কক্সবাজারে পথচারীদের হাতে ফুল দিয়ে বাড়ি ফেরার অনুরোধ সেনা সদস্যদের
অনলাইন নিউজঃ করোনার বিস্তার ঠেকাতে সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সারাদেশে টহলের পাশাপাশি সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করছে তারা। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সচেতনতামূলক প্ল্যাকার্ড নিয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতেও কাজ করতে দেখা যায় তাদের।কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন রাস্তায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছেন। তারা পথচারীদের হাতে ফুল দিয়ে বাড়ি ফেরার অনুরোধ করছেন।
সেনাবাহিনীর এমন উদ্যোগকে সম্মান জানিয়ে ঘরে ফিরেছেন পথচারীরা। সেনা সদস্যদের ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ ব্যাপক প্রশংসাও পেয়েছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে পর্যটন নগরী কক্সবাজারসহ আট উপজেলায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহযোগিতা দিতে সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশন নানা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। সেনা সদস্যরা বিভিন্ন এলাকায় টহল জোরদার করে হ্যান্ডমাইকে জনসাধারণকে কোনো গুজবে কান না দিয়ে ঘরে থাকার আহ্বান জানাচ্ছেন।
কক্সবাজার শহরে দায়িত্ব পালন করছিলেন সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, করোনা সচেতনতা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে সেনাবাহিনী। অযথা বাইরে ঘোরাফেরা করতে দেখা মানুষদের বুঝিয়ে ঘরে পাঠানো হচ্ছে। সেনা সদস্যরা পথচারীদের হাতে ফুল তুলে দিয়ে তাদের ঘরে থাকতে অনুরোধ জানাচ্ছেন।
কক্সবাজার সদরের ঈদগাহ বাস স্টেশনে রিকশা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন- সেনাবাহিনীর এক সদস্যকে আমার দিকে এগিয়ে আসতে দেখে ভয়ে হাত-পা কাঁপছিল। ওই সেনা সদস্য আমার হাতে ফুল দিয়ে বললেন, ‘চাচা ভয় নেই। যদি সম্ভব হয় বাড়ি থেকে কম বের হবেন।’ রিকশাচালক মনিরুজ্জামান বলেন, ‘গরিবের প্রতি সেনাবাহিনীর এমন ভালোবাসা দেখে আমার চোখে পানি চলে আসে। আমি সেনা সদস্যদের সম্মান জানাতে সঙ্গে সঙ্গে রিকশা নিয়ে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নিই।’
আলাউদ্দীন নামে আরেক পথচারী বলেন, ‘ঈদগাহ বাস স্টেশনে সেনাবাহিনীর গাড়ি দেখে দৌড়ে পালাচ্ছিলাম। এক সেনা সদস্যকে গাড়ি থেকে নেমে পথচারীদের ফুল দিতে দেখে আমি তার দিকে এগিয়ে গেলে আমার হাতেও ফুল ধরিয়ে দেন তিনি।’ আলাউদ্দিন বলেন, ‘পথচারীদের হাতে ফুল দিয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা করোনাভাইরাস সম্পর্কে অবগত করছেন। বিনা কারণে বাজারে ঘোরাঘুরি না করে বাড়িতে অবস্থান করার অনুরোধ জানাচ্ছেন তারা।’
রামু সেনানিবাস সূত্র জানিয়েছে, হোম কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম মানতে কাজ করছেন সেনা সদস্যরা। মোতায়েনকৃত সেনা সদস্যরা এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জীবাণুনাশক ছিটাচ্ছেন। পরিস্থিতি অনুকূলে না আসা পর্যন্ত এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
এদিকে উখিয়া ও টেকনাফে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের মাঝে করোনাভাইরাস সচেতনতা তৈরিতে তাদের হাতে ফুল দিয়ে বাড়ি ফেরার জন্য অনুরোধ জানান সেনা সদস্যরা। এ বিষয়ে ক্যাম্প পর্যায়ে রোহিঙ্গা মাঝি ও স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক, বার্মিজ ও ইংরেজি ভাষায় লিফলেট বিতরণ এবং রোহিঙ্গা ভাষায় সচেতনতামূলক মাইকিং কার্যক্রম চলমান রেখেছেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে সেনাবাহিনীর নতুন নতুন চেকপোস্ট স্থাপনের মাধ্যমে জনসাধারণ ও সীমিত করা হয়েছে যান চলাচল।