অফিস না করেই বেতন উত্তোলন, ৯ কর্মকর্তার নামে মামলা করল শেড ইনচার্জ
প্রতিনিধি,বেনাপোল: বেনাপোল স্থল বন্দরের ৩৪ নং শেড ইনচার্জ অাশরাফুল ইসলাম দীর্ঘ দুই বছর কর্মস্থলে উপস্থিত না থেকে নিয়মিত বেতন ভাতা উত্তোলন করছে বলে অভিযোগ পাওয়া।
অাজ শনিবার সকালে বেনাপোল স্থল বন্দরের ৩৪ নং শেডে সরোজমিনে পরিদর্শনে গেলে তাকে পাওয়া জায়নি। বন্দর সংশ্লিষ্ট লেবার রা জানান,দীর্ঘদিন যাবত ৩৪ নং শেড ইনচার্জ অাশরাফুল নিজ কর্মস্থল অাসেন না।
বেনাপোল বন্দরের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, চাকুরীতে যোগদানের পর হইতে অাশরাফুল ইসলাম কতৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে একাধিকবার কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকতেন। ফলে ৩৪ নম্বর শেডের মালামাল লোড-আনলোডের কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বিঘ্নীত হয়।
সে কারণে বন্দর কর্তৃপক্ষ একাধিকবার তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেন।তাতেই সাড়া মেলেনি অাশরাফুলের। অাজও জবাব দেয়নি কারন দর্শানো নোটিশের।পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ৪ই জুলাই বন্দর কতৃপক্ষ ৩৪নং শেডের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয় অাবু মুছা মোহাম্মদ তারেক নামের এক কর্মকর্তাকে।
এই নিয়ে অাশরাফুল ও তারেকের মধো দুরুত্ব তৈরী হয়। ৫দিন দায়িত্ব পালন করার পর বন্দর কতৃপক্ষের সাথে পরামর্শ ক্রমে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি নেয় তারেক। দায়িত্ব থেকে অব্যহতি নেয়ার পর ২০১৭ সালের ২রা অক্টোবর রাতে অাশরাফুল ও তারেকের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
ঐ ঘটনাকে পুজি করে অাশরাফুল তারেকের নামে দেশি অস্ত্র দিয়ে মারধরের অভিযোগ এনে একই বছর ১৭ই অক্টোবর বন্দর কতৃপক্ষের বিচার দাবি করে একটি পত্র দেয়।পরে বন্দর কতৃপক্ষ সহকারি পরিচালক মেহেদি হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।
তদন্ত কমিটি অাশরাফুলের অানিত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করেন।পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ৯ই নভেম্বর অাশরাফুল তিন দিনের ছুটি নিয়ে অার কর্মস্থলে ফিরে অাসেনি।জানাগেছে অাশরাফুল বর্তমানে ঢাকাতে অবস্থান করছে।
সেখান থেকে বেতন ভাতা তুলছে। বন্দর কতৃপক্ষ অাশরাফুলের বিরুদ্ধে অাইনগত ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে এ ধরনের সংবাদের ভিত্তিতে সুচতুর অাশরাফুল চলতি বছর ২০১৯ সালের ২২শে অক্টোবর তারেক সহ বন্দরের ৯ কর্মকর্তার নামে যশোরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর অাদালতে মারধরের অভিযোগ এনে একটি মামলা করেছে।মামলাটি তদন্ত করছে পিবিঅাই।
মামলায় তিনি উল্লেখ করেছেন ২০১৭ সালের ২রা অক্টোবর রাতে অাসামিদের দ্বারা মারধরের শিকার হয়ে প্রায় ২ বছর তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।অথচ বন্দরের হাজিরা রেজিষ্ট্রার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে অাশরাফুল ২০১৭ সালের ৮ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি অফিস করেছেন।
এব্যাপারে বেনাপোল স্থল বন্দরের সিবিএর সহ সভাপতি মনির হোসেন মজুমদার জানান, অাশরাফুল অতি ধুর্ত প্রকৃতির মানুষ। তার বিরুদ্ধে বন্দরের নো -এন্টির পন্য পাচারসহ বহু অভিযোগ রয়েছে। নিজেকে রক্ষা করতে সে বন্দরের কর্মকর্তাদের নামে মিথ্যা মামলা করেছেন। এব্যাপারে অাশরাফুলের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহারিত ফোন নং টি বন্ধ পাওয়া যায়।
বেনাপোল বন্দরের উপ- পরিচালক (প্রশাসন) রেজাউল করিম জানান,প্রায় ২ বছর অনুপস্থিত থাকা আশরাফুল সংযুক্তির মাধ্যমে বেনাপোল স্থলবন্দরে কর্মরত থাকার ফলে বেতন ভাতা প্রধান কার্যালয় ঢাকা থেকে দেওয়া হচ্ছে।
তিনি অারো জানান, আশরাফুল ২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর তারিখ থেকে ৩ (তিন) দিনের ছুটি নিয়ে কর্মস্থলে ফিরে না আসায় বেনাপোল স্থলবন্দরে সাবেক ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অামিনুল ইসলাম আশরাফুলের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রবিধান মালা- ২০০৪ এর ৪০ এর (ক),(খ) ও(গ) ধারা মোতাবেক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জোর সুপারিশ নামা পাঠালেও এখনো পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে সন্তোষ জনক কোনো উত্তর পাওয়া যাইনি।