটা গাছে কিছু মধু লাগিয়ে দিল। এটা দেখে তার স্ত্রী বিস্মিত হল। সে জিজ্ঞেস করল- তুমি গাছে মধু লাগালে কেন? রহস্যময় হাসি দিয়ে দুষ্টু লোকটা বলল, কাল বুঝবে।
পরদিন লোকটার লাগানো মধুর জায়গায় প্রথমে পিঁপড়া আসল। এক সময় পিঁপড়া বেড়ে গেল। পিঁপড়ার দল দেখে টিকটিকি আসল। পিঁপড়ার লোভে বাড়তে থাকে টিকটিকির ভীড়। টিকটিকির ভীড় দেখে ইদুর আসল। এরপর ইদুর খেতে বিড়াল আসল। বিড়াল দেখে কুকুর আসল। কুকুর দৌড়ে গিয়ে বিড়ালকে এক কামড় বসিয়ে দিল। সেই বিড়াল ছিল আবার পোষা।
বিড়ালের মনিব বিড়ালের শরীরে রক্ত দেখে সেই কুকুরকে লঠি দিয়ে আঘাত করল। এতে কুকুরটির শরীর থেকেও রক্ত ঝরল। কুকুরটিও ছিল পোষা। এবার কুকুরের মনিব এল। এসেই বিড়ালে মনিবের সাথে ঝগড়া বাধাল। ঝগড়া এভাবে প্রথমে দুই পরিবার, দুই পাড়া এক পর্যায়ে দুই গ্রামের মধ্যেই সংঘর্ষ লেগে গেল। সেই সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন মারা গেল।
আহতও হল বেশ কিছু। পরদিন সেই দুষ্টু লোক বলল, দেখলে তো আমার মধুর জাদু। কিছুই করলাম না কিন্তু সবকিছুই হয়ে গেল!
আমাদের দেশেও অনেকেই এভাবে মধু লাগিয়ে চলে যায়। সেই মধুর টানে অনেকেই না বুঝে ছুটে যায়। পরে কিছু না থেকে অনেক বড় ইস্যু তৈরী হয়ে যায় । এই তো দিন কয়েক আগেই ডাহা এক মিথ্যা দিয়ে ফেসবুক গরম হয়ে গেল। ছিল শিশুদের প্যাম্পাস। কিন্তু ফেসবুকে তা হয়ে যায় মানবভ্রুণ!
যে উদ্দেশ্যে করা, সে উদ্দেশ্য সফল। মুহুর্তেই ভাইরাল। সে ব্যক্তি আলোচিত। আমরা সমালোচিত। আর আইডি হ্যাক করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আমাদের বিপক্ষে দাঁড় করানো তো এখন সাধারণ ঘটনা! তাই মধু দেখেই দৌড় দিবেন না। সেই মধুর উৎস চিহ্নিত করুন। লাগানোর কারণও যাচাই করুন। অযথা গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসাবেন না।(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
লেখকঃ মোঃ মহসীন খান, ওসি, কোতোয়ালী থানা, চট্টগ্রাম।