বরগুনায় দুই যুগেও পাকা হয়নি বিদ্যালয়ের ২ কিমি সড়ক
অনলাইন নিউজ: ‘দুই যুগ আগে কহান(কিছু) ইট দেছেলো (দিয়েছিল) রাস্তায়, ছয়মাসের মধ্যেই কাঁদায় নষ্ট হয়ে রাস্তার পাশে নাইম্মা(নেমে) গেছে। বাপেই(বাবা) দেখেনাই ইটের রাস্তা!
আমাগো জীবনও যায় যায় কথা গুলো বলেন, বেতাগী উপজেলার দক্ষিন হোসনাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন বাসিন্দা আলতাফ হোসেন। আরো বলেন, দুই যুগ ২৪ বছর ধরে স্কুলের ছাত্রছাত্রীসহ সবাই কাঁদার মধ্যেই হাঁটি।
বরগুনার বেতাগী উপজেলার জলিশাবাজারের রাসেল স্কায়ার থেকে সরদার বাড়ি স্কুল রোডে যাতায়াতের প্রধান আঞ্চলিক সড়ক চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।
জানা যায়, উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের এ সড়কটি প্রায় দুই যুগ আগে চারশত ফুটের মতো ইট দিয়ে সোলিং করা হয়। তারপর থেকে এখন প্রর্যন্ত একই অবস্থায় রয়েছে। আজ পর্যন্ত কোনো সংস্কার বা মেরামতের ছোঁয়া লাগেনি সড়কটিতে। যার বৃষ্টি হলে দূর্ভোগের আর সীমা থাকে না।
এদিকে চারশত ফুটের ইট সোলিংয়ের সড়কের মধ্যে পুরো সড়কের ইট, সুরকি, বালু উঠে অসংখ্য গর্ত ও খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। সরদার বাড়ি সংলগ্ন হওয়ায় দক্ষিন হোসনাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান সড়কটির নামকরণ দার বাড়ি সড়ক।
এ সড়ক দিয়ে গ্রাম্য যানবাহন ও স্কুল, কলেজ এবং মাদরাসা গামী ছাত্রছাত্রীরা যাতায়াত করে। সড়কের বেহাল দশার কারণে দৈনন্দিন ঘটছে কোনো না কোনো দূর্ঘটনা। বর্ষা মৌশুমে প্রায়ই যান চলাচল বন্ধ থাকে।
বি
দ্যালয়গামী মো. হাসান, আরেফিন, হোসেন , সাথী সহ একাধিক শিক্ষার্থী প্রতিবেদককে বলেন, আমরা এই কাঁদার কারনে প্রাই দিনই স্কুল ফাঁকি দেই।
আরো বলেন, যাদের বাড়ি দূরে তার কেই এই কাঁদার সময় বিদ্যালয়ে আসে না।
অনেকসময় শিক্ষকরাও দেরি করে আসে। অটোরিকশা চালক মো.সুজন, মনির, রুটি ব্যাপারি মো: দিঞ্চু, হুন্ডাচালক মো: মোকলেচ, মিজান, নীরব, মোশারফ ও আলতাফ প্রমুখ ক্ষোভের সাথে জানান, সড়কটির খানাখন্দের কারণে আমাদের যানবাহন চালানো বন্ধ করে দেয়া ছাড়া আর উপায় নেই। জলিশাবাজর হয়ে বেতাগী উপজেলায় যাওয়ার একমাত্র সড়কটির এ অবস্থা কেউ চোখে দেখছে না।
দক্ষিন হোসনাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: নুরুল ইসলাম বলেন, সড়কটি মেরামত করা খুবই জরুরি। ওই অঞ্চল থেকে এ সড়ক দিয়ে আমাদের বিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রছাত্রী আসা-যাওয়া করে।
কিন্তু রাস্তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় নিয়মিত ক্লাসে আসতে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।যার কারনে উপস্থিতির হার একদমই কমে গেছে। অনেকে বছরের শুরুতে এই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করাতেও রাজি হয়না।
স্থানীয় বাসিন্দা ও যুবলীগ নেতা মো. হানিফুর রহমান বলেন, সড়কটি এই অঞ্চলের জনসাধারণের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা কিন্তু দীর্ঘদিনে সংস্কার না হওয়ায় যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাবাসীকে।
বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, রাস্তায় যে কি পরিমান কাঁদা হতে পারে তা এই রাস্তাটি না দেখলে বোঝা যাবে না। রাস্তাটি নির্মান করা না হলে বিদ্যালয়ে পড়ুপড় ছাত্রছাত্রীদের দূর্ভোগের আর সীমা থাকবে না।
এ ব্যাপারে হোসনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সদ্য নির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. খলিলুর রহমান খান বলেন, আশা করি সড়কটির নির্মান কাজ যেকোন প্রল্পের আওতায় শুরু করবো।
ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মো: হোসেন আলী মীর বলেন, সড়কটির ব্যাপারে আমরা অবগত অতিশিগ্রই এর একটা ব্যবস্থা করা হবে।