দক্ষিণাঞ্চলের সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে কয়েক লাখ মানুষ
শামীম আহমেদ, বরিশালঃ প্রবল শক্তি নিয়ে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’। তাই বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। শনিবার বিকেলের মধ্যে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের দুই হাজার ১১৪টি সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে কয়েক লাখ মানুষ। যারা আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে চাচ্ছেনা তাদের জোর করে নেয়া হচ্ছে।
শনিবার সন্ধ্যায় এ তথ্য জানিয়েছেন বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। অপরদিকে জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, শনিবার বিকেল পৌনে পাঁচটার মধ্যে জেলার ২৩২টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় অর্ধলাখ মানুষ নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়েছেন।
সূত্রমতে, বরিশালের বিভিন্ন অঞ্চলে নিরাপদ আশ্রয়ে জন্য সাইক্লোন শেল্টার সেন্টারসহ নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে যেতে শুরু করেছে মানুষ। যাদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়া নিয়ে অনীহা রয়েছে তাদের বুঝিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানোসহ সতর্কতামূলক প্রচারণা চালাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ সহ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা।
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) বরিশালের আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আব্দুর রশীদ জানান, শনিবার দুপুর দুইটা পর্যন্ত তার আওতাধীন বরিশাল সদর, পটুয়াখালীর দশমিনা, গলাচিপা, রাঙ্গাবালী, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া ও বাগেরহাটের শরণখোলায় নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে ৩২ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। অন্যান্যদেরও আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার জন্য স্বেচ্ছাসেবকরা মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন।
বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, অনাগ্রহ থাকলেও জীবন ও নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সাধারণ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হচ্ছে। তাদের সম্পদের নিরাপত্তা যতোটা সম্ভব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেওয়ার চেষ্টা করবে। তিনি আরও জানান, ভোলা জেলার চরাঞ্চলের প্রায় আড়াই লাখ মানুষ চরম দুর্যোগ ঝুঁকিতে রয়েছেন।
এদের জন্য ৬৬৮টি সাইক্লোণ শেল্টার খোলা রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও খুলে দেওয়া হয়েছে।
মানুষজন নিরাপদে আসতে শুরু করেছেন। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে পাঁচ লাখ মানুষকে আশ্রয় দেয়া
যাবে। ইতোমধ্যে দুইলাখ মানুষ আশ্রয়ণ কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে।
শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে সদরের ইলিশা ইউনিয়নের জংসন এলাকার মৌলভীর হাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যায় কাম সাইক্লোণ শেল্টারের আশ্রয় নেয়াদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
অপরদিকে ঘুর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবেলায় জরুরি সভার জন্য শনিবার দুপুরে জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলায় গিয়ে ওই উপজেলার নির্বাহী অফিসার বিপুল চন্দ্র দাস ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাতিমা আজরীন তন্বীকে অফিসে না পেয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে ফিরে গেছেন মন্ত্রী আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি।
১০নম্বর মহাবিপদ সতর্কতা সংকেত ডাকা ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে সরকারী সকল কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হলেও আগৈলঝাড়ায় ইউএনও এবং এসিল্যান্ড নিজ কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।