নড়াইলে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা,সাংবাদিক মহলে ক্ষোভ
নড়াইল প্রতিনিধি: নড়াইলের লোহাগড়ায় উপজেলা পল্লী উন্নয়ন (বিআরডিবি) কর্মকর্তার অনিয়ম-দূর্নীতি ও নারী কেলেংকারী ধামাচাপা দিতে দুজন সাংবাদিকের নামে কথিত মারপিট ও চঁাদাবাজির মামলা দায়ের করেছেন। দায়েরকৃত মামলার আসামীরা হলেন দৈনিক আমার সংবাদ পত্রিকার লোহাগড়া প্রতিনিধি মোঃ রইচ উদ্দিন টিপু এবং এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি টি,এম জহিরুল ইসলাম (জহির ঠাকুর)।
মামলার বাদী ও এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (২১জুলাই) সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা জ্যোতি প্রকাশ মল্লিকের অফিসে দৈনিক আমার সংবাদ পত্রিকার লোহাগড়া প্রতিনিধি মোঃ রইচ উদ্দিন টিপু (৫০) অনাধিকার প্রবেশ করে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে ওই কর্মকর্তার নিকট ১০ হাজার টাকা চঁাদা দাবি করেন।
এ সময় ওই কর্মকর্তা সাংবাদিকের দাবীকৃত চঁাদার বিষয়ে কোন কথা বলেন নাই। প্রায় ১৫ মিনিট অবস্থান করে সাংবাদিক টিপু অফিস থেকে বের হয়ে যান। অফিস শেষে ওই কর্মকর্তা উপজেলা চত্বরে বিআরডিবির আওতাধীন জোড়া বাড়ি কোয়ার্টারের নিজ বাসায় চলে যান।
এরপর বিকাল ৪ টার দিকে সাংবাদিক মোঃ রইচ উদ্দিন টিপু ও জহির ঠাকুর ওই কোয়ার্টারে অনাধিকার প্রবেশ করেন এবং কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই কর্মকর্তাকে বেধড়ক মারপিট করেন বলে অভিযোগ । পরে উপস্থিত লোকজন আহত কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ীতে করে নিয়ে লোহাগড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা বাদী হয়ে ওই দুজন সাংবাদিকের নামে লোহাগড়া থানায় বুধবার একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-২০। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সাংবাদিক রইচ উদ্দিন টিপু ও জহির ঠাকুর তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিআরডিবির কর্মকর্তা নিজের অনিয়ম-দূর্নীতি ও নারী কেলেংকারী ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন।
উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা জ্যোতি প্রকাশ মল্লিক অনিয়ম-দূর্নীতি ও নারী কেলেংকারীর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাদের কাছে প্রমাণ থাকলে দেখাক। অযথা হয়রানি করছে। লোহাগড়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শেখ বদরুল আলম টিটোসহ স্থানীয় সূত্র জানায়, ঘটনার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজ অফিসে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা, জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তাসহ সাংবাদিকদের নিয়ে বিষয়টির সূরাহা করতে বসেন।
বিভিন্ন কথাবার্তার এক পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাংবাদিকসহ নেতৃবৃন্দদের জানান, উপজেলা চেয়ারম্যান সাহেব বুধবার বিষয়টির সমাধান করতে চেয়েছেন। একথা শুনে সাংবাদিকরা চলে আসেন। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজে থানায় অন্য অফিসারদের নিয়ে উপস্থিত হয়ে এজাহার দেন। লোহাগড়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি এ্যাডঃ আব্দুস ছালাম খান সহ অন্য সাংবাদিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বললেন একটা,আর করলেন আরেকটা।
সাংবাদিকদের নামে মামলা দায়েরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ আশিকুর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুকুল কুমার মৈত্র জানান, উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করেই এজাহার দেয়া হয়েছে।