অর্থসংকটে দেশের কিন্ডারগার্টেন স্কুল, প্রণোদনা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে
মনিরুজ্জামানঃ বিশ্বেরমত বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়া করোনভাইরাসের প্রকপে দিশেহারা জনসাধারণ। একদিকে পেটের তাগিদে কর্মের পিছনে ছুটে চলা অপর দিকে করোনার ভয়ানক থাবা থেকে মানুষের বেঁচে থাকার লড়াইয়ে অবর্তির্ন দেশ। এ অবস্থায় সরকারি বেসরকারিভাবে চলছে মানুষের প্রতি মানুষের সহযোগীতা।
এই ক্লান্তিকালে চরম ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে দেশের অর্থনীতি। থেমে যাচ্ছে মানুষের ভাগ্যের চাঁকা। প্রায় বন্ধ হবার উপক্রম দেখা দিয়েছে বেসরকারি অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টির ফলে দেশের শিল্প কারখানা, চিকিৎসায় ব্যবস্থাসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আর্থিকভাবে সহযোগীতা অব্যহত রয়েছে।
অর্থনীতির কথা বিবেবচনা করে স্বাস্থবিধি মেনে চলাসহ নানা শর্ত আরোপ করে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান চালু করা হলেও সরকারি নির্দেশনায় বন্ধ রয়েছে দেশের ব্যক্তি মালিকানাধীন কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো। ফলে করোনাভাইরাসে সংকটময় মুহুর্তে সবচেয়ে বেশি অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো। অধিকাংশ স্কুলই গড়ে উঠেছে ভাড়া বাসায়।
এমনই একটি সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের ইপিজেট থানাধীন নিউমুড়িং বড়মাঝিবাড়ি সংলগ্ন লোটাস কিন্ডারগার্টেন এ্যন্ড হাইস্কুল। বছরের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার গুনগত মান ধরে রাখা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যথাযোগ্য মর্যাদায় সরকারি বিভিন্ন দিবস উদযাপনসহ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মো: ফজলুল সরকার এর নানা দিকনির্দেশনায় লোটাস কিন্ডারগার্টেন স্কুলটি সুনাম অর্জন করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক সাংবাদিক মো: মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, করোনাকালে আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমাদের শ্রদ্ধেয় চেয়ারম্যান মো: ফজলুল সরকার মহোদয় নিজস্ব উদ্যোগে শিক্ষক ও অসহায় শিক্ষার্থীদের খাদ্যপণ্য ও অর্থ দিয়ে সহযোগীতা করেছেন। সরকারের পাশাপাশি তিনিও সামর্থনুযায়ী অসয়দের পাশে এগিয়ে এসেছেন।
বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় সরকারের পাশাপাশি এসব স্কুলগুলোতে পাঠদানে ইতিমধ্যে খ্যাতি অর্জন করেছে। সরকারের সহায়ক হিসেবে কেজিস্কুল গুলোর মানন্নোয়নের উজ্ঝল সম্ভাবনা আজ শোচনীয় অবস্থায় পড়েছে। কেননা এসব প্রতিষ্ঠানের একমাত্র আয়ের পথ হলো শিক্ষার্থীদের থেকে প্রাপ্ত বেতন। করোনা দূর্যোগ শুরু হওয়ার প্রাক্কালে তা বন্ধ রয়েছে। ফলে প্রতিষ্ঠানে টিকিয়ে রাখতে চরম অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে স্কুলমালিকগণ।
চলমান সংকট উত্তরণের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এক হাজার কোটি টাকার আর্থিক অনুদান চেয়েছেন স্কুল মালিকরা। বৃহষ্পতিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঐক্য পরিষদ নামের মালিকদের সংগঠন সংবাদ সম্মেলনে অনুদানের দাবি জানানো হয়।সূত্র:সমকাল।
তবে একই পরিষদের ব্যানারে সর্বপ্রথম চট্টগ্রাম থেকে দাবীটি তোলা হয় বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বর্তমানে প্রায় ৬৫ হাজার কিন্ডারগার্টেন গড়ে উঠেছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১ কোটিরও বেশি লেখাপড়া করছে। এছাড়াও কর্মরত রয়েছে দশ লাখেরও অধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা ও চতুথ শ্রেণির কমচারী।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে গত ১৬ মার্চ থেকে স্কুলগুলো বন্ধ থাকার কারণে অর্থনৈতিক খড়ায় পড়তে হয়েছে। এমনকি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা টিউশনও করতে পারছে না। বাড়ায় পরিচালিত এসব স্কুলমালিকদের বাড়িভাড়া, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কমচারীদের বেতন, বিদ্যুৎ ও পানির বিলসহ আরো অনেক আনুসাঙ্গি ব্যয় বহন করতে হয়।
লকডাউনের জন্য সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ মানতে গিয়ে স্কুলগুলো বন্ধ থাকায় উল্লেখিত খরচগুলো পরিশোধ করতে গিয়ে অধিকাংশ মালিকদের ব্যাংক লোন অথবা দেউলিয়া হওয়ারও আশংকা দেখা দিয়েছে। যার ফলাফল অনেক স্কুল বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
এ অবস্থায় দেশের কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোর ভবিষ্যত এবং শিক্ষাব্যবস্থায় এসব স্কুলের অবদানের কথা বিবেচনা করা এখন সময়ের দাবী বলে মনেকরছে সচেতনমহল। এখানে কর্মরত বিশাল একটি শিক্ষত জনগোষ্ঠীর জীবন জীবীকাও নির্ভর করছে সরকারের উপর।
কারণ এই স্কুলগুলো আর্থিক খড়া থেকে উঠতে না পারলে কর্মরত শিক্ষক, কর্মচারীরা বেকার হয়ে পড়বে। যার প্রভাব পড়বে তাদের পরিবারের উপর। সুতরাং কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোর অচলাবস্থা নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের এখনই ভাবতে হবে। অন্যান্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মত কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোতেও প্রণোদনা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
লেখকঃ সাংবাদিক,দৈনিক বরিশাল২৪.কম।