রোববার থেকে বেনাপোল পেট্রাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য শুরু
ফারুক হাসান, বেনাপোল প্রতিনিধি: টানা ৭৫ দিন বন্ধ থাকার পর শর্ত সাপেক্ষে আগামীকাল রবিবার সকালথেকে ১৪ই জুন পর্যন্ত বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানিবাণিজ্য শুরু হচ্ছে। এ সংবাদের ভিত্তিতে বন্দর এলাকার দু’পাশে লক্ষাধিকমানুষ যেন প্রান ফিরে পেয়েছে।রুটি রুজি হারানোর ভয়ে দুই বন্দরএলাকায় প্রায় ২০হাজার পরিবার সর্বদা আতংকিত ছিল।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সীমান্তের জিরো পয়েন্ট এলাকায় দুই দেশেরপ্রশাসন ও ব্যবসায়ী নেতাদের মাঝে বৈঠক অনুষ্টিত হয়। ভারতেরবারাসাতের জেলা ম্যাসিট্রেট স্বাক্ষরিত এক পত্রে জানানো হয়েছে শর্তসাপেক্ষে আগামী ১৪ইজুন পর্যন্ত দু’দেশের মধ্যে আমদানি রফতানি চালু থাকবে।
এ জন্য ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে ১শ জন ট্রাক চালককেপ্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। শুধু মাত্র ওই ড্রাইভাররাপন্যবাহী ট্রাক নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। করোনার সংক্রমণ নিয়ে আশঙ্কা থাকায় সীমান্ত অতিক্রমের আগেই গাড়ি চালকদের শারীরিকঅবস্থার পরীক্ষা করা হবে।
এছাড়াও ট্রাকগুলো উভয় দেশে স্যানিটাইজ করাহবে। ফেরার সময়ও চালকদের শারীরিক পরীক্ষা করা হবে।বাধ্যতামূলক ট্রাকড্রাইভাদের পিপিই পরিধান করতে হবে। সেই সাথে দ্রæত পণ্য খালাসকরে দিনে দিনে ট্রাকগুলো ফিরে যাবে।
করোনাভাইরাসের কারণে গত ২২ মার্চ থেকে বেনাপোল-পেট্রাপোলস্থলবন্দর দিয়ে দু‘দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। ভারতেরকেন্দ্রীয় সরকার গত ২৪ এপ্রিল আমদানি-রপ্তানি চালুর অনুমোদন থাকলেও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অনুমতি না থাকায় দীর্ঘদিন সড়ক পথে বন্ধ ছিল ভারত-বাংলাদেশের বাণিজ্য।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বারবার চিঠিদিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে স্থলবন্দর দিয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য শুরুর
অনুমতি দেয়ার অনুরোধ করলেও রাজ্য তার সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। এছাড়াওবনগাঁর সিন্ডিকেটের কারণেও বাণিজ্যে জটিলতা দেখা দেয়।
ইতিমধ্যে রেলওয়ের মাধ্যমে পণ্য আমদানির অনুমতি দেয়ায় স্থলপথে আমদানি-রপ্তানিরওপর চাপ সৃষ্টি করে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর এলাকার শ্রমিকসহ ট্রাকমালিক ও চালকরা। বাধ্য হয়ে তড়িঘড়ি করে বৈঠকে বসে আমদানি- রপ্তানি চালু করতে রাজি হয় ভারতের প্রশাসনসহ বনগাঁ সিন্ডিকেট।বৈঠকে ভারতের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী,বনগাঁ পৌর সভার মেয়র শংকর আঢ্য ডাকুসহ কাস্টমস, পুলিশ, বিএসএফ ও পেট্রাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস, ট্রাক মালিক সমিতি ওশ্রমিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে বাংলাদেশের পক্ষেবেনাপোল বন্দর, কাস্টমস, বিজিবি ও সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশন, সিএন্ডএফ স্টাফ এসোসিয়েশন ও ট্রান্সপোর্ট মালিকসমিতির নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টের সভাপতি মফিজুর রহমানসজন জানান, করোনার কারণে দীর্ঘ আড়াই মাস ধরে এ বন্দর দিয়েআমদানি-রপ্তানি বন্ধ।
করোনার ক্রান্তি সময়ে স্বাস্থ্যবিধিসহ অন্যান্য নির্দেশনা মেনে রবিবার থেকে আমদানি-রপ্তানি শুরু করতে দু‘দেশেরনেতৃবৃন্দ একমত পোষণ করেছেন। প্রাথমিক পর্যায়ে আমদানি-রপ্তানির জন্য ৫০টি পণ্যবাহী ট্রাক দিতে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা সম্মতিদিয়েছেন।
পরে পরিস্থিতি দেখে ট্রাকের সংখ্যা বাড়ানো হবে।এদিকে বেনাপোল স্থল বন্দরের উপ পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদারজানান, ভারতীয় পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষের চিঠি পেয়েছি।সমস্তধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে দু’দেশের মধ্যে আগামীকাল রবিবার সকালথেকে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালু হবে। বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকেসব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এছাড়া ভারতীয় চালককরা যাতে বন্দরেরবাইরে যেতে না পারে সে ব্যাপারে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করাহয়েছে।