‘বিদেশি মুদ্রা’র লোভ দেখিয়ে প্রতারণা, চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ
অনলাইন নিউজ: বিদেশি মুদ্রা দেখিয়ে পথচারী প্রলুব্ধ করছেন একজন। নিজেকে বিপদগ্রস্ত হিসেবে উপস্থাপন করে তার হাতে থাকা বিদেশি মুদ্রা বিক্রির আগ্রহ জানানোর মধ্যেই আরও কয়েকজন এসে সে মুদ্রা দরদাম শুরু করে দেয়। কিনেও নেন কিছু মুদ্রা। ক্রেতাদের ভাবখানা এমন যেন বিপদগামী লোকের মুদ্রা কিনে বেশ ভালোই লাভ করেছেন তিনি। এসব দেখে প্রথমে যাকে মুদ্রা দেখানো হয় তিনিও কিছু মুদ্রা কিনে নেন। পরে বাসায় গিয়ে বুঝতে পারেন যতটা জিতেছেন আশা করছিলেন তার চেয়ে বেশি ঠকেছেন তিনি।
মোশাররফ করিমের নাটকের দৃশ্যে বহুল প্রচারিত একটি স্ক্রিপ্টের সঙ্গে অনেকটাই মিলে যাওয়া এমন ঘটনা বাস্তবে ঘটছে চট্টগ্রাম শহরেই। এমনটাই দাবি চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানা পুলিশের।
বিশেষ কৌশলে বিদেশি মুদ্রা দেখিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসা এমন একটি চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে কোতোয়ালী থানার পক্ষ থেকে আয়োজন করা সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্যই দেন কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন।
জুবায়ের মোহাম্মদ হোসেইন নামের একজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার ভোর রাতে অভিযানে গিয়ে এ চক্রের সন্ধান পেয়েছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে কোতোয়ালী থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিএমপির কোতোয়ালী জোনের এসি নোবেল চাকমা বলেন, ‘অভিযোগকারী জুবায়ের মোহাম্মদ হোসেইন এনায়েতবাজার এলাকার এবি ব্যাংক থেকে ৭০ হাজার টাকা নিয়ে রওনা দেন। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে গ্রেপ্তার সিএনজিচালিত অটোরিক্সাচালক মো. জাহান হোসেন প্রকাশ সুমন তাকে ডাক দিয়ে তার কাছে কিছু বিদেশি মুদ্রার নোট আছে বলে জানান এবং ওই টাকাগুলো কোথায় গিয়ে বাংলাদেশি টাকায় রূপান্তর করা যাবে জানতে চায়। এর মধ্যে অন্য একজন এসে জানান এই নোটের দাম বাংলাদেশি টাকায় ২০ হাজার। তবে ১৫ হাজার হলে তিনি নোট কিনবেন। এক পর্যায়ে সুমন ওই ব্যক্তির কাছে দুটি নোটও বিক্রি করেন। এসব দেখে প্রলুব্ধ হয়ে জুবায়েরও চারটি বিদেশি টাকা প্রদর্শন করে তার কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। পরে বাসায় গিয়ে জানতে পারেন সবগুলো নোট মিলেই ১৫ হাজার টাকা দাম পরছে এসবের।’
পরে জুবায়ের এসে অভিযোগ করলে সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসিটিভি ক্যামেরা পর্যালোচনা করে অভিযান পরিচালনা করে কতোয়ালী থানা পুলিশে।
অভিযানে প্রতারণার সঙ্গে জড়িত দুই জনকে নগদ ৪০ হাজার টাকা ও চারটি বিদেশি নোটসহ করা গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার রানা ও হালিম নামে ওই চক্রের দুজন সদস্য পলাতক রয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত দুইজন হল বরগুনার মো. আবু হানিফের ছেলে মো. জয়নাল আবেদীন (৩৪) ও কুমিল্লার মো. হুমাউন কবিরের ছেলে মো. জাহান হোসেন প্রকাশ সুমন (২৮)।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসীন বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা যে সংঘবদ্ধ একটি প্রতারক চক্রের সদস্য তা তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন। তার জন্য তাদেরকে আদালতে উপস্থাপন করে প্রত্যেকের সাতদিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। তথ্যসূত্র:চট্টগ্রাম প্রতিদিন।