বরিশালে অনলাইন কেনাকাটায় বেড়েছে জনপ্রিয়তা তৈরী হচ্ছে নতুন উদ্যোক্তা
বিশেষ প্রতিনিধি: নভেল করোনাভাইরাস। চীনের উহানে প্রথমে শনাক্ত হওয়া এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের প্রায় সব দেশ ও অঞ্চলে। এতে প্রতিনিয়ত মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর বরিশালেও অব্যহত রয়েছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা।অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন করোনাভাইরাসে। অনেকের আবার ঝুঁকি নিয়ে চলতে হচ্ছে বাইরে।
এমন অবস্থায় সবাই রয়েছে স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে। তারপরেও কিন্তু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জরুরী প্রয়োজনে ঔষধ কিংবা নিত্য প্রয়োজনীয় পন্য কিনতে বের হচ্ছেন অনেকেই। তাই বরিশাল নগরবাসীর সেবায় এবার ঘরে ঔষধ পৌঁছে দিচ্ছেন “ঔষধপত্র”। ইতিমধ্যে অনলাইন এই সার্ভিসটি ব্যাপক সাড়া ফেলেছে বরিশালে। প্রতিদিন অসংখ্য অর্ডার আসছে তাদের ।
মুদিমনোহরি পণ্য থেকে শুরু করে ললনার মেকআপসহ ঔষধপত্রও অনলাইনের মাধ্যমে কিনছে। আর এতে গড়ে উঠছে তরুন অনলাইন উদ্যোক্তা। ব্যবসায়ীরা তাদের নিজ নিজ চাহিদা অনুযায়ী সফটওয়্যার তৈরী করে সোস্যাল মিডিয়ায় তাদের পরিচিতি ছড়িয়ে দিচ্ছে ক্রেতা আকর্ষণের জন্য। যেকারণে ক্রেতারা বাসায় থেকেই পছন্দমতো পণ্য অর্ডার করতে পারেন।
দোকানীরা অর্ডার পাওয়ার পর সহজেই ক্রেতাদের বাসায় পৌঁছে দিচ্ছে ডেলিভারি ম্যানদের মাধ্যমে। ইতিমধ্যে বরিশাল নগরীতে ঔষধপত্র নামে একটি এ্যাপস চালু হয়েছে করোনাকালীন এসময়ে। এরপর অনলাইন ফার্মেসী নামেও একটি অনলাইন বাজার বের হয়েছে।
ফলমূলেরও ফেইসবুক পেইজ রয়েছে একাধিক। পোশাকের অনলাইন বাজারের মধ্যে নগরীর চকবাজারস্ত স্বদেশি পোশাকের দোকানের অনলাইন মার্কেটিং শুরু হয়েছে। এছাড়াও সুরক্ষা সামগ্রী যেমন- মাস্ক, স্যাভলন, স্যানিটাইজারসহ ¯েপ্রও অর্ডার নেয়া হচ্ছে অনলাইনের মাধ্যমে।
এব্যাপারে স্ব-দেশীর স্বত্বাধিকারী গৌতম সাহা বলেন, করোনার মধ্যে মানুষ দোকানমুখী না হলেও তাদের চাহিদা থেমে নেই সেক্ষেত্রে ক্রেতারা আমাদের ওয়েবপেইজ ভিজিট করে সুবিধামতো অর্ডার দিতে পারছেন। আর আমরা তা ডেলিভারি ম্যানের মাধ্যমে বাসায় পৌছে দিচ্ছি। আর এতে সামাজিক দুরত্বও নিশ্চিত হচ্ছে।
একাধিক অনলাইন ফার্মেসী বাজার মালিক বলেন, ঔষধের মতো গুরত্বপূর্ণ উপাদান মানুষ এখন অনলাইনে কিনতে বাধ্য হচ্ছে, কারণ সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে চাইছে নিজকে নিরাপদ রাখার জন্য। লকডাউনের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত আমরা অনলাইনে ক্রেতাদের সাড়া পাচ্ছি। ক্রেতারা ঔষধের প্যাকেটের ছবি তুলে আমাদের পেইজে দিতে পারছে এতে আমরাও নিশ্চিন্তে অর্ডারটাও নিতে পারছি।
এছাড়া অনেকে প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলে চাহিদা মতো ওষুধ অর্ডার করতে পারছে। তবে স্বাভাবিক দামের চেয়ে একটু বেশি রাখতে হচ্ছে কারণ ডেলিভারিম্যান দিয়ে বাসায় পৌঁছে দিতে হচ্ছে। এদিকে ব্যবসায়ীরা তাদের চাহিদা মোতাবেক অনলাইন মার্কেট তৈরী করতে সফটওয়্যার ডেভেলপারদের দিকে ছুটছে। এতে কম্পিউটার প্রকৌশলীদেরও ব্যস্ততা বেড়েছে।
জানতে চাইলে বরিশাল নগরের ইঞ্জিনিয়ার বিডির স্বত্বাধিকারী জিহাদ রানা এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রায় দুই হাজার অনলাইন উদ্যোক্তার আইটি সার্পোট দিচ্ছি। এরমধ্যে বরিশাল জেলা প্রশাসনেরও অনেক কাজ আমরা করেছি। এধরণের কাজ করতে গিয়ে আমাদের ব্যস্ততাও একটু বেড়েছে। কারণ করোনার মধ্যে মানুষ দুর থেকেই সার্ভিসটা পেতে চায় কোন প্রকার সংস্পর্শে না এসেই আর এতে অনলাইনের কোন বিকল্প নেই। অপরদিকে অনলাইনে চিকিৎকদের চেম্বারও রুপান্তরিত হচ্ছে।
এর সঙ্গে ওই পণ্যটি ক্রেতার হাত পর্যন্ত পৌঁছাতে কয়েকটি ধাপে নতুন কর্মী তৈরি হচ্ছে। যে ডেলিভারি দেয়, যে পরিবহন সেটা নিয়ে যায় এসব জায়গায়ও কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা হচ্ছে।” তবে তিনি মনে করেন এক্ষেত্রে প্রযুক্তি নির্ভর নতুন এসব উদ্যোগগুলোকে নিষ্ঠার সঙ্গে পণ্যের মান এবং যথাসময়ে অর্ডার ডেলিভারি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি ছোট উদ্যোক্তাদের ব্যবসা বাড়ানোর ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে হবে।
অনলাইনে তরুন উদ্যোক্তা তৈরী হওয়ার মধ্য দিয়ে কর্মক্ষেত্রও গড়ে ওঠার ব্যাপারে বরিশাল জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান বলেন, সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে গেলে অবশ্যই অনলাইনকে নির্ভর করতে হয়। আর এ লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে অনেক আগে থেকেই তরুন অনলাইন উদ্যোক্তা তৈরীর জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে।
বরিশালের এক গৃহিনী খাদিজা আক্তার জানান, প্রথমে আমি বিশ্বাস ই করিনি বরিশালেও এত সুন্দর পরিপাটি ভাবে অনলাইনের মাধ্যমে ঔষধ কেনা যায়, মেসেজ দিয়া ঔষধের নাম জানানোর ১ ঘন্টার মাঝে আমার বাসায় ঔষধ পৌছেদিয়েছেন তাও বাজারের মূল্যেই।
বরিশালের প্রথম এপস ভিত্তিক অনলাইন মেডিসিন হোম ডেলিভারি ‘ঔষধপত্র’ এর ফেইসবুক পেইজঃ https://www.fb.com/OushodhPotro , কিংবা ওয়েবসাইট ও এপস www.oushodhpotro.com ম্যাসেজ দিলেই সকল ধরনের ঔষধপত্র বাসায় পৌঁছে দেয়া হয় দ্রুততার সাথে । নিত্য প্রয়োজনিয় সকল ঔষধের সাথে, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে মাক্স, হান্ডগ্লোভস, হ্যান্ড স্যানেটাইজারও এখানে সুলভ মুল্যে পাওয়া যায়।
এমন সেবা বরিশাল বাসিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে আধুনিক সেবার এক অন্য মাত্রায় ও ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল পাবে বলে আসা করছেন বরিশালের স্থানিয়রা।