যশোরের শার্শায় পদ্ম ফুলের চাষ করে সিরাজুল ইসলামের ভাগ্য বদল
ফারুক হাসান, বেনাপোল প্রতিনিধি : যশোরের শার্শা উপজেলার বেড়ী নারায়নপুর গ্রামে শুরু হয়েছে
অপরুপ সৈন্দর্যের প্রতিক পদ্ম ফুলের চাষ। উপজেলার বেড়ী-নারায়নপুর গ্রামের আবদুল বারিক ওরফে ফুল বারিকের ছেলে সিরাজুল ইসলাম নামে এক চাষী তার দীর্ঘ দুই বছরের চেষ্টায় একটি মাত্র চারা বীজ দিয়ে আজ তিনি চার বিঘা জলাকারে ফুটিয়ে তুলেছেন পদ্ম ফুলের বিশালাকার লিলাভুমী। তবে বর্তমানে মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন মলিন হতে চলেছে তার।
পদ্ম ফুল গ্রামবাংলার মানুষের কাছে অতি পরিচিত একটি ফুল। এক সময় বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি গ্রামের নদ নদী জলাশয়ে আপনা- আপনি বেড়ে উঠতো মনোমুগ্ধকর নয়নাভিরাম সৈন্দর্যের বাহক এই পদ্ম ফুল। কালের বিবর্তনে জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তনে হারিয়ে গেছে পদ্ম ফুলের সৈন্দর্যের লিলাভুমি। কিন্তু বর্তমানে কদর বাড়তে থাকায় দেশের কোথাও কোথাও এই পদ্ম ফুলের চাষ হতে দেখা গেছে।
তেমনি ভাবে শখের বশে এই পদ্ম ফুলের চাষ শুরু করেছেন সিরাজুল ইসলাম নামে এই সৌখিন চাষী। তিল তিল করে জমতে থাকা স্বপ্ন যখন দানায় পরিপূর্ণ ঠিক সেই সময় দেশে বিদ্দমান করোনা ভাইরাসের নিষ্ঠুরতায় সেই স্বপ্ন আশা চুরমার হয়ে গেছে এক নিমিষেই।
সরেজমিনে পদ্ম ফুলের চাষের বিশালতা উপভোগ করতে গেলে দেখা যায়, চার বিঘা জলাকারে বিছিয়ে আছে হাজার হাজার পদ্ম ফুল। হালকা আভায় মৃদু মৌ মৌ গন্ধে পরিপূর্ণ গোটা জলাকারের কানায় কানায়। কেউ আসছে পদ্ম ফুলের সৈন্দর্য দেখতে কেউবা আসছে শখকরে পদ্ম পাতা ও ফুল কিনত।
এভাবে প্রতিদিন শত শত উৎসুক এলাকাবাসীর পাশাপাশি দুরদুরান্ত থেকে আসা লোকজন ভীড় করছে
সিরাজুলের পদ্ম পাড়ে। পদ্ম ফুল মুলত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে উৎপত্তি এবং এটি ভারতের জাতীয় ফুল। এটি কন্দ জাতীয় ভূ-আশ্রয়ী বহু বর্ষজীবী জলজ উদ্ভিদ। এর বংশ বিস্তার ঘটে কন্দের মাধ্যমে।
পাতা পানির ওপরে ভাসলেও এর কন্দ বা মূল পানির নিচে মাটিতে থাকে। পানির উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে গাছ বৃদ্ধি পেতে থাকে। পাতা বেশ বড়, পুরু, গোলাকার ও রং সবুজ হয়। ফুল ফোটে রাত্রি বেলা এবং ভোর সকাল
থেকে রৌদ্রের প্রখরতা বৃদ্ধির পূর্ব পযন্ত প্রস্ফুটিত থাকে।
জানতে চাইলে পদ্ম ফুলের সফল চাষী সিরাজুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ দুই বছরের চেষ্টায় এখন আমি এ চাষে সফল হয়েছি। একবার এই ফুলের বংশ বৃদ্ধি পেলেই আর পেছনে ফিরে তাকানো লাগেনা। কোন খরচ ছাড়ায় পদ্ম ফুলের চাষ করে এক মৌসুমে লাখ টাকা আয় করা সম্ভব।
এই ফুলের ডাটা, পাতা, ফুল, কুড়ি ও পদ্ম ফলের আলাদা আলাদা চাহিদা রয়েছে। তাই সব মিলিয়ে সফলতার প্রথম মৌসুমেই বেচাকেনা কম হওয়ায় লাভ লোকষানের হিসাব মিলাতে পারছিনা। তবে আশা করছি ফুল মৌসুম থাকতে থাকতে যদি পরিবেশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে তবে কিছুটা হলেও লাভের মুখ দেখতে পারবো।
শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সৌতম কুমার শীল বলেন, দেশে এবং দেশের বাইরে পদ্ম ফুলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ ফুলের চাষ ও ব্যবহার সঠিক ভাবে করতে পারলে অনেকাংশে লাভবান হওয়া সম্ভব। চাষী সিরাজুল ইসলামের সলক প্রকার সহযোগিতা করতে সার্বিক ভাবে সহযোগীতা করছি।