যার চলে যায় সেই বোঝে হায় বিচ্ছেদের কি যন্ত্রণা - দৈনিক বরিশাল ২৪ দৈনিক বরিশাল ২৪যার চলে যায় সেই বোঝে হায় বিচ্ছেদের কি যন্ত্রণা - দৈনিক বরিশাল ২৪

প্রকাশিতঃ ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৩ ১১:৪১ অপরাহ্ণ
A- A A+ Print

যার চলে যায় সেই বোঝে হায় বিচ্ছেদের কি যন্ত্রণা

সোহেল আহমেদঃ সেদিন শুক্রবার। ২৪ ফেব্রুয়ারির কালো অধ্যায়ের সুচনা! সকাল ১১ টার দিকে। ফেসবুক অন করতেই সহকর্মী শাহিন সুমনের স্টাটাস ভেসে উঠল মোবাইলের স্কিনে! সাংবাদিক মীর মনিরুজ্জামান অসুস্থ। ফেসবুক ছেড়ে গুরুর ব্যবহৃত ফোনে কল দিলাম। রিং বাজছে, ওই প্রান্ত থেকে কল রিসিভ হচ্ছে না। অসুস্থতার সংবাদ শুনে যতটা খারাপ লেগেছে কল রিসিভ না হওয়াতে তারচেয়ে বেশি খারাপ লাগা শুরু হলো।

শাহিনের নিকট ফোন করে জানলাম হাসপাতালে সবারই ব্যস্ততা। ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য গুরু মীর মনিরুজ্জামান কে ঢাকায় প্রেরণ করতে বলছেন। মনটাকে বুঝাতে পারলাম না। আবার গুরুর ফোনে কল। এবার রিসিভ হলো। কিন্তু গুরু ধরবেন না তাকি জানতাম? ভাবি রিসিভ করে বলল,সোহেল ভাই আপনার ভাইয়ের জন্য দোয়া করেন। তার অবস্থা ভালো নয়। সংক্ষেপে আরও জানতে চেস্টা করলাম গুরুর অসুস্থতা সম্পর্কে। বিপদের সময় এই প্রান্ত থেকে আমার ফোনে কথা বলা ভাবিকে বিরক্তিকর মনে হচ্ছে। তবুও কি করব মনকে তো মানাতে পারছি না। এই কয়েক মাস আগেও যে ভালো মানুষটিকে তার ব্যবসায়ী ক কার্যালয় দেখে এলাম। একসাথে কত আশা প্রত্যাশার কথা বলে এলাম। পাশের দোকান থেকে আনা চা খেলাম। তিনি যে মৃত্যুপথের যাত্রী হতে চলেছেন তাতো একটি বারের জন্যও মনের ভেতর কল্পনাতেও আসে নি।

গুরুর অসুস্থতার জন্য জুমার নামাজ পড়তে গিয়ে সৃস্টিকর্তার নিকট দোয়া চাইলাম। বাসায় ফিরে ভাত আর খেলাম না। আবার গুরুর নম্বরে ফোন দিলাম। ভাবিকে জানতে চাইলাম এখন কি অবস্থা? ভাইয়াকি কথা বলতে পারছেন? ভাবি বলল না,ভালো নয়। বুকে ব্যাথাটি বেরেছে। যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন গুরু,আমি একটু আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি। ভাবিকে অনুরোধ করলাম। আমার কলটি যেনো রিসিভ করেন। আমিতো দুরে। না পারছি দেখতে,না পারছি গুরুর বিপদের দিনে পাশে থেকে একটু সেবা করতে। গুরু আমার চলে যাচ্ছেন এটাও তো দুর থেকে অনুভব করতে পারছি না।

তার সুস্থতার জন্য সকলের দোয়া চেয়েএকটি লেখা পোস্ট করার জন্য টাইপ শুরু করলাম। কিছুতেই যেনো সে লেখাটি সমাপ্ত হচ্ছেনা। তাহলে কি মনের আবেগটি বুঝতে পেরেছিলো যে,আজই আমার সাংবাদিক জগতের কালো অধ্যায় রচিত হতে যাচ্ছে? বাস্তব জীবনের এক একটি বিষশন লিখতে লিখতে আমি ক্লান্ত। আমার দেহ দুরে। মনেহচ্ছে লিখছি সেই চিরোচেনা পত্রিকা অফিসে। আমার লেখার একপর্যায় আবার কল দিলাম। গুরু এবার ঢাকার উন্নত চিকিৎসার জন্য পথে। ভাবি বলল আমরা ভাঙ্গা নামক স্থানে রয়েছি। আপনার ভাই’ অবস্থা বেশি ভালো নয়। বমি করছে। আমি কি আহম্মক? গুরুর বমি করার শব্দ আর আর্তনাদ এবার শুনেও ভাবিকে বললাম,ভাইয়ার সাথে একটু কথা বলতে পারব? ভাবি বলল, বমি কমলে তারপর দেখি বলতে পারবেন কি না! ভাবি তখনও স্বাভাবিক মনোবল নিয়ে এ্যম্বুলেন্সে। তবে সেই এ্যাম্বুলেন্সে অক্্রিজেন ছিলো না। ভাবি এটাই বলেছিলেন। থাকলে ভাইয়ার অনেক উপকার হত।

ফোন কেটে দিয়ে আবার লেখা শুরু করলাম। বিকেল তখন চারটার মত। পোস্ট দিলাম গুরুর জন্য দোয়া প্রার্থনা করা লেখাটি। এই লেখাটিই যে শেষ প্রার্থনা মুলক লেখা তখনও ভেবেছিলাম?

ফেসবুকের পাতায় হঠাৎ সাংবাদিক জিয়া শাহিন এর স্টাটাসে আমার সব শেষ হয়ে গেলো। সাংবাদিক মীর মনিরুজ্জামান আর নেই। এই স্টাটাসে হ্রদয়ে কম্পন শুরু হলো। ফোন দিলাম গুরুর নম্বরে। এবার ভাবি আর কল ধরলেন না। কেনোইবা ধরবেন? একজন নারীর কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে মুল্যবান সম্পদ তার স্বামীর অকাল প্রস্থান। এর চেয়েও কি করুণ সময় আর আছে? শাহিন সুমনকে ফোন দিলাম। কাঁদতে কাঁদতে বলল মামা আর নেই।

জীবনের কঠিন বাস্তবতায় বিপদের সম্মখিন আমি। কি বলব কাকে,কেইবা আমায় একটু শান্তনা দিবে। সারাদিন অনাহারে থাকা আমি এবার কোলাহলপুর্ণ শহরের রাস্তায় পাগলেরর মত ঘুরছি। চোখের জ্বল আটকাতেই রাস্তায় এদিক সেদিক তাকিয়ে নিজেকে কন্ট্রোল করতে চাইলাম। কই পারছিলাম না। গুরুর সমস্ত পরামর্শ গুলো ভেসে আসছে। আর মনেকরিয়ে দিচ্ছে সোহেল আহমেদ তোমার জীবনের স্বপ্নদ্রষ্টার বিদায় হয়েছে। মেনে নাও,মেনে নাও!!!!

দৈনিক বরিশাল ২৪

যার চলে যায় সেই বোঝে হায় বিচ্ছেদের কি যন্ত্রণা

শনিবার, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৩ ১১:৪১ অপরাহ্ণ

সোহেল আহমেদঃ সেদিন শুক্রবার। ২৪ ফেব্রুয়ারির কালো অধ্যায়ের সুচনা! সকাল ১১ টার দিকে। ফেসবুক অন করতেই সহকর্মী শাহিন সুমনের স্টাটাস ভেসে উঠল মোবাইলের স্কিনে! সাংবাদিক মীর মনিরুজ্জামান অসুস্থ। ফেসবুক ছেড়ে গুরুর ব্যবহৃত ফোনে কল দিলাম। রিং বাজছে, ওই প্রান্ত থেকে কল রিসিভ হচ্ছে না। অসুস্থতার সংবাদ শুনে যতটা খারাপ লেগেছে কল রিসিভ না হওয়াতে তারচেয়ে বেশি খারাপ লাগা শুরু হলো।

শাহিনের নিকট ফোন করে জানলাম হাসপাতালে সবারই ব্যস্ততা। ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য গুরু মীর মনিরুজ্জামান কে ঢাকায় প্রেরণ করতে বলছেন। মনটাকে বুঝাতে পারলাম না। আবার গুরুর ফোনে কল। এবার রিসিভ হলো। কিন্তু গুরু ধরবেন না তাকি জানতাম? ভাবি রিসিভ করে বলল,সোহেল ভাই আপনার ভাইয়ের জন্য দোয়া করেন। তার অবস্থা ভালো নয়। সংক্ষেপে আরও জানতে চেস্টা করলাম গুরুর অসুস্থতা সম্পর্কে। বিপদের সময় এই প্রান্ত থেকে আমার ফোনে কথা বলা ভাবিকে বিরক্তিকর মনে হচ্ছে। তবুও কি করব মনকে তো মানাতে পারছি না। এই কয়েক মাস আগেও যে ভালো মানুষটিকে তার ব্যবসায়ী ক কার্যালয় দেখে এলাম। একসাথে কত আশা প্রত্যাশার কথা বলে এলাম। পাশের দোকান থেকে আনা চা খেলাম। তিনি যে মৃত্যুপথের যাত্রী হতে চলেছেন তাতো একটি বারের জন্যও মনের ভেতর কল্পনাতেও আসে নি।

গুরুর অসুস্থতার জন্য জুমার নামাজ পড়তে গিয়ে সৃস্টিকর্তার নিকট দোয়া চাইলাম। বাসায় ফিরে ভাত আর খেলাম না। আবার গুরুর নম্বরে ফোন দিলাম। ভাবিকে জানতে চাইলাম এখন কি অবস্থা? ভাইয়াকি কথা বলতে পারছেন? ভাবি বলল না,ভালো নয়। বুকে ব্যাথাটি বেরেছে। যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন গুরু,আমি একটু আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি। ভাবিকে অনুরোধ করলাম। আমার কলটি যেনো রিসিভ করেন। আমিতো দুরে। না পারছি দেখতে,না পারছি গুরুর বিপদের দিনে পাশে থেকে একটু সেবা করতে। গুরু আমার চলে যাচ্ছেন এটাও তো দুর থেকে অনুভব করতে পারছি না।

তার সুস্থতার জন্য সকলের দোয়া চেয়েএকটি লেখা পোস্ট করার জন্য টাইপ শুরু করলাম। কিছুতেই যেনো সে লেখাটি সমাপ্ত হচ্ছেনা। তাহলে কি মনের আবেগটি বুঝতে পেরেছিলো যে,আজই আমার সাংবাদিক জগতের কালো অধ্যায় রচিত হতে যাচ্ছে? বাস্তব জীবনের এক একটি বিষশন লিখতে লিখতে আমি ক্লান্ত। আমার দেহ দুরে। মনেহচ্ছে লিখছি সেই চিরোচেনা পত্রিকা অফিসে। আমার লেখার একপর্যায় আবার কল দিলাম। গুরু এবার ঢাকার উন্নত চিকিৎসার জন্য পথে। ভাবি বলল আমরা ভাঙ্গা নামক স্থানে রয়েছি। আপনার ভাই’ অবস্থা বেশি ভালো নয়। বমি করছে। আমি কি আহম্মক? গুরুর বমি করার শব্দ আর আর্তনাদ এবার শুনেও ভাবিকে বললাম,ভাইয়ার সাথে একটু কথা বলতে পারব? ভাবি বলল, বমি কমলে তারপর দেখি বলতে পারবেন কি না! ভাবি তখনও স্বাভাবিক মনোবল নিয়ে এ্যম্বুলেন্সে। তবে সেই এ্যাম্বুলেন্সে অক্্রিজেন ছিলো না। ভাবি এটাই বলেছিলেন। থাকলে ভাইয়ার অনেক উপকার হত।

ফোন কেটে দিয়ে আবার লেখা শুরু করলাম। বিকেল তখন চারটার মত। পোস্ট দিলাম গুরুর জন্য দোয়া প্রার্থনা করা লেখাটি। এই লেখাটিই যে শেষ প্রার্থনা মুলক লেখা তখনও ভেবেছিলাম?

ফেসবুকের পাতায় হঠাৎ সাংবাদিক জিয়া শাহিন এর স্টাটাসে আমার সব শেষ হয়ে গেলো। সাংবাদিক মীর মনিরুজ্জামান আর নেই। এই স্টাটাসে হ্রদয়ে কম্পন শুরু হলো। ফোন দিলাম গুরুর নম্বরে। এবার ভাবি আর কল ধরলেন না। কেনোইবা ধরবেন? একজন নারীর কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে মুল্যবান সম্পদ তার স্বামীর অকাল প্রস্থান। এর চেয়েও কি করুণ সময় আর আছে? শাহিন সুমনকে ফোন দিলাম। কাঁদতে কাঁদতে বলল মামা আর নেই।

জীবনের কঠিন বাস্তবতায় বিপদের সম্মখিন আমি। কি বলব কাকে,কেইবা আমায় একটু শান্তনা দিবে। সারাদিন অনাহারে থাকা আমি এবার কোলাহলপুর্ণ শহরের রাস্তায় পাগলেরর মত ঘুরছি। চোখের জ্বল আটকাতেই রাস্তায় এদিক সেদিক তাকিয়ে নিজেকে কন্ট্রোল করতে চাইলাম। কই পারছিলাম না। গুরুর সমস্ত পরামর্শ গুলো ভেসে আসছে। আর মনেকরিয়ে দিচ্ছে সোহেল আহমেদ তোমার জীবনের স্বপ্নদ্রষ্টার বিদায় হয়েছে। মেনে নাও,মেনে নাও!!!!

প্রকাশক: মোসাম্মাৎ মনোয়ারা বেগম। সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: ইঞ্জিনিয়ার জিহাদ রানা। সম্পাদক : শামিম আহমেদ যুগ্ন-সম্পাদক : মো:মনিরুজ্জামান। প্রধান উপদেষ্টা: মোসাম্মৎ তাহমিনা খান বার্তা সম্পাদক : মো: শহিদুল ইসলাম ।
প্রধান কার্যালয় : রশিদ প্লাজা,৪র্থ তলা,সদর রোড,বরিশাল।
সম্পাদক: 01711970223 বার্তা বিভাগ: 01764- 631157
ইমেল: sohelahamed2447@gmail.com
  সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সক্রিয় ট্রাফিক পুলিশ   “সাংবাদিকদের সক্রিয় রাজনীতিতে না আসাই ভাল”–মজিবর রহমান সরোয়ার   পদোন্নতি পেয়ে সচিব হলেন বরিশালের কৃতিসন্তান এ এইচ এম সফিকুজ্জামান   বানভাসীদের সহযোগিতায় এক দিনের বেতন দেয়ার ঘোষণা দিল ইয়কোহামা লেভেলস এন্ড প্রিন্টিং (বিডি) লিমিটেড   বরিশালে শ্রমীক লীগ নেতার ইসলামী আন্দোলনে যোগদান   বন্যার্তদের সহায়তায় এগিয়ে এরো চট্টগ্রামের ধানসিঁড়ি আদর্শ কেজি স্কুল   বন্যার্তদের সহায়তায় এগিয়ে এলো ধানসিঁড়ি আদর্শ কেজি স্কুল   বন্যাদূর্গতদের সহায়তায় এগিয়ে এলেন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত   খাগড়াছড়িতে বন্যা কবলিত অসহায় মানুষের পাশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী   বোট নিয়ে চট্টগ্রামের নিউমুরিং থেকে উদ্ধার টিম নোয়াখালীতে পৌছাল   বরিশালে দুর্গোৎসবের টাকা আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বন্যার্তদের জন্য দান   বিভিন্ন জেলায় বন্যার্তদের উদ্ধার কার্যক্রমে সেনা মোতায়েন   চাঁদপাশা হাইস্কুল ও কলেজে আধুনিক মাল্টিমিডিয়া ক্লাস উদ্বোধন   বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দলনে নিহত শান্ত ও রাকিবের কবর জিয়ারত করলেন বরিশাল জাপার নেতৃবৃন্দ   রাস্ট্র সংস্কারে প্রশাসনকে সহায়তা করতে হবেঃ ইকবাল হোসেন তাপস   রাস্তায় লাঠি হাতে ছাত্রলীগকে মানুষ পছন্দ করেনি, অন্য কাউকেও দেখতে চায় নাঃ তাপস   বাবা মুুক্তিযোদ্ধা না হলেও মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি নিয়েছেন ডিবি হারুন   সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ পদক্ষেপ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা   জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন নিয়ে সুখবর   অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অভিনন্দন জানালো আওয়ামী লীগ