তালতলীতে জলোচ্ছ্বাসে বিধ্বস্ত টেংরাগিরি বনাঞ্চল ও শুভসন্ধ্যা ঝাউবন - দৈনিক বরিশাল ২৪ দৈনিক বরিশাল ২৪তালতলীতে জলোচ্ছ্বাসে বিধ্বস্ত টেংরাগিরি বনাঞ্চল ও শুভসন্ধ্যা ঝাউবন - দৈনিক বরিশাল ২৪

প্রকাশিতঃ মে ৩১, ২০২১ ১০:০৭ অপরাহ্ণ
A- A A+ Print

তালতলীতে জলোচ্ছ্বাসে বিধ্বস্ত টেংরাগিরি বনাঞ্চল ও শুভসন্ধ্যা ঝাউবন

মংচিন থান,বরগুনা প্রতিনিধি ::

বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী বিস্তীর্ণ জলরাশি শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত। বাতাসের ঝিরিঝিরি শব্দে দোল খায় সবুজ ঝাউবন। বালুময় দীর্ঘ সৈকত ঝাউবনের সবুজ সমীকরণের এ দৃশ্যটি যেন প্রকৃতি প্রেমের একটি উদাহরণ। এখানে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য অবলোকন করা যায়। এ জন্যই এই সৈকতটির নামকরণ করা হয় শুভসন্ধ্যা।

উপকূলীয় জেলা বরগুনার তালতলী উপজেলার পশ্চিম পাশে বঙ্গোপসাগর থেকে জেগে ওঠা নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের নলবুনিয়ায় চরে অবস্থিত এই শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্বাসমূলীয় ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল টেংরাগিরি বনাঞ্চলের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হচ্ছে শুভসন্ধ্যা ঝাউবনটি। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়ে আছে ৫০ ফুট প্রস্থ ও ৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এ ঝাউবনটি। সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের কারণে এখন সৌন্দর্য্য হারিয়ে ভূগর্ভে বিলীন হয়েছে এখানকার ঝাউবনটি।
সারা বছরই এই সমুদ্র সৈকত দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকরা আসতেন। চলমান করোনাভাইরাস ও লকডাউনের কারণে পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ রয়েছে। পর্যটকদের যেমন সমুদ্র প্রিয় তেমনি প্রিয় ছিলো বন ওই ঝাউবন। উপকূলের সৌন্দর্য্য লুকিয়ে থাকতো যে ঝাউবনের ভেতর, সেই ঝাউবন আর আস্ত নেই। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের কারণে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে ওই ঝাউবনটি।

তালতলী বন বিভাগের একটি সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতে ঝাউ গাছ লাগানো শুরু থেকে যে কয়টি ঘূর্ণিঝড় আসছে তাতে প্রায় ২৫ হাজার ঝাউ গাছের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আর গত বছর ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে প্রায় ৩ হাজার ঝাউবন সাগরে বিলীন হয়ে গেছে। আম্ফানের পর ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে টেংরাগিরি ও শুভসন্ধ্যা ঝাউবনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইতিমধ্যে ঝাউগাছের পাশাপাশি সৈকতে নামার মূল পাকা সড়ক ও বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎতের খুটি ভেঙে সৈকতে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতে উপমহাদেশের সব চেয়ে বড় জোছনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। ওই উৎসব ঘিরে লাখো লাখো মানুষের সমাগম ঘটে। তাছাড়া প্রতিদিন নৌ ও সড়ক পথে হাজারো পর্যটক আসতো এখানের প্রাকৃতিক সৌদর্য্য উপভোগ করতে। এ সমুদ্র সৈকতের মূল আকর্ষণ ছিল বিশাল ঝাউবন। কিন্তু প্রতি বছর বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে ঝাউবনটি বিলীন হওয়ার পথে।
তারা আরো জানায়, শ্বাসমূলীয় ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল টেংরাগিরি ও শুভসন্ধ্যার ঝাউবনটি ঘূর্ণিঝড় সিডর, আয়লা, নারর্গিস, আম্ফানসহ বড় বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগকে মোকাবেলা করে উপকূলবাসীকে রক্ষা করেছে। এই বন উপকূলীয় এলাকার মানুষের জীবন ও সম্পদের রক্ষাকারী কবজ হিসেবেও কাজ করেছে। আর ইয়াসের প্রভাবে সেই রক্ষা কবজই এলোমেলো হয়ে গেছে। এই বন না থাকলে উপকূলকে বাচাঁনো সম্ভব হতো না।

নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. দুলাল ফরাজী বলেন, প্রতিটি প্রাকৃতিক দুর্যোগে টেংরাগিরি বনাঞ্চল ও শুভসন্ধ্যা ঝাউবন আমাদের এ উপককূলীয় এলাকার জীবন ও সম্পদের রক্ষা কবজ হিসেবে কাজ করে।

তালতলী বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে সাগরে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় টেংরাগিরি বনাঞ্চল ও শুভসন্ধ্যা ঝাউবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানির তোরে শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতের প্রায় দেড় কিলোমিটার পার ভেঙে সাগরে বিলীন হয়ে গেছে। আনুমানিক ৬ হাজারের বেশী ঝাউগাছ পানির সাথে ভেসে গেছে।

দৈনিক বরিশাল ২৪

তালতলীতে জলোচ্ছ্বাসে বিধ্বস্ত টেংরাগিরি বনাঞ্চল ও শুভসন্ধ্যা ঝাউবন

সোমবার, মে ৩১, ২০২১ ১০:০৭ অপরাহ্ণ

মংচিন থান,বরগুনা প্রতিনিধি ::

বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী বিস্তীর্ণ জলরাশি শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত। বাতাসের ঝিরিঝিরি শব্দে দোল খায় সবুজ ঝাউবন। বালুময় দীর্ঘ সৈকত ঝাউবনের সবুজ সমীকরণের এ দৃশ্যটি যেন প্রকৃতি প্রেমের একটি উদাহরণ। এখানে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য অবলোকন করা যায়। এ জন্যই এই সৈকতটির নামকরণ করা হয় শুভসন্ধ্যা।

উপকূলীয় জেলা বরগুনার তালতলী উপজেলার পশ্চিম পাশে বঙ্গোপসাগর থেকে জেগে ওঠা নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের নলবুনিয়ায় চরে অবস্থিত এই শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্বাসমূলীয় ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল টেংরাগিরি বনাঞ্চলের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হচ্ছে শুভসন্ধ্যা ঝাউবনটি। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়ে আছে ৫০ ফুট প্রস্থ ও ৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এ ঝাউবনটি। সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের কারণে এখন সৌন্দর্য্য হারিয়ে ভূগর্ভে বিলীন হয়েছে এখানকার ঝাউবনটি।
সারা বছরই এই সমুদ্র সৈকত দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকরা আসতেন। চলমান করোনাভাইরাস ও লকডাউনের কারণে পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ রয়েছে। পর্যটকদের যেমন সমুদ্র প্রিয় তেমনি প্রিয় ছিলো বন ওই ঝাউবন। উপকূলের সৌন্দর্য্য লুকিয়ে থাকতো যে ঝাউবনের ভেতর, সেই ঝাউবন আর আস্ত নেই। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের কারণে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে ওই ঝাউবনটি।

তালতলী বন বিভাগের একটি সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতে ঝাউ গাছ লাগানো শুরু থেকে যে কয়টি ঘূর্ণিঝড় আসছে তাতে প্রায় ২৫ হাজার ঝাউ গাছের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আর গত বছর ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে প্রায় ৩ হাজার ঝাউবন সাগরে বিলীন হয়ে গেছে। আম্ফানের পর ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে টেংরাগিরি ও শুভসন্ধ্যা ঝাউবনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইতিমধ্যে ঝাউগাছের পাশাপাশি সৈকতে নামার মূল পাকা সড়ক ও বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎতের খুটি ভেঙে সৈকতে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতে উপমহাদেশের সব চেয়ে বড় জোছনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। ওই উৎসব ঘিরে লাখো লাখো মানুষের সমাগম ঘটে। তাছাড়া প্রতিদিন নৌ ও সড়ক পথে হাজারো পর্যটক আসতো এখানের প্রাকৃতিক সৌদর্য্য উপভোগ করতে। এ সমুদ্র সৈকতের মূল আকর্ষণ ছিল বিশাল ঝাউবন। কিন্তু প্রতি বছর বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে ঝাউবনটি বিলীন হওয়ার পথে।
তারা আরো জানায়, শ্বাসমূলীয় ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল টেংরাগিরি ও শুভসন্ধ্যার ঝাউবনটি ঘূর্ণিঝড় সিডর, আয়লা, নারর্গিস, আম্ফানসহ বড় বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগকে মোকাবেলা করে উপকূলবাসীকে রক্ষা করেছে। এই বন উপকূলীয় এলাকার মানুষের জীবন ও সম্পদের রক্ষাকারী কবজ হিসেবেও কাজ করেছে। আর ইয়াসের প্রভাবে সেই রক্ষা কবজই এলোমেলো হয়ে গেছে। এই বন না থাকলে উপকূলকে বাচাঁনো সম্ভব হতো না।

নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. দুলাল ফরাজী বলেন, প্রতিটি প্রাকৃতিক দুর্যোগে টেংরাগিরি বনাঞ্চল ও শুভসন্ধ্যা ঝাউবন আমাদের এ উপককূলীয় এলাকার জীবন ও সম্পদের রক্ষা কবজ হিসেবে কাজ করে।

তালতলী বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে সাগরে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় টেংরাগিরি বনাঞ্চল ও শুভসন্ধ্যা ঝাউবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানির তোরে শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতের প্রায় দেড় কিলোমিটার পার ভেঙে সাগরে বিলীন হয়ে গেছে। আনুমানিক ৬ হাজারের বেশী ঝাউগাছ পানির সাথে ভেসে গেছে।

প্রকাশক: মোসাম্মাৎ মনোয়ারা বেগম। সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: ইঞ্জিনিয়ার জিহাদ রানা। সম্পাদক : শামিম আহমেদ যুগ্ন-সম্পাদক : মো:মনিরুজ্জামান। প্রধান উপদেষ্টা: মোসাম্মৎ তাহমিনা খান বার্তা সম্পাদক : মো: শহিদুল ইসলাম ।
প্রধান কার্যালয় : রশিদ প্লাজা,৪র্থ তলা,সদর রোড,বরিশাল।
সম্পাদক: 01711970223 বার্তা বিভাগ: 01764- 631157
ইমেল: sohelahamed2447@gmail.com
  কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে বরিশাল, ৭ জনের প্রাণহানি   ইপিজেড শিল্পাঞ্চলের আয়োজন, শতাধিক পরিবারে ঈদ সামগ্রী বিতরণ   কমতে পারে ছুটি, শনিবারও স্কুল খোলা রাখার ইঙ্গিত   লাইমলাইট গ্রামার স্কুলে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন   ঈশ্বরদীতে ২ ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ   আমেরিকায় জাহাজের ধাক্কায় ধসে পড়ল সেতু, বহু হতাহতের শঙ্কা   ইপিজেড স্মার্ট শিল্পাঞ্চল, চট্টগ্রাম এর স্বাধীনতা দিবসের আলোচানা সভা অনুষ্ঠিত   হালিশহর মডেল স্কুলে মহান স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত   অটোরিকশার সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, চোখের সামনে অঙ্গার হলো তরতাজা প্রাণ   বরিশাল বিভাগীয় সমিতি, চট্টগ্রাম-এর উদ্যোগে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত   অসহায় শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবে বরিশাল বিভাগীয় সমিতিঃ জাকির হোসেন   হালিশহর মডেল স্কুলের নতুন সভাপতি মোহাম্মাদ হোসেন, আশরাফ আলী সম্পাদক নির্বাচিত   বরিশাল প্রেসক্লাব সভাপতির মৃত্যুতে বরিশাল বিভাগীয় সমিতি, চট্টগ্রাম এর শোক প্রকাশ   কাজী বাবুল আর নেই, শোকে স্তব্ধ বরিশালের মিডিয়া অঙ্গন   জীবনকে বদলে দেওয়া এক গুণী মানুষকে যেভাবে হাড়িয়ে ফেললাম   যুগান্তর পত্রিকার বরিশাল ব্যুরো রিপোর্টার হলেন সাংবাদিক এস এন পলাশ   কেন্দ্রীয় সম্মেলনকে ঘিরে বরিশাল বিভাগীয় সমিতি‘র (ইপিজেড শিল্পাঞ্চল) এর প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত   বরিশালের মামুনের সফলতা হতে পারে অনেকের অনুপ্রেরণাঃ তাপস   ঢাকার তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসার বার্ষিক শিক্ষা সফর অনুষ্ঠিত   নিউমুরিং এর মরহুম আবদুস সবুর সওঃ এবাদত খানার সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত