পেঁয়াজ: বাংলাদেশ কি পারবে ভারতের উপর নির্ভরতা কাটাতে? - দৈনিক বরিশাল ২৪ দৈনিক বরিশাল ২৪পেঁয়াজ: বাংলাদেশ কি পারবে ভারতের উপর নির্ভরতা কাটাতে? - দৈনিক বরিশাল ২৪

প্রকাশিতঃ নভেম্বর ৩০, ২০১৯ ৭:০০ অপরাহ্ণ
A- A A+ Print

পেঁয়াজ: বাংলাদেশ কি পারবে ভারতের উপর নির্ভরতা কাটাতে?

ভারতে নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতাসীন হাবার পরে সেদেশ থেকে বাংলাদেশে গরু আসা বন্ধ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এর বড় ধরনের প্রভাব পড়ে বাংলাদেশে।

গরুর মাংসের দাম এক লাফে কেজি প্রতি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত পৌঁছে যায়।

তীব্র সংকট তৈরি হয় কোরবানির পশু সংগ্রহের ক্ষেত্রে। প্রথম দু’বছর এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যে কোরবানির জন্য গরু খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়েছিল অনেকের জন্য।

এই সংকটের কারণে গত কয়েক বছরের মধ্যেই বাংলাদেশে অনেক গরুর খামার গড়ে উঠে। গত দুই বছর ধরে বাংলাদেশের কোরবানির পশুর বাজার ভারতের উপর নির্ভরশীল নয়।

পেঁয়াজের এই নজিরবিহীন মূল্য বৃদ্ধি যে প্রশ্নে জন্ম দিয়েছে সেটি হচ্ছে, ভারতের উপর যে নির্ভরশীলতা তৈরি হয়েছে সেখান থেকে বাংলাদেশ কি বেরিয়ে আসতে পারবে?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়র অর্থনীতির অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা বলেন, “আমাদের কখনোই উচিত হবে না একটি বাজারের উপর নির্ভরশীল হওয়া।”

তিনি বলেন, পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে শুধু ভারতের উপর নির্ভরশীল না থেকে বিকল্প বাজারও খুঁজতে হবে। তাছাড়া বাংলাদেশের ভেতরেও পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন।

অধ্যাপক বিদিশার মতে, পেঁয়াজের জন্য ভারতের উপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা তৈরি হওয়ার একটি দুটো কারণ রয়েছে।

প্রথমত, ঐতিহাসিকভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, ভারতের পেঁয়াজের গুণগত মান এবং দাম বিবেচনা করলে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা বাংলাদেশের জন্য লাভজনক বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক বিদিশা।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: নাসিরুজ্জামান মনে করেন, ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ হয়ে যাবার পর বাংলাদেশের গরুর খামারিরা যে সফলতা দেখিয়েছে, সেটি পেঁয়াজ উৎপাদনের ক্ষেত্রেও সম্ভব।

“প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশে পেঁয়াজ যে পরিমাণ উৎপাদন হয়, ভারত থেকে যদি পেঁয়াজ না আসতো তাহলে হয়তো বাংলাদেশের কৃষক উৎপাদিত পেঁয়াজের ভালো দাম পেতো”

কৃষি সচিব বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পেঁয়াজের ক্ষেত্রে কেজি প্রতি ১০-১২ টাকা পায়। ভারত থেকে পেঁয়াজ না আসলে বাংলাদেশের কৃষকরা প্রতি কেজি পেঁয়াজে ৩০-৩২ টাকা পেতো।

সরকারি হিসেবে বাংলাদেশে বর্তমানে ২৩ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। কিন্তু পেঁয়াজ ঘরে তোলার সময় প্রায় পাঁচ লাখ টন নষ্ট হয়ে যায়। অর্থাৎ ১৯ লাখ টন পেঁয়াজ বাজারে থাকে।

অন্যদিকে বিদেশ থেকে আমদানি হয় ১১ লাখ টন। কিন্তু বাংলাদেশে প্রতিবছর ৩০ লাখ মেট্রিকটন পেঁয়াজ প্রয়োজন।

“আমাদের চাষীদের যে সক্ষমতা আছে, সেক্ষেত্রে তারা খুব সহজেই ৩০ লাখ মেট্রিকটন পেঁয়াজ উৎপাদন করতে পারে। সেক্ষেত্রে আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে বলেছি যখন চাষীরা পেঁয়াজ উৎপাদন করে বাজারে নিয়ে আসবে, তখন যেন ভারত থেকে আপাতত পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখে,” বলছিলেন কৃষি সচিব।

তিনি বলেন, কৃষকরা যদি পেঁয়াজের দাম পায়, তাহলে পরবর্তী বছর আরো বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন করবে।

বাংলাদেশের যদি পেঁয়াজ উৎপাদনের মাধ্যমে চাহিদা পূরণের সক্ষমতা থাকে, তাহলে এতদিন সেটি না করে ভারতের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকলো কেন?

কৃষি সচিব বলছেন, বিষয়টি নিয়ে অতীতে ভিন্ন চিন্তা করা হয়নি।

“কৃষক যখন উৎপাদন করে তখন বিদেশ থেকে আমদানি করলে দাম অনেক নেমে যায়। এটা যাতে না হয়। এটা হলে পরবর্তী বছর কৃষক উৎপাদন করতে আগ্রহী হয় না।”

“ভারত থেকে বা দেশের বাইরে থেকে যে পেঁয়াজ আসবে, সেটা যদি না আসে তাহলে সারা বছর হয়তো আমাদের দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের দাম একটু বেশি থাকবে। হয়তো কেজি প্রতি ৪০-৪৫ টাকা থাকবে, কিন্তু কখনো আড়াইশ টাকায় উঠবে না,” বলছিলেন কৃষি সচিব।

দৈনিক বরিশাল ২৪

পেঁয়াজ: বাংলাদেশ কি পারবে ভারতের উপর নির্ভরতা কাটাতে?

শনিবার, নভেম্বর ৩০, ২০১৯ ৭:০০ অপরাহ্ণ

ভারতে নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতাসীন হাবার পরে সেদেশ থেকে বাংলাদেশে গরু আসা বন্ধ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এর বড় ধরনের প্রভাব পড়ে বাংলাদেশে।

গরুর মাংসের দাম এক লাফে কেজি প্রতি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত পৌঁছে যায়।

তীব্র সংকট তৈরি হয় কোরবানির পশু সংগ্রহের ক্ষেত্রে। প্রথম দু’বছর এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যে কোরবানির জন্য গরু খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়েছিল অনেকের জন্য।

এই সংকটের কারণে গত কয়েক বছরের মধ্যেই বাংলাদেশে অনেক গরুর খামার গড়ে উঠে। গত দুই বছর ধরে বাংলাদেশের কোরবানির পশুর বাজার ভারতের উপর নির্ভরশীল নয়।

পেঁয়াজের এই নজিরবিহীন মূল্য বৃদ্ধি যে প্রশ্নে জন্ম দিয়েছে সেটি হচ্ছে, ভারতের উপর যে নির্ভরশীলতা তৈরি হয়েছে সেখান থেকে বাংলাদেশ কি বেরিয়ে আসতে পারবে?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়র অর্থনীতির অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা বলেন, “আমাদের কখনোই উচিত হবে না একটি বাজারের উপর নির্ভরশীল হওয়া।”

তিনি বলেন, পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে শুধু ভারতের উপর নির্ভরশীল না থেকে বিকল্প বাজারও খুঁজতে হবে। তাছাড়া বাংলাদেশের ভেতরেও পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন।

অধ্যাপক বিদিশার মতে, পেঁয়াজের জন্য ভারতের উপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা তৈরি হওয়ার একটি দুটো কারণ রয়েছে।

প্রথমত, ঐতিহাসিকভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, ভারতের পেঁয়াজের গুণগত মান এবং দাম বিবেচনা করলে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা বাংলাদেশের জন্য লাভজনক বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক বিদিশা।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: নাসিরুজ্জামান মনে করেন, ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ হয়ে যাবার পর বাংলাদেশের গরুর খামারিরা যে সফলতা দেখিয়েছে, সেটি পেঁয়াজ উৎপাদনের ক্ষেত্রেও সম্ভব।

“প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশে পেঁয়াজ যে পরিমাণ উৎপাদন হয়, ভারত থেকে যদি পেঁয়াজ না আসতো তাহলে হয়তো বাংলাদেশের কৃষক উৎপাদিত পেঁয়াজের ভালো দাম পেতো”

কৃষি সচিব বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পেঁয়াজের ক্ষেত্রে কেজি প্রতি ১০-১২ টাকা পায়। ভারত থেকে পেঁয়াজ না আসলে বাংলাদেশের কৃষকরা প্রতি কেজি পেঁয়াজে ৩০-৩২ টাকা পেতো।

সরকারি হিসেবে বাংলাদেশে বর্তমানে ২৩ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। কিন্তু পেঁয়াজ ঘরে তোলার সময় প্রায় পাঁচ লাখ টন নষ্ট হয়ে যায়। অর্থাৎ ১৯ লাখ টন পেঁয়াজ বাজারে থাকে।

অন্যদিকে বিদেশ থেকে আমদানি হয় ১১ লাখ টন। কিন্তু বাংলাদেশে প্রতিবছর ৩০ লাখ মেট্রিকটন পেঁয়াজ প্রয়োজন।

“আমাদের চাষীদের যে সক্ষমতা আছে, সেক্ষেত্রে তারা খুব সহজেই ৩০ লাখ মেট্রিকটন পেঁয়াজ উৎপাদন করতে পারে। সেক্ষেত্রে আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে বলেছি যখন চাষীরা পেঁয়াজ উৎপাদন করে বাজারে নিয়ে আসবে, তখন যেন ভারত থেকে আপাতত পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখে,” বলছিলেন কৃষি সচিব।

তিনি বলেন, কৃষকরা যদি পেঁয়াজের দাম পায়, তাহলে পরবর্তী বছর আরো বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন করবে।

বাংলাদেশের যদি পেঁয়াজ উৎপাদনের মাধ্যমে চাহিদা পূরণের সক্ষমতা থাকে, তাহলে এতদিন সেটি না করে ভারতের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকলো কেন?

কৃষি সচিব বলছেন, বিষয়টি নিয়ে অতীতে ভিন্ন চিন্তা করা হয়নি।

“কৃষক যখন উৎপাদন করে তখন বিদেশ থেকে আমদানি করলে দাম অনেক নেমে যায়। এটা যাতে না হয়। এটা হলে পরবর্তী বছর কৃষক উৎপাদন করতে আগ্রহী হয় না।”

“ভারত থেকে বা দেশের বাইরে থেকে যে পেঁয়াজ আসবে, সেটা যদি না আসে তাহলে সারা বছর হয়তো আমাদের দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের দাম একটু বেশি থাকবে। হয়তো কেজি প্রতি ৪০-৪৫ টাকা থাকবে, কিন্তু কখনো আড়াইশ টাকায় উঠবে না,” বলছিলেন কৃষি সচিব।

প্রকাশক: মোসাম্মাৎ মনোয়ারা বেগম। সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: ইঞ্জিনিয়ার জিহাদ রানা। সম্পাদক : শামিম আহমেদ যুগ্ন-সম্পাদক : মো:মনিরুজ্জামান। প্রধান উপদেষ্টা: মোসাম্মৎ তাহমিনা খান বার্তা সম্পাদক : মো: শহিদুল ইসলাম ।
প্রধান কার্যালয় : রশিদ প্লাজা,৪র্থ তলা,সদর রোড,বরিশাল।
সম্পাদক: 01711970223 বার্তা বিভাগ: 01764- 631157
ইমেল: sohelahamed2447@gmail.com
  কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে বরিশাল, ৭ জনের প্রাণহানি   ইপিজেড শিল্পাঞ্চলের আয়োজন, শতাধিক পরিবারে ঈদ সামগ্রী বিতরণ   কমতে পারে ছুটি, শনিবারও স্কুল খোলা রাখার ইঙ্গিত   লাইমলাইট গ্রামার স্কুলে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন   ঈশ্বরদীতে ২ ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ   আমেরিকায় জাহাজের ধাক্কায় ধসে পড়ল সেতু, বহু হতাহতের শঙ্কা   ইপিজেড স্মার্ট শিল্পাঞ্চল, চট্টগ্রাম এর স্বাধীনতা দিবসের আলোচানা সভা অনুষ্ঠিত   হালিশহর মডেল স্কুলে মহান স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত   অটোরিকশার সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, চোখের সামনে অঙ্গার হলো তরতাজা প্রাণ   বরিশাল বিভাগীয় সমিতি, চট্টগ্রাম-এর উদ্যোগে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত   অসহায় শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবে বরিশাল বিভাগীয় সমিতিঃ জাকির হোসেন   হালিশহর মডেল স্কুলের নতুন সভাপতি মোহাম্মাদ হোসেন, আশরাফ আলী সম্পাদক নির্বাচিত   বরিশাল প্রেসক্লাব সভাপতির মৃত্যুতে বরিশাল বিভাগীয় সমিতি, চট্টগ্রাম এর শোক প্রকাশ   কাজী বাবুল আর নেই, শোকে স্তব্ধ বরিশালের মিডিয়া অঙ্গন   জীবনকে বদলে দেওয়া এক গুণী মানুষকে যেভাবে হাড়িয়ে ফেললাম   যুগান্তর পত্রিকার বরিশাল ব্যুরো রিপোর্টার হলেন সাংবাদিক এস এন পলাশ   কেন্দ্রীয় সম্মেলনকে ঘিরে বরিশাল বিভাগীয় সমিতি‘র (ইপিজেড শিল্পাঞ্চল) এর প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত   বরিশালের মামুনের সফলতা হতে পারে অনেকের অনুপ্রেরণাঃ তাপস   ঢাকার তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসার বার্ষিক শিক্ষা সফর অনুষ্ঠিত   নিউমুরিং এর মরহুম আবদুস সবুর সওঃ এবাদত খানার সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত