বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়া অসুস্থ লুসি হল্টের শয্যাপাশে জেলা প্রশাসক
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়া ব্রিটিশ নাগরিক অসুস্থ সিস্টার লুসি হল্টকে দেখতে শেবাচিম হাসপাতালে বরিশাল জেলা প্রশাসক মোঃ জসীমউদ্দিন হায়দার।
আজ শনিবার (২০ নভেম্বর) দুপুর ১ টায় শের-ই-বাংলা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে অসুস্থ ভর্তি লুসির সুস্থতা কামনা করে ফুল ও ফল নিয়ে শুভেচ্ছা জানান জেলা প্রশাসক।
পাশাপাশি তার চিকিৎসা জন্য নগদ অর্থ সহায়তা ও চিকিৎসকের সাথে তার চিকিৎসার বিষয়ে খোঁজ খবর নেন তিনি।
গত ১৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে সিস্টার লুসি অক্সফোর্ড মিশনে তাঁর নিবাসে অসুস্থ হয়ে পড়লে মিশনের চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালের চিকিৎসকেরা সিস্টার লুসি হল্টের শারীরিক পরীক্ষা–নিরীক্ষার পর জানান, তাঁর রক্তচাপ মাত্রাতিরিক্ত এবং এ কারণে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল সীমিত হয়ে একটি ছোট স্ট্রোক হয়েছে।
পরে তাঁকে হাসপাতালের নারী মেডিসিন ওয়ার্ডের পঞ্চম তলার একটি কেবিনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া লুসি হল্টের বয়স আগামী ১৬ ডিসেম্বর ৯২ বছর পূরণ হবে।
তাঁর পুরো নাম লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্ট। তিনি স্বদেশ, স্বজনদের ভুলে বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের মায়ায় এখানেই ৬০ বছর ধরে রয়েছেন। তাঁর অন্তিম ইচ্ছা, চিরকালের মতো মিশে যেতে চান বাংলার প্রকৃতিতে।
সিস্টার লুচি হল্টের প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ গণভবনে ডেকে নিয়ে তাঁর হাতে তুলে দেন এ দেশের নাগরিকত্ব।তিনি বাংলা বলেন, বাঙালিদের মতো শাড়ি পরেন, বাঙালিদের সেবা করে যাচ্ছেন।
সিস্টার লুসির জন্ম ১৯৩০ সালের ১৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের সেন্ট হ্যালেন্সে। বাবা জন হল্ট ও মা ফ্রান্সিস হল্ট। দুই বোনের মধ্যে ছোট লুসি। তাঁর বড় বোন রুৎ অ্যান রেভা ফেলটন স্বামী ও তিন ছেলে নিয়ে ব্রিটেনেই বসবাস করেন।
লুসি ১৯৪৮ সালে উচ্চমাধ্যমিক (দ্বাদশ) পাস করেন। তিনি ১৯৬০ সালে প্রথম বাংলাদেশে আসেন। যোগ দেন বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনে। এখানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের পড়াতেন। এরপর আর দেশে ফিরে যাননি।
৫৭ বছর ধরে বরিশাল ছাড়াও কাজ করেছেন যশোর, খুলনা, নওগাঁ, ঢাকা ও গোপালগঞ্জে। আমরা তার সুস্থতা কামনা করি।