চট্টগ্রামে অসহায়দের পাশে তিন ভায়রা, ত্রাণ পেলো ১৫০ পরিবার
মনিরুজ্জামানঃ দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে ১২৩ জন আক্রান্ত এবং ১২জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়াও সারা দেশে করোনা উপসর্গ নিয়ে নানা বয়সের মানুষদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তির তথ্যও এসেছে গণমাধ্যমে। পুলিশ প্রশাসন ইতিমধ্যে রাজধানী ঢাকা সহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরকে বিচ্ছিন্ন করে মানুষদের ঘরের বাইরে যেতে বারন করছে। এদিকে গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জেলায় কেউ প্রবেশ বা অন্যত্র যেতে পারবে না।
করোনাভাইরাসের এমন দূর্দশায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন চট্টগ্রামের ইপিজেড থানার নিউমুরিং, কলশী দিঘী, আকমল আলীরোডসহ বেশ কয়েকটি এলাকার অনেক শ্রমজীবি মানুষ। সরকারিভাবে সাহায্য করছে জেলা প্রশাসন। সিএমপির পক্ষ থেকেও অসহায়দের মাঝে ত্রাণ বিতরণ চলছে। এছাড়াও সেচ্ছায় নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের খুঁজে খুঁজে বের করে সাহয্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন নগরের হাসপাতাল গেট এলাকার আমেরিকা প্রবাসী সাজ্জাদ হোসেন মুন্না, কাজীর গলি এলাকার জাহেদ আহমেদ টিপু ও ইপিজেড থানার নিউমুরিং এলাকার বড় মাঝি বাড়ির মো: শাখাওয়াত হোসেন নিশান। তারা সম্পর্কে তিন ভায়রা হন।
এরা তিন জনই বিভিন্ন দূর্যোগের সময় সামাজিক কাজে এগিয়ে আসেন। সম্প্রতি সময়ে মো: শাখাওয়াত হোসে নিশান উদ্যোগ নিলে এই তিন ভায়রা মিলে নিজ অর্থায়নে নিউমুরিং, কলশী দিঘী, মুন্সিপাড়াসহ বেশকয়েকটি এলাকার ১৫০ জন কর্মহীন শ্রমজীবী ও দিনমজুরদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছেন তারা। অনেক মধ্যবিত্ত যারা মুখে লজ্জায় বলতে পারছেন তাদের সমস্যার কথা, তাদেরকেও মোবাইলে কল দিয়ে নগদ অর্থ সহযোগীতা করছেন।
গত কয়েকদিন ধরে ইপিজেড থানার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে নিত্যদিন উপার্জন করে জীবন চালানো মানুষ, যাদের করোনার কারণে জীবন অচল হয়ে পড়েছে সেরকম পরিবারের তালিকা প্রস্তুত করেন নিশান ও তার ঘনিষ্টজনরা। তারপর নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী ক্রয় এবং পরবর্তীতে তা প্যাকেটকরণ সম্পন্ন করে তারা। সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন শেষে রোববার (৫ এপ্রিল) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কয়েকটি গ্রুপে ভাগ হয়ে অসহায় পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়া হয়।
সেচ্ছায় অসহায় মানুষের পাশে এগিয়ে আসার বিষয়ে হালিশহর ব্লাড বাংক ( সামাজিক সংগঠন) এর সাধারন সম্পাদক মো: শাখাওয়াত হোসেন নিশান এ প্রতিবেদক-কে জানান, আমরা যারা সচ্ছল রয়েছি তাদের সবারই উচিত এই কঠিন সময়ে মানুষের পাশে এগিয়ে আসা। যে সংকট এখন চলছে, এটি থাকবে না। কিন্তু যে ক্ষতির সম্মুখিন আমরা হচ্ছি তা মোকাবেলার জন্য আমাদের প্রস্তুত হতে হবে। এমন মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছে গরিব অসহায় মানুষরা। বিবেকের তাড়নায় তাদের পাশে দাড়াতে চেষ্টা করেছি। যার যেরকম সামর্থ সেরকম সহযোগীতা করলে মানবতার জয় নিশ্চিত বলে মনে করেন এই তরুণ সমাজসেবক।